পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ర్సిట్లు ভারতীয় শিল্পধারার সঙ্গে তাহার আত্মীয়তা আমরা জয়ভৰ করিতে পারি। "ইভ” “ঝড়” “চিরবসন্ত” “জরাগ্রস্ত রূপোপজীবিনী” “চুম্বন” “সন্দেহ” “রোমিয়ে জুলিয়ে২” প্রভৃতি শিল্প-নিদর্শনগুলি একটু তলাইয়া দেখিলেই উপরোক্ত কথাগুলির সত্যত উপলব্ধি করা সহজ হইবে। কলাবিদের সত্যদৃষ্টি হইতেছে সহানুভূতির দৃষ্টি, কল্পনার দৃষ্টি ; রূপরসগন্ধসৌন্দৰ্য্যময় এই পৃথিবীর রোগজরাজীর্ণ ক্লেদপঙ্কিলতাময় এই পৃথিবীর অফুরন্ত ভাবের ও রূপের প্রতি অপার মমত্ববোধের দৃষ্টি । এই দৃষ্টি দিয়া যিনি এই পৃথিবীর সব কিছুকে দেখিয়াছেন, পটের উপর তাহার তুলি অবলীলায় খেলিয়া যায়, পাথরের উপর তাহার বাটালী আপন মনে সৌন্দৰ্য্য স্বষ্টি করিয়া চলে। শিল্পী যে দৃষ্টিতে, যে ভাবে ও রূপে এই ইন্দ্রিয় ও ইন্দ্রিায়াতীত জগতকে দেখিয়াছেন, ভাব রূপ ও দৃষ্টির সেই সমভূমিতে সকলকে দাড় করাইবায় প্রয়াস হয়ত শিল্পীকে করিতে হয় ন। এবং হয় না বলিয়াই শিল্পীর ভাবদ্ধৃষ্টির মধ্যে আমরা অনেক সময়ই প্রবেশ করিতে পারি না এবং সেই হেতু শিল্পস্থষ্টিকেও বুঝিতে ভুল করি। রদ্যাকেও সেই হেতু অনেকে ভুল বুঝিয়াছেন, তন্ন তন্ন করিয়া তাহার শিল্পস্বষ্টিগুলি বিশ্লেষণ করিয়া দেখিয়াছেন। কেহ হয়ত বলিয়াছেন, "তিনি অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সমৃত (proportions) রক্ষা করিয়া চলেন নাই, তিনি নর-নারীর নগ্ন দেহকে সৌন্দর্ঘ্য জগতে অভিষিক্ত করিয়া আর্টে দুর্নীতির প্রশ্রয় দিয়াছেন ; সহজ দৃষ্টিতে সাধারণ মাহূব পৃথিবীর যাবতীয় বস্তুকে যে ভাবে দেথে রদ্যা তেমন করিয়। তাহীদের রূপ দান করেন নাই, অনেক সময়ই তাহ বিকৃত বলিয়। মনে হয় ; “রূপোপজীবিনী’র হাতগুলি অত্যধিক পরিমাণে লম্বা, তা ছাড়া মানব জীবনের এমন একটা কুৎসিত কল্পনাকে এমন করিয়া রূপ দিবার দরকারই বা ছিল কি ? মামুষের জীবন ত এমনি নানান দুঃখে কুঞ্জ পলিতায় ভারাক্রান্ত হইয়া আছে, সে বোঝ বাড়াইয়া লাভ হইল কি ? এই রকম কত কথাই বলা হইয়াছে। ইহারা শিল্প-সমালোচনায় ইন্দ্ৰিয়-দৃষ্টিকেই বড় করিয়া, দেখিয়াছেন, কলা কৌশলের বিচারই • প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড করিয়াছেন কিন্তু শিল্পের যা অতীন্দ্রিয় রহস্য, দেখার অতীত ষে রূপ, সেই রূপ ও রহস্যের সন্ধানে ইহাঙ্গের চিত্ত আকুল হয় নাই। সে সন্ধান র্যাহারা পাইয়াছেন তাহারা বুঝিতে পারেন রদ্যার স্বই সৌন্দর্ঘ্য জগতের মধ্যে, তাহার অতীন্দ্রিয় রহস্যজগতের মধ্যে কি করিয়া বহুদিন ডুব মারিয়া কাটাইয়া দেওয়া যায় । কিন্তু সত্যই কি রদ্য নগ্ন-দেহকে রূপ দিতে গিয়৷ দুনীতির প্রশ্রয় ও কুরুচির পরিচয় দিয়াছেন ? সত্যই কি তিনি নগ্ন-দেহের সৌন্দৰ্য্যকে, নর-নারীর প্রেমলীলাকে লালসার দৃষ্টিতে দেখিয়াছেন ? এই শিল্প-হষ্টিগুলি যাহারী হৃদয়ের অনুভূতি দিয়া দেখিয়াছেন, মানুষের দৈহিক সৌন্দৰ্য্যকে র্যাহারা প্রকৃতির বিচিত্র লীলারই এক রূপময় প্রকাশ বলিয়া জানিয়াছেন,নর-নারীর প্রেম প্রীতিকেৰাহারা সহানুভূতির দৃষ্টিতে অস্তরে অনুভব করিতে শিথিয়াছেন, তাহাদের গতিভঙ্গী, তাছাদের চোখা-চোখি, তাহাদের নিবিড় প্রেমের নিবিড়তম আলিঙ্গন, হাস্তে ও স্পশে পুলক-শিহরণ, তাহাদের স্বপ্নালস দৃষ্টি, ইত্যাদিকে র্যাহার স্বমধুর সত্য বলিয়া জানিয়াছেন, তাহারা বলিবেন রদ্য কখনও নর-নারীর লালসাবহিতে ইন্ধন যোগান নাই । বরং রক্তমাংসের সহজ সত্য সম্বন্ধকে প্রেমে ও সৌন্দর্ঘ্যে অভিষিক্ত করিয়া মাহবের অনুভূতিকে উন্নত ও প্রশস্ত করিবার উপায় করিয়া দিয়াছেন। রদ্যা মাছুষের ধেীবনকে অস্বীকার করেন নাই । তাহার সমস্ত লীলাকে তিনি স্বীকার করিয়া লইয়াছিলেন । রদ্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সমতা (Proportions ) সৰ্ব্বত্র রক্ষা করিয়া চলেন নাই। হয়ত হাতটা-পাট বাস্তবিকই লম্ব। কিন্তু রদ্যা কখনও তাহার স্বষ্টিতে অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বিকৃতির দিকে মনোযোগ দেন নাই। ইহারা তাহার শিল্প-দৃষ্টিতে বড় হইয়া দেখা দেয় নাই । তিনি খুজিয়াছিলেন শিল্পবস্তুর প্রাণ এবং সেইটিকে রূপ দেওয়াই ছিল তাহার স্বকঠিন প্রয়াস এবং প্রত্যেক শ্রেষ্ঠ শিল্পীর প্রয়াসই থাকে তাহা । কথাটাকে রদ্যার “জরাগ্রস্ত রূপোপ