পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\b8 পেটে, তাৰ কথা ভারতে হবে। এখনও এত টানাটনি করবার মত হয়নি।” ডাক্তার ও নায়েব আনন্দের আতিশয্যে চেয়ার ছাড়িয়। উঠিয়াই পড়িলেন । প্রমদারঞ্জন আ হট। আনন্দ কিছু প্রকাশ করিলেন না, কিন্তু তাহার ৭ হাত হষ্টতে বেহাইয়ের চিঠিখান মাটিতে পড়িয়া গেল। উদ্বয়ের মূখ প্রায় অমাবস্কার আকাশের মত হইয়া উঠিল, তবুও সে ঘর ছাড়িল না, দরজা ধরিয়া দাড়াইয়াই রহিল। প্রমদারঞ্জন জিজ্ঞাসা করিলেন, “কৈ এ খবর ত আগে শুনিনি ?” - ভবানী লজ্জিত কণ্ঠে বলিল, “এত দিন ঠিক ক’রে ধরতে পরিনি বাবু,তাই বলতে সাহস করিনি ; এখন আর কোনো সন্দেহ নেঙ্গ ।” ডাক্তার বলিলেন, “তাহ’লে এখন তাকে পাঠানোর কোনো কল্পনাই করা চলে না, অন্ততঃ আর দুটো মাস মৃ fর আগে স্বাক্, ভগবানকে ধন্যবাদ যে, এত গভীর শোকের মধ্যেও এইটুকু সাত্বন তিনি আপনার জঙ্গে রেখেছিলেন । ছেগে যদি হয় তা হ’লে সেই আপনার ছেলের অভাব পূ ণ করবে ।” কৰ্ত্ত কথা বলিলেন না, কিন্তু তাহার চোখ দিয়া টপ টপ করিয়া কয়েক ফোট জল গড়াইয়া পড়িল । নায়েব মশায় কয়েকখন কাগজ-পত্ৰ গুছাইয়। কৰ্ত্তাকে নমস্কার করিয়া বিদায় হইয়া গেলেন, ডাক্তার আবার চেয়ার টানিয়া লইয়া জাকাইয়া বসিলেন । উদয়ের সন্ধানে চোখ ফিরাইবা ভবানী দেখিল সে কখন নিঃশব্দে পলায়ন করিয়াছে । মনে মনে হাসিয়া বলিল, “তোর বাড়া ভাতে যে, ছাই দিতে পারলাম হতভাগ, এর জন্যে হরির লুট দেব চার আনার ” ভানুমতীর কাছে ফিরিয়া আসিয়া ভবানী দেখিল, সে তখনও খায় নাই । দাসী তাহার জন্ত দুধ মিষ্টি প্রভৃতি লইয়া তখনও দাড়াইয়া আছে। ভবানীর মনট। অনেক কাল পরে একটু ভাল ছিল, সে সদয় কণ্ঠেই বলিল, “ওম, এখনও দাড়িয়ে আছিল भूशै 한, , আমি খাওয়াচ্ছি দিদিমণিকে ” মোক্ষণ হাফ ছাড়িয়া পলাৱন কৰিল । ভাস্থমজীর প্রবাণী—বৈশাখ, ১৩২৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড ঘরে আজকাল ভবানী ছাড়া আর কেহ বড় আসিতেঃ সাহস করিত না। তাহার পাথরের মত মুখ আর নিম্প্রভ চোখের দিকে তাকাইলেই যেন তাহাদের বুকের রক্ত জল হইয়া আসিত । কঁদি, কাট, মাথা কোট, এ সব তাহাদের অভ্যাস ছিল ; সে-রকম কিছু দেখিলে পাশে বসিয়া নিজেরা ও খানিক ইউ মাউ করিয়ী চীৎকার করা চলে, কি জ্ব এমন ধার। কf ও তা হার দেখে নাই। অমন ইন্দ্রতুল্য স্বামী যে মরিল, তাহার জন্ত দশটা দিন কঁদিতেও পারিল না গা ? এ কেমন মেয়েমানুষ - ঐ বুড়ী মাগীই কিছু পরামর্শ দিয়া থাকিবে বোধ হয়, একদণ্ড ত বেীরাণীর ঘর ছাড়িয়া নড়ে না । তাঃাকে কোন প্রশ্ন করিবার সাহস কাহারও ছিল না। যা স্বভাব, কি জানি যদি দু’ ঘা লাগাইয়াই দেয় ? তাহার সঙ্গে জোরে পারিবারও কাহারও সম্ভাবনা ছিল না । ভবানীর অনুরোধে ভানুমতী আস্তে আস্তে খাইতে আরম্ভ করিল। এই কয়দিনের মধ্যেই সে আরো অনেকখানি রোগ হইয়া গিয়াছে । শোকের আগুন তাহাকে ভিতরে ভিতরে পোড়াইভেছিল বলিয়াই যেন তাহার মুখের রং অনেকট ছাইয়ের মত হইয়া আসিয়াছে, চোখ অর্থশুগু জ্যোতিহীন দৃষ্টিতে চাহিয়া আছে। তাহার পরিধানে সেমিজের উপর একখান সরু কালে; পাড়ের ধুতি, হাতে ছ’গাছি বাল। একেবারে বিধবার বেশ পরাইতে ভবানী প্রাণ ধরিয়া পারে নাই। অবশ্য এ লইয়াও সমালোচনার অস্তু ছিল না । বিধব। মানুষের আবার এত গহনা পরা, খাটে শোওয়া কেন ? কপাল যখন পুড়িলই, সেইমত থাকিলেই হয় ? ভবানী তাহার পিছনে দাড়াইয়। পিঠে হাত বুলাইতে বুলাইতে বলিল, “কলকাতার থেকে আমাদের বাবু চিঠি দিয়েছেন, কৰ্ত্ত। আমায় ডেকে বললেন। তোমায় নিয়ে যেতে চান । কিন্তু আমি বলি, এখন তোমার এত নাড়ানাড়ি না করাই ভাল। মাস দুই পরে গিয়ে একবার দিন কতকের মত থেকে এসে ।" ভাঙ্গমতী হঠাৎ খাওয়া ছাড়িয়া সরিয়া বলিল । কঁদিতে কঁাদিতে বলিল, "না ভবানী, আমি এখনি