পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] ঘরে ও বাইরে 8ఫిసి খোকাকে ফোট দিয়া দিদি বলিল, “সব কি খেতে পারবি, ভাই ? আচ্ছ, যতগুলো পারিস থা।” খোকা দুই হাতে তুলিতে আরম্ভ করিল। তাহার স্থতিতে এমন কাও সে কখনও দেখিয়াছে বলিয়া মনে পড়িল না। মা কিম্বা দিদি কোনোদিন তাহাকে একটার বেশী দুইটা মিষ্টি ত দেয় না। মিষ্টিট বড় হইলে আবার আধখানা ভাঙিয়া রাখিয়া দেয়। আজ একি হ’ল ? দিদি একটাও ত তাহার পাত হইতে সরাইয়া রাখিল না। কিন্তু ভাতের কাঠিটা হাতে করিয়া মা ‘ই, হঁ, করিয়া আসিয়া পড়িলেন। "কবুলি কিরে হাবা মেয়ে ; খোকা যে সব এঠো ক’রে দিলে । আচ্ছা নবাবের ঘরের বেীই তুই হয়েছিল বাছা! ওই দুথাল খাবার কি ব’লে নষ্ট কবুলি ?” পূর্ণিমা কথা কহিল না। মা আবার বলিলেন, “রাধতে রাধতে এ টোটা ছুই কি ক’রে ? ওরে পূর্ণি নে আর রাগ দেখাতে হবে না। ছেলেমামুত্ৰ এঠো করেছে করেছে, একটু আলাদা ক’রে রাখ। আমরা না হয় না খাব ; ওরা দুভাই খাবে এখন। ও চারপাচ দিন ঠিক থাকৃবে ।” পূর্ণিমা সেদিকে না তাকাইয়। রাজীবের ছাড়া কাপড় গামছা গেঞ্জিগুলা কাচিয়া রোদে মেলিয়া, তেল সাবান কলতলা হইতে সরাইয়া ময়ল চিরুনী পরিষ্কার করিয়া ছাদে বড়ি শুকাইতে চলিয়া গেল । °ছেলেটা সত্যি বড় অবুঝ” বলিয়া মা নিজেই থোকার হাতে চার পাচটা মিষ্টি গুজিয়া দিয়া থালাট সরাইয়। লইলেন । পূর্ণিমার ভাই-ফোটার উৎসব শেষ হইয়া গেল। পাশের বাড়িগুলাতে তখন দুই মিষ্টি মাছ তরকারী লইয়া হাকাহাকি চলিতেছিল। রামার গন্ধে সমস্ত পাড়াটা ভরিয়া গিয়াছে । 彎 骼 骼 鬱 কলেজে রাজীবের নাম ছিল “ব্রিলিয়াণ্ট3 ছেলে বলিয়া । কিন্তু সে ঠিক সময় ক্লাশে আসিত, নোট লিখিত, টিউটোরিয়াল ক্লাশে খাতা জমা দিত এবং অধ্যাপকের ংশোধনগুলি দাগ দিয়া মুখস্থ করিয়া রাখিত। ইহাতে ছেলেমহলে তাহার স্বনামের হানি হইতে লাগিল । একদল ছেলে বলিত, “ওটা ব্রিলিয়ান্ট-না কচু ! বুকওয়াম” কোথাকার, শুধু মুখস্থ বিস্ত কপ চায় । পৃথিবীর কোনো খবর রাখে না । কেবল নোট আর বই, বই আর নোট । কলেজে বেন ওকে কেউ ঝাড়দারের কাজ দিয়েছে, তাই সবার আগে এসে ধন্ন দিতে থাকে । ডিগ্রী নিয়ে কি ধুয়ে খাবে ? ঐ ক’রেই বাঙালী জাতটা গেল।” রাজীব মনে করিল, সত্যই সে বড় সেকেলে । দেশের এত বড় বড় সমস্যার কথা ভুলিয়া, মানব প্রেম, বিশ্বমৈত্রী, সেসিয়ালিজম, সমাজসংস্কার,সাহিত্য, শিল্প, কোনে কিছুর কথা না ভাবিয়া সে কিনা মূর্থের মত বই মুখস্থ করিতেছে। তাহার মত মস্তিষ্ক যদি এমনি অপব্যয়ে নষ্ট হয় তবে অরি দেশ রসাতলে যাইবে না কেন ? কিন্তু ভাবিল না যে মস্তিষ্কটার আর একটু উৎকর্ষ সাধন করিয়া দেশকে রসাতল হইতে স্বর্গে প্রমোশন দিবার চেষ্টা করিলে এই দুই চার বৎসরেই রসাতলের উপর তিনচার প্রস্থ মাটি পড়িয়া নাও যাইতে পারে। অগত্যা রাজীব ব্যাকরণ শেষ হইবার আগেই সাহিত্যচর্চা স্বরু করিল, লাইন টানিতে না শিখিয়াই আর্ট ক্রিটিক্ হইয়া উঠিল। ইংরেজী বই আর সে পড়ে না, “কণ্টিনেন্টাল’ আধুনিক সাহিত্যের অম্বুবাদই তাহার নিত্য সহচর। ঘরের জগদ্ধাত্রীর ছবিটা সরাইয়া ফরাসী জার্টিষ্ট্রের একটা ছবির একরঙা ছাপা কপি আনিয়া টাঙাইয়াছে, কারণ সৌন্দৰ্য্যজ্ঞানকে জাগাইতে হইলে ভিতরে বাহিরে সেই রকম আবহাওয়ার দরকার। কিন্তু একলা কি জগতে কোনো কাজ হয় ? বিশ্বমৈত্রী কিম্বা সোসিয়ালিজম কোনোটাই খোলে না বিনা সঙ্গে । রাজীবের একটি দল জুটিল। তাহার ভিতর দুটি একটি লেজের ছেলে। বিশেষ বন্ধুরা কিন্তু বেশীর ভাগই

  • এই অকেজো জীবনের সঙ্গে সকল সম্পর্ক অনেককাল

চুকাইয়াছে। তাহাদের দুই চারজনের বয়স ত্রিশ-বশি অনেক দিন পার হইয়াছে, তাই আঠারো কুঞ্জিদের গলা ধরিয়া ছাড়া তাহারা ইটে না । છે. " রাজীব তাহার সেকেলে মনটাকে পাঙ্গিক্ষেরিয়া করিয়া শীঘ্রই এই ত্রিশ-বত্রিশদের সমকক্ষ হইয়া উঠিল ; এমন কি অনেকে বলিত আধুনিকতায় রাজীব জার বছর