পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কুমুলাস মেঘ ও ষ্ট্রটিস মেঘ "স্নিগ্ধ সজল মেঘ-কজল দিবসে বিশ্বশ প্রহর অচল অলস আবেশে ; শশিভাল্লাহীন অন্ধতামসী যামিনী কোথা তোরা পুর-কামিনী— আজিকে দুয়ার রুদ্ধ ভবনে ভবনে জনহীন পখ কাদিছে ক্ষুব্ধ পবনে, চমকে দীপ্ত দামিনী: শুষ্ক শয়নে কোথা জাগে পুর-কামিনী।” রবীন্দ্রনাথ মেঘের জন্ম বাতাস ও আদৃত বাপকণ থেকে। কি ক’রে তা হয় বলছি। এক পাত্র ঠাণ্ড জল নিয়ে তাতে আস্তে আস্তে সোর মিশাতে থাকুন। ধীরে ধীরে সোরা জলে দ্রব হ’য়ে মিশে যাবে। কিছুক্ষণ পরে দেখবেন যে আর জলে সোর গোলা যাবে না। এ রকম হওয়ার কারণ এই যে কোনও নির্দিষ্ট তাপে কতটা জলে কতটা সোরা দ্ৰব হয় তার একটা অনুপাত আছে। সেই অকুপাত পার হ’লে সোরা জলে আর মিশবে না, জলের নীচে প’ড়ে থাকবে। প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড এখন ঐ জলের পত্রিটি গরম করুন। দেখবেন জলে আরও সোরা প্রব হচ্ছে। কারণ গরম হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জলের সোরা দ্রবীভূত করার ক্ষমতা বেড়ে যাচ্ছে। এখন ক্রমে ক্রমে জল গরম ক’রে সোরার পরিমাণ বাড়িয়ে যান। শেযে দেখবেন যে, জল ফুটুছে কিন্তু আর সোরা গুলছে না। এখন ঐ ফুটন্ত জল ছেকে অন্ত পাত্রে ঢালুন, প্রথমে দেখবেন, পাত্রে শুধু নিৰ্ম্মল জল রয়েছে। পরে যতই জল ঠাণ্ড হবে ততই সোরা দ্রব হয়ে পৃথক হ’য়ে নীচে পড়বে । তাহার কারণ জলের তাপ কমে যাওয়াতে সোরা দ্ৰব ক’রে রাখবার ক্ষমতাও কমে যায় সুতরাং যতটা সে দ্ৰব ক’রে রাখতে পারে তার অধিক যা কিছু সোরা সেটা আলাদা হ’য়ে পড়ে। বাতাসও ঠিক এই রকমে জল ( বা জলীয় বাষ্প) শোষণ করে এবং বাতাসের তাপ যত বাড়ে ততই জল শোযণের ক্ষমতাও বাড়ে । এখন গরম অবস্থায় বায়ুমণ্ডলে যে পরিমাণ জলীয় বাষ্প থাকে, বাতাস হঠাৎ কোনও কারণে ঠাগু হ’য়ে গেলে সে পরিমাণ থাকৃতে পারে না, সুতরাং সেখানে ( বায়ু-মণ্ডলের সেই অংশে ) যতটা বাষ্প বেশী আছে সে সব পৃথক হ’য়ে যায়। এই পৃথকীকৃত বাষ্পই কুয়াশা বা মেঘ । কুয়াশা বা মেঘের মধ্যে আকৃতিগত পার্থক্য নেই তবে সাধারণতঃ বিভিন্ন কারণে এদের উৎপত্তি। পৃথিবীর উত্তাপের হ্রাস বৃদ্ধির জন্যে কুয়াশা হয়। কিন্তু মেঘের জন্ম সাধারণতঃ বাতাসের চাপের হ্রাস বৃদ্ধির দরুণ শৈত্যহেতু। এই জলীয় বাষ্প বায়ুস্রোতে খুবই উপরে শীতল ংশে গেলে তুষার (snow ) বা শিলা ( hail) রূপ ধরে । -