পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q>8 প্রবাসী – শ্রাবণ, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড ভর সঙ্কোচ অথবা আপন অপরিহার্য অক্ষমতা সম্বন্ধে নম্রতার লেশমাত্র লক্ষণ কোথাও নাই। এই দুঃসাহসিকতার পুরস্কারও তিনি পাইয়াছেন, ইংরেজি বিশ্ববিদ্যালয় হইতে খেতাব পাইয়াছেন ; যাহারা পরীক্ষক র্তাহার। বাংলা ভাষা ও রবীন্দ্রনাথের কাব্য সম্বন্ধে টমসনের অপেক্ষাও আনাড়ি। র্তাহীদের অন্ধ সাহসের একটি মাত্র কারণ এই, যে, পরীক্ষার বিষয়টি বাংলা সাহিত্য ও বাঙালী কবি-পরীক্ষার্থী ইংরেজ এবং বাংলার কোনো বিদ্যালয়ের পূৰ্ব্বতন ইস্কুলমাষ্টার। বিবন্ধটি সম্বন্ধে তাহার জ্ঞানই বা কি রকম, বোধই বা কি রকম, তাহা জান৷ তাহাদের পক্ষে বাহুল্য এবং সে সম্বন্ধে সন্দেহ করা কর্তব্য বলিয়া তাহারা মনে করিতে পারেন না। যদি কোনে৷ ফরাসী কবিকে লইয়। টম্পনৃএতখানি প্ৰগলভত করিতেন, তবে পরীক্ষকেরা নিশ্চয়ই শঙ্কিত হইয়া উঠিতেন । কোনো জর্শন কবির কথা বলিলাম না। কারণ জৰ্ম্মন কাব্যের প্রতি যথেচ্ছাচার করিলে বর্তমান কালে ইংলণ্ডে সেটা সাহিত্যিক দণ্ডবিধির কোঠায় আসে কিন। সন্দেহ আছে, অস্তুত জুরিদের ন্যায়বোধকে জাগরুক না করিতেও পারে । রাংলা কাব্যবিচারে একজন ইংরেজের ষোগ্যতা সম্বন্ধে পরীক্ষকগণ গোড়াতেই যেমন নিঃসংশয়, ফরাসীসাহিত্যবিচারে তাহার যোগ্যতা সম্বন্ধে গোড়াতেই তাহাদের তেমনি সংশয় হইত। কারণ বিদেশীর পক্ষে পরভাষার মৰ্ম্মস্থানে প্রবেশ দুঃসাধ্য, একথা জানিবার জন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষক-সভার সদস্য হইবার প্রয়োজন হয় না । উপাধিপরীক্ষায় মার্কালাভ করিবার পক্ষে একটা গুণ হয়তো এই গ্রস্থে আছে। সেট তথ্যসংগ্রহ। এই ংগ্রহের যে অংশ পরীক্ষার্থীর সে অংশ ভুলে জীর্ণ, যে ংশ শ্রদ্ধার যোগ্য তাহা একেবারেই তাহার নিজের নয়। শুধু তথ্য নহে, কবির রচনা সম্বন্ধে অনেক অভিমতও তিনি তাহার বাঙালী বন্ধুদের নিকট হইতে খাপছাড়া ভাবে সংগ্ৰহ করিয়াছেন । র্তাহীদের সকল মতের সহিত তাহার মত সম্পূর্ণ মেলে নাই, মাৰে মাৰে এমন কথা বলিয়া তিনি আপন স্বাধীন বুদ্ধির মধ্যাঙ্গারক্ষা করিয়াছেন। বিস্তার দৌড়ের চেয়ে কলমের দৌড় যেখানে বেশি হয়, সেখানে আত্মাভিমানের খাতিরে সমালোচককে এইরূপ কৌশল অবলম্বন করিতে হয় । এক পক্ষ যেখানে জানে এবং অন্য পক্ষ জানে না, সেখানে উভয়ের মধ্যে অনৈক্য স্বাভাবিক, কিন্তু শেষ পক্ষ যদি বিচারকের পদ পান, তবে সেই অনৈক্যটাকে সহজেই তিনি নিজের গৌরবের বিষয় করিয়া লইতে পারেন। বাঙালী পাঠকের কাছে রবীন্দ্রনাথের কাব্যের ভালো মন বিচার করা অনাবশ্যক। কেবল এইটুকু বলা দরকার, যে, এখনো পণ্ডিতী ভাষায় ইহার শ্রেণী নির্ণয় করিয়া ইহাকে জাদুঘরের নমুন-ভাণ্ডারের মধ্যে বাক্স বন্দী করিবার সময় হয় নাই। যে সকল পাঠক যথার্থ ই বাঙলা বোঝে,তাহাদের কাছে এখনো ইহা ছায়ায় আলোয় বিচিত্র রহস্তে প্রকাশিত। সুতরাং কেবলমাত্র তথ্যতালিকা ও ইতস্তত-বিক্ষিপ্ত অভিমতগুলা জোড়া দিয়া ইহার আলেখ্য রচনা করা অভিজ্ঞ বাঙালী লেখকের পক্ষেও দুঃসাধ্য। ছবির টুক্‌রাগুলিকে জোড় দিয়া তাহাকে সমগ্র করিয়া তুলিবার যে ইংরেজি খেলা আছে, সে খেলা খেলিতে হইলে টুক্‌রাগুলাকে কোনোমতে জড় করিলেই চলে না— ছবির ঐক্যবোধট। মনে থাকা চাই। টম্সন টুকুরাই জুড়িয়াছেন, কোনো ছবিকে জুড়িয়া তোলেন নাই । কেননা গুরুতর অনভিজ্ঞতা বশত ছবিকে সম্পূর্ণভাবে চেনা তাহার পক্ষে একেবারেই অসাধ্য। জোড়া দিল্লী কঁথা তৈরি হইতে পারে। সে কাথায় ঢাকা দেয়, প্রকাশ করে না। কবির কাব্য ও জীবন লইয়া টম্সন 6श्[भ्ञ। জবড়জঙ্গ করিয়া জোড়াতাড়া দিয়াছেন, সে যেন একটা অন্ধ টর্নেডো ঝড়ের লীলা, বটগাছ চড়িয়াছে ইমারতের মাথায়, ঘরের চাল পড়িয়াছে দীঘির জলের মধ্যে —আছে সকলি, কিন্তু সেই থাকার দ্বার। জ্ঞানের বা ভোগের বিষম অস্থবিধা ঘটে। অজিতকুমারের মত কোনো কোনো বাঙালী রবীন্দ্রনাথের রচনাবৈচিত্র্যকে একট। সহজ ঐক্য দান করিবার জন্য জোড়াগাথার পথে না গিয়া কাব্যকে নিছক্‌ তত্ত্বে চোলাই করিয়া লইয়াছেন। বেঙ্গল কেমিক্যাল ও ফাৰ্ম্মাস্থ্যটিক্যাল কোম্পানি তাহাজের নিমের আরকের বোতলের মধ্যে নিমগাছকে যেমন অত্যন্ত সহজ । ঐক্য দান করিয়াছেন এওঁ সেই রকম। কিন্তু যাই হোক, |