পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

敬8雷 প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড ভোর বেলা ৰখন তাহার ঘুম ভাঙিল দেখিল ঘরে 5$ल नाझे । ( , ) সকালবেল জানাল দিয়া মুখ বাহির করিতেই চূর্ণ বৃষ্টির কণায় গৌরীর মুখ ও মাথার চুল ভিজিয়া গেল। মেঘলা আকাশের ফিক রৌদ্র ও ভিজা বাতাসে দিনের চেহারাট অনেকখানি স্নিগ্ধ দেখাইতেছিল । বাহিরে তাকাইতেই গৌরীর মনে হইল যেন কাহার ঙ্গেহসিক্ত হাতের শীতল স্পর্শে তাহার সমস্ত অবসাদ কাটিয়া গিয়াছে। শরীরের অবসাদের সঙ্গে মনের বিরক্তিও অনেকখানিই দূর হইয়া গিয়াছিল বলিয়া চঞ্চলার প্রতি মনটাও তাহার অনেকখানি সদয় হইয়া উঠিল। সারা রাত্রি এমন করিয়া কাটাইয়া সকালৰেলাই সে কোথায় গেল একটু খোজ করিতে ইচ্ছা করিল। তাড়াতাড়ি মুখ হাত ধুইয়া গৌরী অনিমার ঘরে গিয়া দেখিল চঞ্চল অনিমার চুল ও বেশ-ভূষার একটু সংস্কার করিতে চেষ্টা করিতেছে । দীর্ঘ জাগরণের ক্লাস্তিতে তাহার সতেজ ও স্বন্দর মুখ ঐ রোদপোড়া ফুলের মত শুকাইয়া গিয়াছে। এক রাত্রির ঝড়ে তাহার ভিতরে বাহিরে কি যেন একটা প্ৰলয় হইয়া গিয়াছে। তাহার মুখের হাসি নিভিয়া গিয় তাহাকে চেনা , ধায় না প্রায়। গৌরীর সমস্ত মনট করুণায় ভরিয়া গেল। তাহারই এত কাছ দিয়া কাল সারারাত যে ঝড়ট বহিয়া গেল, তুচ্ছ কি একটা অভিমানের বশে সে তাহ ফিরিয়াও দেখে নাই। তাই আজ কল্পনার চোখে অন্ধকার রজনীর কোলে সেই একান্ত নিঃসঙ্গ সপ্তপ্ত মামুযটির বুক-ফাটা দীর্ঘশ্বাসের ছবি ফিরিয়া দেখিয়া নিজের হৃদয়হীনতায় সে লজ্জায় মরিয়া যাইতেছিল । মনে পড়িয়া গেল নিজের জীবনের সেই প্রথম দুঃখবোধের দিনের কথা, যেদিন পিতার মুখে আপনার মন্বভাগ্যের কথা সে শুনিয়াছিল। পিতা-মাতার স্নেহজোড়ে বসিয়াই সেদিন সমস্ত বিশ্বট। তাহার কাছে শূন্ত বলিয়া বোধ হইয়াছিল। পৃথিবীর যা কিছু মুখশান্তি, আনন্দ আরাম, মানমর্যাদা যেন সেই একটা কথার জালায় কে খুড়াইয়া দিয়াছিল। তবু তখনও বৈধব্যের প্রকৃত মৰ্ম্ম সে বোঝে নাই, অনাথ অসহায়ের জীবন-কি তা’ কল্পনাও করিতে জানে না । তারপর দিনে দিনে তিলে তিলে যত সে বুঝিয়াছে, জগৎকে চিনিয়াছে, আপনার ভাগ্যলিপি স্পষ্ট করিয়া পড়িতে শিথিয়াছে, ততই সে অস্তরের আগুন তাহার ৰঞ্চিত জীবনের প্রতি রদ্ধে রন্থে, ছড়াইয় পড়িয়াছে। তবু আজও তাহার পৃথিবীতে আপনার বলিবার মানুষ আছে। কিন্তু চঞ্চলার ত কেহ নাই । যাহারা আছে তাহার" ত থাকিয়াও নাই ; মৃত্যু যাহাকে নিঃসঙ্গ করে সে পাইয়৷ হারায় ; কিন্তু এ যে না পাইয়াই হারানো। চিরক্কঞ্চিত৷ চঞ্চলা ! - চঞ্চলার ষে মন্দভাগ্যের ইতিহাস একদিন গৌরীকে তাহার প্রতি বিরূপ করিয়াছিল, আজ তাহাই তাহাকে কাছে টানিয়া আনিল। সৰ্ব্বক্ষেত্রে অগ্রবর্ভিণী গৰ্ব্বিত৷ তেজস্বিনী চঞ্চলার প্রতি গৌরীর মনে একটা ঈর্ষ। জাগিয়াছিল। তাহার ইতিহাস সেই ঈর্ধার উপর বিতৃষ্ণ জুড়িয়া গৌরীকে সম্পূর্ণ বিরূপ করিয়া তুলিয়াছিল। জাৰ ব্যথাতুর চঞ্চলার মান মুখ গৌরীর মনে বাংসলী জাগাইৱা তুলিল । * কাল রাত্রে চঞ্চলাকে সে যখন দেখিয়াছিল উৎফুল্প মুখে সঞ্জয়ের সঙ্গে আলাপ করিতে, তখন ত তাহার মুখে এই ঝঞ্চার কোনো ছায়া দেখে নাই ; ফিরিয়া যাইতে যাইতে সে যাহা শুনিল তাহাও ত বন্ধুজনের স্মৃতি-কথার মধুর আলোচনা মাত্র। কিন্তু তাহার পর ঘন্টার পর ঘণ্টা কাটিয়া গেল, চঞ্চলার দেখা নাই। গৌরী কল্পনার সে অদেখা মুহূর্তগুলির ছবি আঁকিতে চেষ্টা করিল। সঙ্গীহীন চঞ্চলার মনে বাল্যস্থতি জাগাইয়া সঞ্চয় তাহার বন্ধুত্বকে নূতন করিয়া গড়িয়া তুলিতেছিল। কিন্তু বাল্যের ভিত্তিমাত্রের উপর যৌবনের বন্ধুত্ব কি সকল সময় গড় যায় ? তাহাতে অন্ত মাল-মশলা আপনি আসিয় পড়ে। এখানেও কি আর তাহা হয় নাই ? গৌরী মানসচক্ষে দেখিল, চঞ্চলীর মম্বভাগ্যই এখানে তাহার শক্র হইয়া দাড়াইয়াছে । সঞ্চয়ও চঞ্চলার মাঝখানে দাড়াইয়৷ এই অদৃপ্ত শক্ৰ চঞ্চলার সকল স্থখ শান্তি গুযিয়া খাইতেছে। চঞ্চক্ষার মন্দ্বভাগ্যের ইতিহাস