পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

やぐ8 প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩e৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড ছিল সুরেন্দ্রনাথ নিজে তাহার প্রত্যেক কথার সত্যাসত্য নিৰ্দ্ধারণ না করিয়া সহি করিয়াছিলেন । মাসপ্লেট {Muspratt) নামে একজন সিভিলিয়ান তখন শ্রীহট্টের জজ ছিলেন। তিনি সুরেন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে যে-সকল অভিযোগ আনা হইয়াছিল তাহার সমুদায় নর্থী-পত্র পরীক্ষা করিয়া বলেন, সুরেন্দ্রনাথের অপরাধ অনবধানত আর ইহার সঙ্গে সঙ্গে এ কথা ও কহেন যে, যে-সময়ে তিনি এই ভুল নর্থী সহি করেন তখন তাহার উপরে অত্যধিক কাজের চাপ পড়িয়াছিল । জজ সাহেব হাইকোর্টকে লেখেন যে, স্বরেন্দ্রনাথকে কিছুদিনের জন্য প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেটের অধিকার হইতে বঞ্চিত রাখিলেই তাহার এই সামান্ত অপরাধের যথেষ্ট প্রায়শ্চিত্ত হইবে । হাইকোর্ট এবিষয়ে কি অভিমত প্রকাশ করেন জানি না। তবে গবন্মেণ্ট এই সামান্য অপরাধের বিচার করিবার জন্য একটা বিশেষ কমিশন নিযুক্ত করেন। এই কমিশনের মন্তব্যের ফলে স্বরেন্দ্রনাথকে অযথ। কলঙ্কের ডালি মাথায় দিয়া সিভিল সাভিস্ হইতে সরাইয়া দেওয়া হয় । আমি তখন শ্রীহট্ট জেলা স্কুলের প্রথম শ্রেণীতে পড়ি । মোটামুটি স্বরেন্দ্রনাথের মকদ্দমার সকল কথাই জানিতে পাই । তখনই এই ধারণা জন্মে যে, ইংরাঞ্জের রাজ্যে, ইংরাজের আইনে ও আদালতে ইংরাজ যদি বাঙ্গালীর পিছনে লাগে তবে বাঙ্গালীর পক্ষে স্ববিচার লাভ একরূপ অসম্ভব । এইখানেই আমার প্রথম যৌবনের স্বাদেশিকতা এবং স্বজাত্যাভিমানের উন্মেষ হইতে আরম্ভ করে । (carelessness) | చ\) শ্ৰীহট্টের স্কুলে পড়াশুনায় আমি কোন দিনই আমার শিক্ষকদিগের কি আমার সহপাঠীদিগের গণনায় আসিতাম না। তবে মোটের উপরে বাংলা এবং ইংরাজীতে নিতান্ত হীন ছিলাম না । যখন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ি তখন জজ সাহেব,—তাহার নাম আমার মনে নাই—একদিন আমাদের স্কুল পরিদর্শন করিতে আসিয়া ইংরাজী রচনায় আমার ক্লাশের ছাত্রদের পরীক্ষা করিয়াছিলেন এবং আমার রচনার তারিফ করিয়াছিলেন । কথাটা মনে আছে এই জন্য যে, অামার সতীর্থেরা জজ সাহেবের এই প্রশংসাবাদ আমার লেথার গুণে পাই নাই, কিন্তু পিতৃপরিচয়ে পাইয়াছিলাম ইহ বলিয়! জঞ্জ সাহেবের উপরে পক্ষপাতিত্ব দোষ আরোপ করিয়াছিল । আসল কথাট এই যে, আমি বাংলা কি ইংরাজী কোন ব্যাকরণই মন দিয়া পড়ি নাই এইজন্য আমার লেখাতে বিস্তর ব্যাকরণ-ভুল থাকিয়া যাইত, কিন্তু এ সত্ত্বেও তাহার মধ্যে একটা প্রাঞ্জলতা থাকিত। আমি সৰ্ব্বদাই কান দিয়া ভাষার বিচার করিতাম, ব্যাকরণের জ্ঞান দিয়া নহে । আর ব্যাকরণ শুদ্ধই হৌক আর অশুদ্ধই হৌক আমার মনোভাব প্রকাশ করিতে কখনও শব্দের অভাব অতুভব করিতাম না । প্রথম প্রথম শব্দেরও অপপ্রয়োগ হুইত, কিন্তু মোটের উপরে লেখা শুনাষ্টত ভাল । ক্লাশের বই অপেক্ষা বাহিরের বই বেশী পড়িতাম। আর এবিষয়ে আমার প্রধান শিক্ষক মহাশয় রায় সাহেব দুর্গাকুমার ষমৃ—বছরখানেক হইল ইনি স্বৰ্গারোহণ করিয়াছেন—সৰ্ব্বদাই আমাদিগকে উৎসাহিত করিতেন। শ্ৰীট জেলা স্কুলের উচ্চ শ্রেণীর ছাত্রেরা তাহার প্ররোচনায় নির্দিষ্ট পাঠ্য ছাড়া বাহিরের অনেক বই পড়িত। সেগুলি প্রায় সকলষ্ট ইংরাজী কথা-সাহিত্যের অন্তর্গত ছিল । এ ছাড-অন্যান্য স্কুলের কথা জানি না—আমাদের হেড মাষ্টার মহাশয় ইংরাজী শিখাইবার সময় শব্দের মূল ধাতু সৰ্ব্বদাই frozoa Bishop Trencho Study of Words আমরা তাঙ্গর নিকট মনোযোগ দিয়া পড়িয়াfছলাম । প্রচলিত ইংরাজী শব্দের প্রাচীন ইতিহাস পড়িতে আমাদের অত্যন্ত কৌতুহল জন্মিত । একজন অবিড় পণ্ডিতের নাম হইতে অত্যন্ত মূখতাব্যঞ্জক ইংরাজ্য Dunce শব্দের উৎপত্তি হইয়াছে ইহা পড়িয়া আমার অত্যন্ত অদ্ভূত আনন্দ-কৌতুহল হইয়াছিল। লগুনবাসী ছোটলোক ইংরাজের “হেয়ারকে” “এয়ার” বলে আ র “এয়ারকে” “হুেয়ার” বলে এবং nকে হেন উচ্চারণ করে এসকল কাহিনী পড়িতে বড়ই আমোদ হইত। এক ব্যক্তি ইতালীয় নগর ভেনিস্—Wenice লিখিতে যাইয়া একটার জায়গায় দুটো n দিয়াছিলেন। এই বর্ণাশুদ্ধি সংশোধন করিতে যাইয়। একজন লগুন-বাসী ইংরাজ