পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سراينلاينا প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩৩৪ [ ২৭শ:ভাগ, ১ম খণ্ড ভানুমতী বিষণ্ণ মুখে দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া বলিল, “সত্যি কত চেষ্টাই যে ক’রেছিলেন । আমি ছাইকপালী তবু পিশ শাশুড়ীর ভয়ে তার কথা শুনতে চাইতুম না। কিন্তু হিন্দুর ঘরে অমন মেয়ে পাওয়া যাবে কোথায় ? মিত্তিয়দের মেয়েটি নাকি দেখতে খাস, ফোর্থ ক্লাস অবধি পড়েছে, গান-বাজনাও কিছু কিছু জানে। তবে বয়স কম, মাত্র তেরো বছর । তাঁ ওরা মেজদিদির কাছে বলেছে আমরা যদি কথা দিই, তরে ওরা মেয়ে আরো বছর দুই রাখতে পারে, তার বেশী আর পারবে না। বনেদী ঘর, তাদের আবার আত্মীয়-স্বজনে ছি ছি করবে। থোকাকে আজ আর-একবার ব’লে দেখতে হ’বে । মেজদিদি আজকালের মধ্যে একবার আসবে বলেছিল, তাকে নাকি ওরা অতিষ্ঠ ক'রে তুলেছে।” ভবানী বলিল, “যাও বাছ, চান ক’রগে। পরের ভাবনা, পরে ভেবে । তবে এইটুকু ব'লে রাখি, হিন্দুস্থানীর ঘটা করতে গিয়ে ছেলের মন ভেঙে দিও না। না হয় ব্রাহ্ম কি খ্ৰীষ্টান মেয়েই বিয়ে করবে, তারাও.ত মাকুব ।” ভানুমতী হাসিয়া উঠিয়া পড়িল, “বুড়ো হ’য়ে তোর ভীমরথী ধরেছে দেখছি । খ্ৰীষ্টান বিয়ে করবে কি রকম ? তাহ’লে আর আমায় এ বাড়ীতে টিকৃতে হবে না। সাতটা নয় পাচট। নয়, আমার ঐ এক ছেলে, তার বেী নিয়ে আমি ঘর করতে পারব না ? খোকা আমার বেঁচে থাক, সে মাকে আমন দুঃখ কখনও দেবে না ।” মাধবী বিস্ময়ের আতিশষ্য দেখাইবার জন্য গালে হtভ দিয়া বলিল, “দিদি, কি ষে বলে তার ঠিক নেই! এ কি হেঁজি-পেজির ঘর যে যা খুসি করলেই হ’ল ! এই বংশে শেষে খ্ৰীষ্টান বউ আসবে । ওমা !” ভবানী তাহাকে তাড়া দিয়! বলিল, “নে নে, স্বাক। সাজতে হবে না। তুমি যাও বাবু, চান ক'রে এসো, আমি ফলটলগুলো গুছিয়ে আনি ৷” বলিয়া সে শয়নকক্ষ ছাড়িয়া বাহির হইয়া গেল । চাকুমতী চলিল স্বানের ঘরে, পিছনে তেয়োলে, ধুতি প্রভৃভি লইয়া চলিল মাধবী । জানান্তে খাইতে বসিয়া ভানুমতী বলিল, “মাধ, این اث ت: به ن: রোহিণীকে ডেকে জিগগেস করত রে, খোকা উঠেছে নাকি, তার চা-টা খাওয়া হ’য়েছে নাকি ? নিজের পোড় পেট নিয়েই ব্যস্ত আছি, ছেলেটার এখন অবধি খোজই নিলুম না।” ভবানী বলিল, “সে এখনও ওঠেনি গে। ওঠেনি, তুমি খাওত।” মাধবী তবু গৃহিণীর আজ্ঞাপালনার্থ রোহিণীর সন্ধানে চলিয়। গেল । খাইতে খাইতে ভাকুমতী জিজ্ঞাসা করিল, “আম আনাস্-নি ষে বড় এবার?” - ভবানী বলিল, “এনেছিলুম। সবে উঠেছে, দাম বেশী ব’লে গোটা দুই মোটে এনেছিল । ভাবলুম একট। থোকাকে দেব, একট। তোমার জন্তে রাখব। তা খোক কাল বিকেলে আর-একটি ছেলেকে নিয়ে এল, একসঙ্গে জল খেল, তা দুটোই তাদের দিলুম।” ভানুমতী বলিল, “ওমা, তাই নাকি ? কে ছেলেটি ?” ভবানী বলিল, “নাম ত জানি না।” রোহিণী বলিল, ‘দাদাবাবুর সঙ্গে আর-এক বাবু এসেছে । উকি দিয়ে দেখলুম, ওরই বয়সী একটি ছেলে, একসঙ্গে পড়ে বোধ হয়। তুমি থাকৃলে বোধ হয় এদিকে নিয়ে আস্ত ; খোজ করছিল, মা আছেন নাকি ৷” ভানুমতার খাওয়া শীঘ্রই শেষ হইয়। গেল। মাধবা থালা বাটি উঠাইয়া বাহিরে চলি যাইতেই ভবানী বলিল, “এখন আর ঘোরাঘুরি করো না। একটু জিরোও, তা না হ’লে আবার বুক ঢিপ ঢপ স্বরু হ’বে। খোকা চা খাওয়া হ’লেই আসবে এখন এদিকে । না হয় আমি তাকে ব’লে আসছি । হার-ছড়া গলায় দাও, ফেলে রেখেছ পাশে, আবার কোথা দিয়ে কে নিয়ে যাবে।” হারটি সরু, তাহাতে মস্ত ভারী এক পদক ঝুলিতেছে। প্তিং টিপিলেই তাহার উপরের ডালাটি খোলা যায়, ভিতরে জ্ঞানদারঞ্জনের একটি ক্ষুদ্র ছবি। ভানুমতী একবার ডাল খুলিয়া ছবিটি দেখিয়া লইল, তাহার পর ' হার উঠাইয়া গলায় পরিল। ভবানী বাহির হইয় গেল, স্থবীরের সন্ধানে । - মিনিট দশ পনেরো পরেই স্বীর আসিয়া ঘরে ঢুকিল । সবে ঘুম ভাঙিয়াছে তাহার চিহ্ন এখনও তাহার