পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৭২ প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩৩৪ { ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড খেলা আকাশে আর সমুন্ত্রর উপর দেখেছিলুম—সদ্ধার crepusale বা জালো-আঁধারিতে কে যেন হালক নীলের তুলি দিয়ে আকাশ আর সাগরের উপর এক পোছ রঙ বুলিয়ে ডিজিয়ে দিয়েছে। আজকের দিনটাও ঐ রকম জলে-ঝাপটায় কাটবে ব’লে মনে হ’য়েছিল, কিন্তু ভোরে উঠে প্রসন্ন আকাশ দেখে মনট। খুলী হ’য়ে গেল। জাহাজে আমরা চড়েছি পরশু, বেষ্পতিবার ; ১১ই তারিখে । বেলা সাড়ে পাঁচটায় আমাদের জাহাজ ছেড়েছিল—বারবেলা কাটিয়ে, আশা করি . মাদ্রাজ সম্বরে সকাল আটটায় আমাদের প্রবেশ, সেখান থেকে পাঁচটায় আমাদের প্রয়াণ । কল’কাতা থেকে তার দুদিন আগে, মঙ্গলবার ১২ই তারিথে আমরা যাত্র করি । এই মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি, তিন দিন ধ’রে একটানা রেলযাত্ৰ ক’রে আর মাদ্রাজে ঘোরাঘুরি করে, জাহাজে যখন চড়লুম তখন শরীর মন দুই অবসয় । জাহাজ ছাড়তে সকলে একটু আরামের নিশ্বাস ফেললুম—অন্ততঃ চার পচদিন শুয়ে ব'সে হাত-পা ছড়িয়ে যেতে পারা যাবে, এই মনে ক’রে । বিদেশে যাচ্ছি, তিন মাস ধ’রে আমাদের ভারতভূমি বা বঙ্গভূমির মনঃকোকনদ যে আমাদের ক'জন-হীন হ’ম্বে থাকৃতে পারে সে-কথা আদৌ মনে হয়নি। ১৯১৯ সালে যখন ছাত্ৰ হ’য়ে দীর্ঘ মেয়াদ নিয়ে ইউরোপ যাত্রা করি, তখন বোম্বাইয়ের আগোলো-বম্বরের ঘাট ছাড়বার সময় মনটা একটু ভার-ভার হয়েছিল, চোখের কোলও বোধ হয় একটু ভারি হয়েছিল । এবার কিন্তু সে-রকম কিছু হ’তে পারেনি। কারণ যে বিদেশে আমরা এখন চ’লেছি তার বৈদেশিকত্ব আমাদের কাছে ততটা নেই —এ বিদেশ আমাদেরই দেশের একটুকু অংশ এই রকম - azdı "TAHI ( cabi historical sense il Nofskiff অনুভুতির ফল ) আমরা নিয়ে চলেছি । কাজে কাজেই দুর বিদেশ-প্রবাসের একটা চাপা আতঙ্ক মনের মধ্যে নেই। কলকাত! থেকে মাদ্রাজ-চল্লিশ ঘণ্টার এই রেলযাত্রা আমরা তিনজনে মোটের উপর বেশ আনন্দেই করেছি । নৃবি আমাদের পাশের গাড়ীতে, একখানি কামরায় তিনি এক ছিলেন। খড়গপুরে আমাদের কাম রায় ঢুকূল দুজন ফিরিঙ্গি রেলের লোক-মালপত্র নিয়ে । এরা যাবে মাত্রাঙ্গ অবধি। এদের ঢুক্ষতে দিতে হ’ল । ওদিকে কবির গাড়ীতে একদল কলেজের আর ইস্কুলের ছেলে ঢুকে পড়ল। এর মেদিনীপুর থেকে আসছে। কবি আসূছন মনে ক’রে কালকেও এসেছিল, আজ এর দেখ{ cos(HZg i Autograph hunting și RTF (MICRH z vstofă সংগ্রহের বাতিক দেখলুম ভাবণ সংক্রমিক হ’য়ে পড়েছে । ছেলেরা চায় কবির হস্তাক্ষর,—র্তার সাম্নে ছোট বড় বঁiধান খাত, চার-পয়সানে এক্সারসাইজ-বুক, ঘরে সেলাই খাতা চার পচে খান খুলে ধরা হয়ে রয়েছে দেখলুম। একটী সাহিত্য-রসিক ছেলে চায়, তখনি কবি দু'ছত্র রচনা ক’রে তার খাতায় লিখে দেন । ছেলেদের বিমুখ করতে তিনি চান না, অথচ দেশ কাল আর শরীর মন ঠিক কবিতা রচনার উপযুক্ত নয় । তিনি একটু কাতর দৃষ্টিতে আমাদের দিকে তাকালেন। মনে পড়ল, কে একজন নবীন নাট্যকারষশঃ প্রার্থী তার নাটকের গানগুলিঙে স্বর দেবার জন্ত কবির কাছে এসেছিল । বেশী নয়, গোট। বাইশোক গান। প্রত্যেকটিতে সুর দিতে, এমন আর কি, বড় জোর আধ-ঘণ্টা ক'রে সময় লাগবে—এট। কি তার স্নেহাস্পদ অমুগামীকে বাধিত করুবার জন্ত তিনি করতে পারেন না ? স্বখের বিষয় ছেলে কয়ট উক্ত উদীয়মান নাট্যকারের মতন নাছোড়বাঙ্গ ছিল না। তাদের বাইরে ডেকে নিয়ে এসে মিষ্টি কথায় বলতে, তার সন্তুষ্ট মনে কবিকে প্রণাম ক’রে চ'লে গেল । খড়গপুর থেকে গাড়ী ছেড়ে দিলে ; সন্ধ্যা হ’য়ে গিয়েছে, রাঞ্জিটা, কবি নিৰ্ব্বিত্নে কাটালেন । , আমাদের গাড়ীতে যে দুটি ফিরিঙ্গি উঠ ল তারা দুয়ে মিলে দু-জন মাছুষ বটে, কিন্তু একজন হচ্ছে দেড়, আর একজন অtধ । রেলের ড্রাইভার কিংবা গার্ড হ’বে । গরীব, ভালো মানুষ । বাঙ্গালোরের দিকে বাড়ী। মোট লোকট খুব লম্ব। চওড়া, দোহারা গড়ন, তার খোচা খোচা গোফ ; আর তার সহযাত্রী রোগ লোকটা আকারে খৰ্ব্বকায়, বিরল-গোফদাড়ী। তার একসঙ্গে ধাচ্ছে, হয় আত্মীয় নয় সহকৰ্ম্ম । এই যুড়ট দেখে মনে হ’ল The long and short of it । বড়টি (চেহারায় ভারিকে ব’লে বোধ হয় )