পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] কন্যা পান-লইয়। প্রবেশ করিল। ইহাই রীতি, অতএব বাড়ীতে একশ’ জন চাকর-বাকর থাকিলেও মেয়েকে পান লষ্টয়াই আসিতে হইবে। অবশ্ব তাহার হাতে মাত্র একটি মাঝারী গোড়ের রূপার ডিবা ; বেশীর ভাগ পান, মশলা দাসীতেই বহন করিয়া আনিল । মেয়ে পান আনিয়া বুদ্ধ দেওয়ানজীর সামনে রাখিল, কোনোমতে একটা প্রণামও তাহাকে করিয়া ফেলিল । চার পাঁচ জোড় চোখ আসিয়া পড়িল মেয়েটির মুপের উপর । সুবীর দেখিল, সামনে একটি মেয়ে দাড়াইয়া, তাহার রং উজ্জল গৌরবর্ণ, মুগত্র ও সুন্দর। তবে সে নিতান্তই বালিক, বয়স কিছুতেই তেরোর বেশী হইবে ন। তাহার মনে হইল একটু কম করিয়া সাজাইলে ইহার স্বাভাবিক শ্ৰী অনেক খানিষ্ট ধরা পড়িত। মূল্যবান বেগুনী রঙের বেনারসী শাড়ী, জামা, ও ধারকরা মণিমুক্তার ভারের তলায় মেয়ে যে কোথায় তলাইয়া গিয়াছে তাঙ্গকে প্রায় খুজিয়া পাওয়াই ভার। তবু মেয়েটি যে সুন্দরী সে বিষয়ে কোনই সন্দেহ নাই । মেয়ের সহিত কণা বলার ভার বৃদ্ধ দেওয়ানট গ্রহণ করিলেন । ক’নের নাম নলিনী, সে ফোর্থ ক্লাশে পড়ে। রান্নাবার। শিখিতেছে, আলুর দম ও মাংস রাধিতে জানে, শিঙাড়া পায় প্রভৃতিও অল্প জানে। শেলাই শেখে সে অন্তঃপুর-শিক্ষয়িত্রীর কাছে। তাহার হাতের কাজ কয়েকট। পরীক্ষার্থে উপস্থিতও করা হইল । মোটের উপর সে বেশ প্রশংসার সহিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইল। সুরীর বা তাহার বন্ধুর কন্তকে কোন প্রশ্নই করিল না । চন্দ্রনাথ বলিল, “কি হে কেমন দেখ ছ ? আমার ত সব দিক দিয়ে বেশ ভালই মনে হচ্ছে।” সুবীর বলিল, “ভালই ত।” প্রবোধ বলিল, “তবে চাদ, পথে এসে । এই ন ছোট মেয়ে তোমার ভারি অপছন্দ ? এবার কেমন ?” সুবীর বলিল, “আমার মতের কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে ত বুঝছিনা। মেয়েটি দেখতে ভাল, লেখাপড়া, কাজকৰ্ম্ম শিখেছে, কিছুই অস্বীকার করা যায় না। আমার যদি মেয়ে adopt করবার সখ থাকৃত, তাহলে একে ঠিক পছন্দ করতাম। বেশ কচি মুখ, গাল টিপলে দুধ বেরয়।" পরভৃতিক Գ:ՏՏ S AMAMeeMeAAASAAAS তাহার বন্ধুরা বলিল, “তোমার মত ফাজিল জুনিয়ায় নেই হে! কি চাও তুমি ?” সুবীর বলিল, “জানিন। হয়ত কখনও কাউকে দেখে মনে হবে একে চাই’। তখন বুঝবে আমার আদর্শটা কি ” মতামত পরে জানান হইবে বলিয়। বরপক্ষ প্রস্থান করিলেন । কন্থাপক্ষে তখন বরের চেহারা স্বভাব চরিত্র প্রভৃতি লইয়া মহা সমালোচনা লাগিয়া গেল। সুবীর যে নিশ্চয়ই বেশ কিছু অহঙ্কারী এ বিষয়ে প্রায় সকলেরই একমত দেখা গেল। হুইলই বা জমিদারের ছেলে, তাই বলিয়; এত নাক সি ঢুকাইবার ঘটা কেন ; তাহারা কি এতই ফেলুন। । তাহাদের মেয়ে পাইলেও অনেক লোকে লুফিয়া নেয় । > R স্কুলের ঘণ্টা পড়িতে তখনও কিছু দেরি ছিল, কৃষ্ণ সেই অবসরে নিজের ঘরখানা গোছাইয়া-গাছাইয় একটু ভদ্র করিয়৷ তুলিতেছে। সবে কাল সে আসিয়া পৌছিয়াছে, কাজেই জিনিষপত্র যেমন-তেমন ভাবে ঘরময় ছড়ানে । বাক্স এখনও তালাবন্ধ, স্কট্রকেস্টাও, তাই, কেবল বিছানাটা খোলা হইয়াছে। কৃষ্ণার ঘরখানা ছোটই, বাতাসও বিশেষ নাই, তবে আলো আছে এই যা রক্ষা। ঘরের দেওয়ালে কৃষ্ণার নিজের, তাহার সহপাঠিনী বন্ধুদের এবং তাহার পালিকা মাতার অনেকগুলি ছবি, সুদৃশু কালে ফ্রেমে বাধানে। এক কোণে একটি কলো মেহগনির ড়ে সিং চেষ্ট, আর এক কোণে আয়ন। ঘরের সব আস্বাবই খুব চকচকে কালে পালিশের । স্নাটকে পুলিয়। তাহার ভিতরের কাপড়, ব্লাউস পেটি কোট প্রভৃতি কৃষ্ণ টানিয়া বাহির করিয়া ফেলিল । সেগু{ \; পরিপটি করিয়া আলনায় গোছাইতেছে, এমন সময় দরজায় টোকা দিয়া মিহি গলায় কে জিজ্ঞাসা করিল, “কৃষ্ণাদি, আস্ব ?" কৃষ্ণ বলিল, “এসো।” মেয়েটি ঢুকিয়া একখানা চিঠি আগাইয়া ধরিয়া বলিল, “দরোয়ান এখুনি দিয়ে গেল।”