পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] সুবিস্তৃত বিজিত রাজ্যের তালিক ছাড়া নগর কৃতাগম গ্রন্থে মজ্যপহিত রাজ্যের মিত্রশক্তিপুঞ্জেরও উল্লেখ আছে—তামদেশের অযোধ্যা ও রাজপুরী ; ব্রহ্মদেশের মরুৎমা (মার্জামান), কম্বোজ, চম্পা ও যবন রাজ্য (উত্তর আনাম ) ইছারা সকলেই মজ্যপহিত শক্তির সঙ্গে মৈত্রীবন্ধনে আবদ্ধ ছিল । বিজিত দ্বীপের রাজার নিয়মিতভাবে মজাপতিত রাজসভায় কর প্রেরণ করিতেন । হয়মবুরকও এইসকল রাজা অধিকার করিয়াই ক্ষণস্ত ছিলেন না ; প্রতি বৎসর নিয়মিত ভাবে প্রত্যেক স্থানে তিনি রাজকাৰ্য্য পরিদর্শনের জন্য মন্ত্রী ও ভূজঙ্গদের (গুণী ব্রাহ্মণ ) প্রতিনিধি করিয়া পাঠাইতেন । শৈব ভুজঙ্গের রাজকাৰ্য্য পরিদর্শন ছাড়া সৰ্ব্বত্র শৈবধৰ্ম্মের প্রচারে সাহায্য করিত। কিন্তু পশ্চিমজাভায় বৌদ্ধ ভুজঙ্গের কোনে আমল পাঠত না, সেখানে প্রাচীন কালে বৌদ্ধধৰ্ম্মবলম্বী কেহ ছিল না । পূৰ্ব্বজাভায় ও পূৰ্ব্বদ্বীপপুঞ্জে, ইহাদের যথেষ্ট প্রতিপত্তি ছিল। ভরদ ও কুটরন নামে দুষ্ট বৌদ্ধ ভিক্ষু বালিদ্বীপে মজ্যপতিত রাজ্যের ভূমি ও রাজস্ব ব্যবস্থার প্রচলন করিয়াছিলেন । ভূজঙ্গদের রাজকাৰ্য্য পরিদর্শনের ব্যবস্থায় মজাপহিত, রাজ্যের প্রভূত উন্নতি সাধিত হইয়াছিল। রাজাদেশ অমান্য করিবার সাহস কাহারও হইত না—করিলে “জলধি মন্ত্রী”দের হাত হইতে কাহারও নিস্তার ছিল না । নগরকৃতাগম গ্রন্থের মত রাজ্যপরিচালনার ভার ছিল দোষলেশসংস্পর্শহীন পাচজন মন্ত্রীর উপর । রাজকুমারেরাও রাজ্যের কোনো কোনো অংশে রাজকাৰ্য্য পরিচালনা করিতেন—ইহাদেরও মজ্যপহিত রাজসভায় আসিয়া কর ও প্রণতি নিবেদন করিতে হইত। হয়মবুরুকের রাজমহিষী ছিলেন ত্রপরমেশ্বরী সুষমা দেবী--- নগরকৃতাগম গ্রন্থে তিনি রতির মানবী প্রতিরূপ বলিয়৷ উল্লিখিত হইয়াছেন। মজ্যপহিত রাজ্যের রাজ্যবিস্তৃতি-গরিমাই শুধু গৰ্ব্বের বিষয় ছিল না। প্রপঞ্চ-লিথিত গ্রন্থে রাজ ধানীর অপূৰ্ব্ব সমৃদ্ধির বিবরণও আছে—স্থ্যুত সুগভীর জলাশয়ে কেশর-চম্পকবীথিকায়, বিস্তৃত পুষ্পোপ্তানে, প্রাসাদে, হুটুমন্দিরে, রাজবিতানে মজ্যপহিত, যবদ্বীপে ভারতীয় উপনিবেশ b^ఫి


*------ w.مس

রাজধানী হসিত মুখরিত হইয়া উঠিয়াছিল। রাজবিতানে বসিয়া রাজ্যপতি ( প্রধান মন্ত্রী ), আৰ্য্য, ও পঞ্চমীতে মিলিয় রাজার সম্মুখে রাজকাৰ্য্য পরিচালনা করিতেন। রাজধানীর পূর্ব প্রাস্তে শৈব ব্রাহ্মণের বাস করিতেন—তাহদের নেতা ছিলেন ব্রহ্মরাজ। দক্ষিণ প্রান্তে বাস করিতেন বেীদ্ধের—এই বৌদ্ধ-সংঘের কৰ্ত্তী ছিলেন রেঙ্কন্নদি । পশ্চিম প্রাস্তুে বাস করিতেন ক্ষত্রিয় ও মন্ত্রীরা । সমাজের অপেক্ষাকৃত উচ্চশ্রেণীতে বৌদ্ধ ধৰ্ম্মের প্রতিপত্তি ছিল—এই সময়কার ইতস্ততঃ-বিক্ষিপ্ত বৌদ্ধ মন্দিরগুলিতে তাহার প্রমাণ পাওয়া যায় । কিন্তু জনসাধারণের মধ্যে বৌদ্ধধৰ্ম্মের কিছুমাত্র প্রসার ছিল না। জাভার সাহিত্য বহুলপরিমাণে ব্রাহ্মণ্যধৰ্ম্মের দ্বার প্রভাবান্বিত ; বৌদ্ধ কবিরা পর্যন্ত এই সময় রামায়ণ ও মহাভারত অবলম্বন করিয়া কাব্য রচনা করিতেন । এই সময়কার জাভার ভাস্কর্য্যে ভারতীয় প্রভাব কমিয়। গিয়। পলিনেশিয়ান প্রভাবই অধিকতর সুস্পষ্ট হইয়া উঠিয়াছে দেখিতে পাওয়া যায়। পূৰ্ব্ব জাভার চণ্ডী পানাতরমে রামায়ণের যে-সব প্রস্তর-চিত্র খোদিত আছে তাহাতে এই পলিনেশিয় প্রভাব অত্যন্ত নিপুণ ভাবে আপনার অস্তিত্ব জ্ঞাপন করে । মেঘের জটাজালের অলঙ্কার রূপের মধ্যে দৈত্য-দানব, নর-বানর অপূৰ্ব্ব অদ্ভুত উপায়ে রূপায়িত হইয়া আছে। কিন্তু এই পলিনেশীয় প্রভাব মন্দিরের বাহিরের প্রাচীর-গাত্রের উপরই আবদ্ধ— মন্দিরের ভিতরের দেবদেবীর শিল্পরূপ একেবারে মধ্য জাভার ভারতীয় প্রভাবে সমৃদ্ধ। এইসব মূৰ্ত্তির পাদপীঠে প্রায়ই উত্তর ভারতের ব্রাহ্মীলিপি খোদিত দেখিতে পাওয়া যায়—অক্ষরগুলি নাগরী হইতে রূপান্তরিত হইতে হইতে - প্রায় বক্ষণক্ষরের অমুরূপ হইয়া উঠিয়াছে। ১৩৮৯ খৃষ্টাব্দে হয়মবুরুক দেহত্যাগ করিলেন এবং র্তাহার মৃত্যুর পর হইতেই মজ্যপহিত, রাজবংশের ধ্বংসলীলা মুরু হইল। স্বীয় পুত্র ও জামাতার মধ্যে গৃহবিবাদের স্বত্রপাত হইয়া এই ধ্বংসলীলার প্রথম অঙ্কের অভিনয় আরম্ভ হইল। উত্তর বোৰ্ণিও, সুমাত্রার ইন্দ্র গিরি ও মালাক সুযোগ বুঝিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করিল এবং তাহার পরেই দারুণ দুর্ভিক্ষে সমগ্র মজ্যপহিত রাজ্য