পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दका हष्कानाबब्ी সত্য হও, আমার যদি পতিভক্তি থাকে, তবে যেন এই পত্ৰখানি সফল হয়। আমি চিরকাল স্বামীর চরণ ভিন্ন কিছই জানি না-ইহাতে যদি পণ্য থাকে, তবে সে পণ্যের ফলে আমি সবগ চাহি না। কেবল এই চাই, যেন মতু্যকালে স্বামীর মািখ দেখিয়া মরি।” কিন্তু পত্র ত নগেন্দ্রের নিকট পৌছিল না। পত্র যখন গোবিন্দপারে পৌছিল, তাহার অনেক পকেব। নগেন্দ্ৰ দেশপযর্ণাটনে যাত্রা করিয়াছিলেন। হরকরা পত্র বাড়ীর দরওয়ানের কাছে দিয়া গেল । দেওয়ানের প্রতি নগেন্দ্রের আদেশ ছিল যে, আমি যখন যেখানে পৌছিব, তখন সেইখান হইতে পত্র লিখিব। আমার আজ্ঞা পাইলে সেইখানে আমার নামের পত্ৰগলি পাঠাইয়া দিবে। ইতিপকেবই নগেন্দ্ৰ পাটনা হইতে পত্র লিখিয়াছিলেন যে, “আমি নৌকাপথে কাশীযাত্রা করিলাম। কাশী পৌছিলো পত্র লিখিব। আমার পত্ৰ পাইলে, সেখানে আমার পত্ৰাদি পাঠাইবে।” দেওয়ান সেই সংবাদের প্রতীক্ষায় ব্রহ্মচারীর পত্ৰ বােক্সমধ্যে বন্ধ করিয়া রাখিলেন। যথাসময়ে নগেন্দ্ৰ কাশীধামে আসিলেন । আসিয়া দেওয়ানকে সংবাদ দিলেন। তখন দেওয়ান অন্যান্য পত্রের সঙ্গে শিবপ্রসাদ ব্রহ্মচারীর পত্র পাঠাইলেন। নগেন্দ্ৰ পত্র পাইয়া মৰ্ম্ম বিগত হইয়া, অঙগালিদাবার। কপাল টিপিয়া ধরিয়া কাতরে কহিলেন, “জগদীশবর! মহত্ত জন্য আমার চেতনা রাখা।” জগদীশবারের চরণে সে বাক্য পৌছিল; মহাত্ত জন্য নগেন্দ্রেব চেতনা রহিল ; কম্পমাধ্যক্ষকে ডাকিয়া আদেশ করিলেন, “আজ রাত্ৰেই আমি রাণীগঞ্জ যাত্রা করিব —সব্বস্ব ব্যয় করিয়াও তুমি তাহার বন্দোবসত কর।” কম্পমাধ্যক্ষ বন্দোবসত করিতে গেল। নগেন্দ্র তখন ভূতলে ধলির উপর শয়ন করিয়া অচেতন হইলেন। সেই রাত্রে নগেন্দ্ৰ কাশী পশ্চাতে করিলেন। ভুবনসন্দেরী বারাণসি, কোন সখী জন এমন শারদ রাত্রে তৃপিতলোচনে তোমাকে পশ্চাৎ করিয়া আসিতে পারে ? নিশা চন্দ্রহীনা ; আকাশে সহস্ৰ সহস্ৰ নক্ষত্র জীবলিতেছে-গঙগাহৃদয়ে তরণীর উপর দাঁড়াইয়া যে দিকে চাও, সেই দিকে আকাশে নক্ষত্র - --অনন্ত তেজে অনন্তকাল হইতে জীবলিতেছে—অবিরত জবুলিতেছে, বিরাম নাই। ভূতলে দ্বিতীয় আকাশ!—নীলাম্বরবৎ স্থিরনীল তরঙিগণনীহাদয় ; তীরে, সোপানে এবং অনন্ত পৰ্ব্ববতশ্রেণীবৎ অট্টালিকায়, সহস্ৰ আলোক জবুলিতেছে। প্রাসাদ পরে প্রাসাদ, তৎপরে প্রাসাদ, এই রােপ আলোকরাজিশোভিত অনন্ত প্রাসাদশ্রেণী। আবার সমন্দিয় সেই সবচ্ছ নদীনদীরে প্রতিবিম্বিত।--আকাশ, নগর, নদী. --সকলেই জ্যোতিবিবান্দময়। দেখিয়া নগেন্দ্র চক্ষ মছিলেন। পথিবীর সৌন্দৰ্য্য তাঁহার আজি সহ্য হইল না। নগেন্দ্ৰ বঝিয়াছিলেন যে, শিবপ্রসাদের পত্ৰ অনেক দিনের পর পৌছিয়াছে—এখন সাহায্যমখী কোথায় ? ঘাটত্রিংশতত্তম পরিচ্ছেদ ঃ হীরার বিষবক্ষ মাকুলিত যে দিন পাঁড়ে গোত্ঠী পাকা বাঁশের লাঠি হাতে করিয়া দেবেন্দ্রকে তাড়াইয়া দিয়াছিল, সে দিন। হীরা মনে মনে হাসিয়াছিল। কিন্তু তাহার পরে তাহাকে অনেক পশ্চাত্তাপ করিতে হইল। হীরা মনে মনে ভাবিতে লাগিল, “আমি তাঁহাকে অপমানিত করিয়া ভাল করি নাই। তিনি না জানি মনে মনে আমার উপর কত রাগ করিয়াছেন। একে ত আমি তাঁহার মনের মধ্যে স্থান পাই নাই; এখন আমার সকল ভরসা দরি হইল।” দেবেন্দ্রও আপন খলতাজনিত হীরার দন্ডবিধানের মনস্কামসিদ্ধির অভিলাষ সম্পপণ করিতে প্রবত্ত হইলেন। মালতী দ্বারা হীরাকে ডাকাইলেন। হীরা দই এক দিন ইতস্ততঃ করিয়া শেষে ত্যাসিল । দেবেন্দ্র কিছ.মাত্র রোষ প্রকাশ করিলেন না—ভূতপকেব। ঘটনার কোন উল্লেখ করিতে দিলেন না। সে সকল কথা ত্যাগ করিয়া তাহার সহিত মিস্টালাপে প্রবত্ত হইলেন। যেমন উণনাভি মক্ষিকার জন্য জাল পাতে, হীরার জন্য তেমনি দেবেন্দ্র জাল পাতিতে লাগিলেন। লব্ধাশয়া হীরা-মক্ষিকা সহজেই সেই জালে পড়িল। সে দেবেন্দ্রের মধ্যরালাপে মগধ এবং তাহার কৈতববাদে প্রতারিত হইল। মনে করিল, ইহাই প্রণয়; দেবেন্দ্র তাহার প্রণয়ী। হীরা চতুরা, কিন্তু এখানে তাহার বন্ধি ফলোপধ্যায়িনী হইল না। প্রাচীন কবিগণ যে শক্তিকে NO SRO