পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

वर्ग७दकब झष्न्बव्ी সব্বাঙ্গে হাত বলাইলেন। তখন জীবানন্দ এক দীঘনিঃশবাস ছাড়িয়া উঠিয়া বসিল। শান্তির মািখপানে চাহিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “যদুদ্ধে কার জয় হইল ?” শান্তি বলিল, “তোমারই জয় । এই মহাত্মাকে প্ৰণাম কর।” তখন উভয়ে দেখিল, কেহ কোথাও নাই! কাহাকে প্ৰণাম করিবে ? নিকটে বিজয়ী সন্তানসেনার বিষম কোলাহল শানা যাইতেছিল, কিন্তু শান্তি বা জীবানন্দ কেহই উঠিল না—সেই পণচন্দ্রের কিরণে সমস্তজবল পঙ্করিণীর সোপানে বসিয়া রহিল। জীবানন্দের শরীর ঔষধের গণে, অতি অলপ সময়েই সস্থ হইয়া আসিল । তিনি বলিলেন, “শান্তি! সেই চিকিৎসকের ঔষধের আশ্চৰ্য্য গণ! আমার শরীরে আর কোন বেদনা বা গলানি নাই—এখন কোথায় যাইবে চল । ঐ সন্তানসেনার জয়ের উৎসবের গোল শানা যাইতেছে।” শান্তি বলিল, “আর ওখানে না। মার কায্যোদ্ধার হইয়াছে’-এ দেশ সন্তানের হইয়াছে। আমরা রাজ্যের ভাগ চাহি না-এখন আর কি করিতে যাইব ?” জী। যা কাড়িয়া লইয়াছি, তা বাহবিলে রাখিতে হইবে। শা। রাখিবার জন্য মহেন্দ্র আছেন, সত্যানন্দ স্বয়ং আছেন। তুমি প্ৰায়শিচত্ত করিয়া সন্তানধন্মের জন্য দেহত্যাগ করিয়াছিলে ; এ পনিঃপ্রাপত দেহে সন্তানের আর কোন অধিকার নাই। আমরা সন্তানের পক্ষে মরিয়াছি। এখন আমাদের দেখিলে সন্তানেরা বলিবে, “জীবানন্দ যদুদ্ধের সময়ে প্রায়শ্চিত্তভয়ে ল্যুকাইয়াছিল, জয় হইয়াছে দেখিয়া রাজ্যের ভাগ লইতে আসিয়াছে।” জী। সে কি শান্তি ? লোকের অপবাদভয়ে আপনার কাজ ছাড়িব ? আমার কােজ মাতৃসেবা, যে যা বলকে না কেন, আমি মাতৃসেবাই করিব। শা। তাহাতে তোমার আর অধিকার নাই—কেন না, তোমার দেহ মাতৃসেবার জন্য পরিত্যাগ করিয়ােছ। যদি আবার মাের সেবা করিতে পাইলে, তবে তোমার প্রায়শিচত্ত কি হইল ? মাতৃসেবায় বঞ্চিত হওয়াই এ প্রায়শ্চিত্তের প্রধান অংশ। নহিলে শােধ তুচ্ছ প্ৰাণ পরিত্যাগ কি বড় একটা ভারি কােজ ? জী। শান্তি! তুমিই সাের বঝিতে পাের। আমি এ প্রায়শিচত্ত অসম্পপণ্য রাখিব না। আমার সখ সন্তানধৰ্ম্মে-সে। সখে আমাকে বঞ্চিত করিব। কিন্তু যাইব কোথায় ? মাতৃসেবা ত্যাগ করিয়া, গহে গিয়া ত সখিভোগ করা হইবে না। শা। তা কি আমি বলিতেছি ? ছি! আমরা আর গহী নহি ; এমনই দাই জনে সন্ন্যাসীই থাকিব-চির ব্রহ্মচৰ্য্য পালন করিব । চল, এখন গিয়া আমরা দেশে দেশে তীর্থ দশন করিয়া বেড়াই। জী। তার পর ? শা। তার পর-হিমালয়ের উপর কুটনীর প্রস্তুত করিয়া, দই জনে দেবতার আরাধনা করিব —যাতে মার মঙ্গল হয়, সেই বর মাগিব । তখন দই জনে উঠিয়া, হাত ধরাধরি করিয়া জ্যোৎস্নময় নিশীথে অনন্তে অন্তহিত হইল। হায়! আবার আসিবে কি মা! জীবানন্দের ন্যায় পত্র, শান্তির ন্যায় কন্যা, আবার গভেদ ধরিবে কি ? অজটমT * পরিচ্ছেদ সত্যানন্দ ঠাকুর রণক্ষেত্র হইতে কাহাকে কিছ না বলিয়া আনন্দমঠে চলিয়া আসিলেন। সেখানে গভীর রাত্রে, বিষ্ণমন্ডপে বসিয়া ধ্যানে প্রবত্ত। এমত সময়ে সেই চিকিৎসকে সেখানে আসিয়া দেখা দিলেন। দেখিয়া, সত্যানন্দ উঠিয়া প্ৰণাম করিলেন। চিকিৎসক বলিলেন, “সত্যানন্দ, আজ মাঘী পণিমা।” সত্য। চলন-আমি প্রস্তুত। কিন্তু হে মহাত্মন! –আমার এক সন্দেহ ভঞ্জন করন। আমি যে মহত্তে যাদ্ধজয় করিয়া সনাতন ধৰ্ম্মম নিজেকন্টক করিলাম।--সেই সময়ে আমার প্রতি এ প্রত্যাখ্যানের আদেশ কেন হইল ? যিনি আসিয়াছিলেন, তিনি বলিলেন, “তোমার কায্য সিদ্ধ হইয়াছে, মসলমানরাজ্য ধবংস হইয়াছে। আর তোমার এখন কোন কাৰ্য্য নাই। অনৰ্থক প্রাণিহত্যার প্রয়োজন নাই।” c b b