পাতা:বঙ্গদর্শন-পঞ্চম খন্ড.djvu/২৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৮৪ l) দিগের মধ্যে যিনি সৰ্ব্বপেক্ষা কঠোরস্থায়, অত্যাচারী ছিলেন, তিনি পর্যন্ত আমাদিগের প্রতি যে প্রসাদ বিতরণে কৃপণতা করেন নাই, স্বসভ্য খ্ৰীষ্টিয়ান, জামালোকসম্পন্ন বৃটিস গবর্ণমেণ্ট কি তাছাই করিবেন ? যশোবন্ত সিং—এক জন হিন্দু, আরঙ্গজীবের প্রধান সেনাপতি ছিলেন । এক্ষণে পঞ্জাববাসিগণের সামাজিক অবস্থার বিযয়ে কয়েকটি কথা বলিতে ইচ্ছা করে। বোম্বাই প্রদেশের ন্যায় পঞ্জাবে অবরোধ প্রথা নাই। ভদ্র পরিবারের স্ত্রীলোকগণকেও প্রকাশ্য রাজপথ দিয়া যথা তথা গমন করিতে দেখিতে পাওয়া যায় । কিন্তু বোম্বাই প্রদেশের স্ত্রীস্বাধীনতা ও পঞ্জাব প্রদেশের স্ত্রীস্বাধীনতার মধ্যে প্রভেদ আছে। প্রথম প্রভেদ এই যে, পঞ্জাবে অবগুণ্ঠন প্রচলিত আছে কিন্তু বোম্বাই প্রদেশে তাহ: আদবে নাই। পঞ্জাব প্রদেশে স্ত্রীলোকেরা সম্পূর্ণরূপে মুখ অনাবৃত করিয়া পথ দিয়া চলিয়া যান,কিন্তু যখনই কোন ভক্তিভাজন আত্মীয় বা সন্মানযোগ্য পরিচিত ব্যক্তিয় সম্মুখে পড়েন,তৎক্ষণাং অবগুণ্ঠন টানিয়া দেন। অনেক সময় এখনও দৃষ্ট হয় যে, অবগুণ্ঠনের ভিতর ইইতে গম্ভীর বজধ্বনিতে চীৎকার করিতে থাকেন, অথচ মুখটি বাছির করি ড়েই বত আপত্তি। কেবল পঞ্জাবেকেন? ভারতের অনেক স্থানেই উক্তরূপ রীতি দেখিতে পাওয়া যায়। ভূপালের বেগম পঞ্জীব ও শিখসম্প্রদায় । ২৭১ المي বাকৃপটুতা প্রকাশ করিয়া দিল্লির সভাগৃহ প্রতিধ্বনিত করিরা গেলেন, অথচ মহা অনুরোধেও লর্ড লিটনকে আপনার মুখ দেখাইতে সন্মত হইলেন না । বোম্বাই ও বাঙ্গালাশীর্ষক প্রবন্ধের প্রথম প্রস্তাবে প্রদর্শিত হইয়াছে যে, প্রাচীন ভারতবর্ষে অবরোধ প্রথা ছিল না । তৎকালীন রমণীকুলের অবস্থার সহিত তুলনা করিলে মহারাষ্ট্রীয় অপেক্ষ। পঞ্জাবী স্ত্রীলোকদিগের অবস্থার অপেক্ষাকৃত অধিকতর মিল দৃষ্ট হয়। প্রাচীন শাস্ত্রে বহুল পরিমাণে স্ত্রীলোকের অবগুণ্ঠনের কথা উক্ত হইয়াছে । মহারাষ্ট্রীয় নারীদিগের মধ্যে অবগুণ্ঠন প্রচলিত নাই ; পঞ্জাবী নারীদিগের মধ্যে আছে। সুতরাং প্রাচীন ভারতের রমণীদিগের সহিতপঞ্জাববাসিনীদিগের অবস্থার অধিকতর সেীসাদৃশ্য দেখা যাইতেছে । দ্বিতীয় প্রভেদ এই যে, বোম্বাই অপেক্ষা পঞ্জাবের স্ত্রীস্বাধীনতা পরিমাণে অল্প বলিয়া বোধ ३श्न ! পঞ্জবে একটি অতি কদৰ্য্য রীতি প্রচ. লিত আছে । তত্ৰত্য স্ত্রীলোকের প্রকাশ্যরূপে নদীতে বিবস্ত্র হইয়া স্নান করিয়া থাকেন। শতঙ্গত যুবতী নারী চন্দ্রভাগ, বিতস্তা, ইরাবতী প্রভৃতি নদীতে উলঙ্গ হইয়া স্নান করিতেছে, লেশমাত্র লজ্জা নাই। তাছাদিগের নিকটবর্তী পুরুষগণও এই কদৰ্য্যব্যবহার দেখিরা কিছুমাত্র লজ্জিত হইতেছে না । বাস্তবিক কোন একটি প্রথা যত কেন