পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

98 সংস্কারের চার-ঘোড়ার গাড়ি কেন অনায়াসে यश्रमश्लॉन । [ ২য় বর্ষ, ভঙ্গি। আমাদিগকে নিরস্তম কুরিয়া দেয়। চলিবে না, তাহ তাহারী কিছুতেই ভাবিয়া .শিশুকাল হইতেই নিজের নিজত্ব উপলব্ধি পান না। যদি না চলে, তবে স্থির করেন, সেটা কেবল আমাদেরই দোষ, সেটা যে তাছাদেরও উদ্ধত বর্বরত হইতে পারে, তাহ কল্পনা করিবার শক্তিও তাঁহাদের নাই । বিশেষত আজকাল হঠাৎ ইংলণ্ডে উচ্চশ্রেণীর ভাবুকলোকের একেবারে অভাব ঘটাতে ইংরাজের জাতীয় মদমত্ত্বত সৰ্ব্বপ্রকার সদ্বিবেচনা ও মঙ্গলের বন্ধন একেবারে উল্লত্তম্বন করিতে উদ্যত হইয়াছে ; ইংরাজ নিজেকে সৰ্ব্বত্র প্রসারিত, দ্বিগুণিত, চতুগুণিত করাকেই জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ শ্রেয় বলিয়া জ্ঞান করিয়াছে, তাছাদের বুদ্ধিবিচারের এই উন্মত্ত অন্ধ অবস্থায় তাহারা ধৈৰ্য্যের সহিত আমাদিগকে শিক্ষাদান করিতে পারে না। উপনিষদে অনুশাসন আছে—শ্রদ্ধয়া দেয়ম্, অশ্রদ্ধয়া আদেয়মৃ— শ্রদ্ধার সহিত দিবে, অশ্রদ্ধার সহিত দিবে না-কারণ, শ্রদ্ধার সহিত না দিলে যথার্থ জিনিষ দেওয়াই যায় না, বরঞ্চ এমন একটা জিনিষ দেওয়া হয়, যাহাতে গ্রহীতাকে হীন করা হয়। আজকালকার ইংরাজশিক্ষকগণ দানের দ্বারা আমাদিগকে হীন করিয়া থাকেন,—র্তাহারা অবজ্ঞা-অশ্রদ্ধার সহিত मानं করেন, সেই সঙ্গে প্রত্যহ সবিদ্রুপে স্মরণ করাইতে থাকেন—“যাহা দিতেছি, ইহার তুল্য তোমাদের কিছুই নাই এবং যাহা লইতেছ, তাহার প্রতিদান দেওয়া তোমাদের সাধ্যের অতীত।” প্রত্যহ এই অবমাননার বিষ আমাদের মজ্জার মধ্যে প্রবেশ করে, ইহাতে পক্ষাঘাত আনিয়া করিবার কোন অবকাশ–কোন সুযোগ পাই নাই; পরভাষার বানান-যাক্য-ব্যাকরণ ও মতামতের দ্বারা উদ্বুদ্ৰান্ত-অভিভূত হইয়া আছি—নিজের কোন শ্রেষ্ঠতার প্রমাণ দিতে না পারিয়া মাথা হেঁট করিয়া থাকিতে হয়। শিশুকে অন্নস্ত,পের মধ্যে পুতিয়া ফেলিয়া যদি তাহার অভিভাবক বলে—“লক্ষ্মীছাড়া ছেলে, তোকে এত অন্ন জোগাইলাম, তবু তুই বাচিলি না কেন, কত গরীবের ছেলে ইহার চেয়ে অল্প অল্পেও সবল হইয়৷ উঠে,” তবে তখন সেই হতাশ অভিভাবককে এই বলিয়া বুঝাইবার চেষ্টা করিতে হয়, “মহাশয়, ঔদার্য্যবশত অল্পের অপব্যয় করা হইয়াছে, শিশুটিকেও অপব্যয় করিয়াছেন।” প্রথমত, প্রচুর অন্তু বাহিরে চাপানোর চেয়ে অল্প অন্ন ভিতরে দেওয়া ভাল ; দ্বিতীয়ত, অল্পই যে শিশুর প্রাণের পক্ষে একমাত্র প্রয়োজনীয়, তাহী নহে, তাহার বাতাস চাই, আলো চাই, খেলা চাই ! ইংরাজশিক্ষকেরা আমাদের ছেলেদের মাথার উপরে অবজ্ঞাভরে দূর হইতে অন্ন ছুড়িয়া মারেন, তাহার পরে ছেলেটা কাহিল হইতেছে বলিয়া বিস্ময়প্রকাশ করেন। র্তাহাদের নিজের ছেলেদের শিক্ষাপ্রণালী এরূপ নহে-অক্সফোর্ড-কেন্থি জে তাহাদের ছেলে কেবল যে গিলিয়া থাকে, তাহা নহে, তাহারা আলোক; আলোচনা ও খেলা হইতে বঞ্চিত হয় না। অধ্যাপকদের সঙ্গে তাছাদের সুদূর কলের সম্বন্ধ নহে। একে ত তাহাদের চতুৰ্দ্দিকৃবর্তী স্বদেশী সমাজ স্বদেশী