পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

а е ৰিপন্ন নৌকাখানি জলমগ্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পদ্মা-যমুনার সঙ্গমস্থলে উপনীত হইলেন । তখন পদ্মার ভয়ঙ্কর অবস্থা। রুয়িয়া, ফুলিয়া, গৰ্জ্জিয় রাক্ষসীর মত সে ঝড়ের সহিত যুঝিতেছিল । সেই অবস্থায় রায়মহাশয় সহস দেখিলেন, তাহার সুহাসির মত কেহ সন্তরণ করিয়া যমুনার তারাভিমুখে অগ্রসর হইতেছে—পশ্চাতে অদূরে অৰ্দ্ধনিমজ্জিত মনুষ্যদেহ, কষ্টে সে বালিকায় অঞ্চল ধরিয়া ভাসিয়া আসিতেছে । শশাঙ্কশেখর নিজের চক্ষুকে বিশ্বাস করিতে পারিতেছিলেন না । ইহা কি সম্ভব যে, উমাচরণ বালক-বালিক সহ জলমগ্ন হই য়াছে ? এই সময়ে ঝড়বৃষ্টির বেগ কথঞ্চিৎ भनौङ्कड इइण्डइिटा, डिनि कृब्रि। शिश्च। দেখিলেন, তাহার সন্তরণপটু কস্তা নিমজনোমুখ মূৰ্ত্তিমৎস্কন্দবীরতুল্য যুবকের প্রাণরক্ষা করিয়। নিৰ্ব্বিঘ্নে তারে উত্তীর্ণ হইয়াছে। মুহাসি অাদকেশ ও আর্দ্র বস্ত্রে পিতার চক্ষে মূৰ্ত্তিমতী উমারাণীর মত প্রতিভাত হুইতেছিল । বাপকে দেখিয় প্রথমত সে একটু অপ্রতিভ হইল । তার পর হাসিয়া উঠিয়া বলিল, “বাবা, মামাকে লুকিয়ে নেীকের জান্‌লা দিয়ে কেমন পালিয়েচি দেখ, এখনও হয় ত তিনি জানতে পারেন নি তা ভাল করিচি কি না, তুমিই বল ত বাবা ! দেখলুম একখানা নেীকে ডুবে গেল, কিন্তু সেজন্তে কারু মায় হলো না,— মামারও নয়। একটুর জন্তে বামুণের ছেলেটি মারা যেতে বসেছিল আর কি !” শশাঙ্কশেখর দেখিলেন, যুবকের গলদেশে উপবীত জড়িত । সঙ্গেহে সজলনেত্ৰে কস্তাকে বুকের কাছে বঙ্গদর্শন । [ ২য় বর্ষ, ভান্দ্র । টানিয়া আনিয়া তিনি যুবকটিকে ভাল করিয়া দেখিতে লাগিলেন । চিনিতে দেরি হষ্টল না । পিতার কণ্ঠে “কেও ষোড়শীচরণ" উচ্চারিত হইবামাত্র মুহাসি ছুটিয়া পলাইল । তখন তার ভারি লজ্জা হইয়াছিল । কেন না, চৌধুরাণীর কার্শাত্যাগের পর এই নাম অনেকবার সে শুনিয়াছিল । ষোড়শাচরণ সস্তরণে একান্ত অপটু নহে । কিন্তু বালিকার অঞ্চলসাহায্য ব্যতীত পদ্মগর্ভ হইতে সে-দিন তার বাচিয়৷ আসার সম্ভাবনা ছিল না। কথঞ্চিৎ মুস্থ হইয়া সে শশাঙ্কশেখরের পদধূলি গ্রহণ করিল। প্রাণদাত্রী বালিকার প্রতি কৃতজ্ঞতায় তাহার হৃদয় ভরিয়া গিয়াছিল, কিন্তু মুখে কিছু বলিতে পারিল না। - রায়মহাশয় ষোড়শাচরণকে কাছারিবাড়ীতে পৌছাইয়া দিলেন । পুত্রের প্রাণরক্ষার খবর পাইয়া ভবানীচরণবাবু সন্ত্রীক বাট হইতে ছুটির আসিলেন । সকল শুনিয়া তাহারা শশাঙ্কশেখরের নিকট উপস্থিত হইলেন। চৌধুরাণী মহাশয়ার আদরচুম্বনে মুহাসির কোমল গগু লাল হইয়া উঠিল। হাসিয়া-কাদিয়া সেই পুণ্যাহ বাসরেই তিনি মুহাসির সঙ্গে ষোড়শীচরণের । বিবাহ দিবেন, স্থির করিলেন । তার পর যেtড়শাচরণ চিরদিনের মত সুহাসিনীর অাচলে বাধা পড়িয়াছেন । শাশুড়ীর বড় আদ র এবং স্নেহের বউ হইলেও, মুহাসি মুখ তুলিয়। কখন তা হার সঙ্গে কথা কহিতে পারে । “চৌধুরাণীর বউ” বলিলে তার লজ্জা এবং অভিমানের সীমা থাকে না । : শ্ৰীশ্ৰীশচন্দ্র মজুমদার ।