পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S&b" করেন নাই। কবি নীরব থাকিয় শকুস্তলার চারিদিকের নীরবতা ও শূন্তত আমাদের চিত্তের মধ্যে ঘনীভূত কুরিয়া দিয়াছেন। কবি যদি শকুন্তলাকে কথাশ্রমের মধ্যে ফিরাইয়া লইয়৷ এইরূপ চুপ করিয়া ও থাকিতেন, তবু সেই আশ্রম কথা কহিত । সেখানকার তরুলতার ক্রননি, সৰ্থীজনের বিলাপ, আপনি আমাদের অন্তরের মধ্যে ধবনিত হইতে থাকিত । কিন্তু অপরিচিত মারীচের তপোবনে সমস্তই আমাদের নিকট স্তব্ধ, নীরব – কেবল বিশ্ববিরহিত শকুন্তলার নিয়মসংযত ধৈর্য্যগস্তার অপরিমেয় দুঃখ আমাদের মানসনেঞ্জের সম্মুখে ধ্যানাসনে বিরাজমান। সেই ধ্যানমগ্ন দুঃখের সম্মুখে কবি একাকী দাড়াইয়ু৷ আপন ওষ্ঠাধরের উপরে তর্জনী স্থাপন করিয়াছেন, এবং সমস্ত প্রশ্নকে নীরব ও সমস্ত বিশ্বকে দুরে অপসারিত করিয়া রাখিয়াছেন । দুষ্যন্ত এখন অনুতাপে দগ্ধ হইতেছেন । এই অনুতাপ তপস্ত। এই অনুতাপের ভিতর দিয়া শকুন্তলাকে লাভ না করিলে, শকুন্তলীলাভের কোন গৌরব ছিল না । হাতে পাইলেই ষে তাহাকে পাওয়া বলে, তাহী নহে— লাভ করা অত সহজ ব্যাপার নয় । যৌবনমত্ততার আকস্মিক ঝড়ে শকুস্তলাকে এক মুহূর্তে উড়াইয়া লইলে তাহাকে সম্পূর্ণভাবে পাওয়া যাইত না । লাভ করিবার প্রকৃষ্ট প্রণালী সাধনা, তপস্তা। যাহা অনায়াসেই হস্তগত হইয়াছিল, তাহ অনায়াসেহ হারাইয় গেল । যাহা আবেশের মুষ্টিতে আহরিত হয়, তাহ বঙ্গদর্শন । সেই নিষেধের সঙ্কেতে [ ২য় বর্ষ, আশ্বিন । শিথিলভাবেই স্থলিত হইয় পড়ে। সেইজন্ত কবি পরস্পরকে যথার্থভাবে, চিরন্তনভাবে লাভের জন্ত ফুষ্যস্ত-শকুন্তলাকে দীর্ঘদুঃসহ তপস্তায় প্রবৃত্ত করিলেন। রাজসভায় প্রবেশ করি বামাত্র দুষ্যন্ত যদি তৎক্ষণাৎ শকুন্তলাকে গ্রহণ করিতেন, তবে শকুন্তল হংসপদিকার দলবৃদ্ধি করিয়া তাহার অবরোধের এক প্রাস্তে স্থান পাইত । বহুল্লভ রাজার এমন কত সুথলব্ধ প্রেয়সী ক্ষণকালীন সৌভাগ্যের স্মৃতিটুকুমাত্র লইয়। অনাদরের অন্ধকারে অনাবশ্যক জীবন যাপন করিতেছে । “সকৃৎকৃতপ্রণয়োহয়ং জনঃ ।” শকুন্তলার সৌভাগ্যবশতই দুষ্যন্ত নিষ্ঠুর কঠোরতার সহিত তাহাকে পরিহার করিয়াছিলেন। নিজের উপর নিজের নিষ্ঠুরতার সেই প্রত্যভিঘাতেই দুখ্য স্তকে শকুন্তলা সম্বন্ধে আর অচেতন থাকিতে দিল না । অহরহ পরমবেদনার উত্তাপে শকুন্তল৷ র্তাহার বিগলিত হদয়ের সহিত মিশ্রিত হইতে লাগিল, তাহার অন্তর-বাহিরকে ওতপ্রোত করিয়া দিল । এমন অভিজ্ঞতা রাজার জীবনে কখনো হয় নাই---তিনি যথার্থ প্রেমের উপায় ও অবসর পান নাই । রাজা বলিয়াই এ সম্বন্ধে তিনি হতভাগ্য । ইচ্ছা তাহার অনায়াসেই মিটে বলিয়াহ সাধনার ধন তাহার অনায়ুত্ত ছিল । এবারে বিধাত কঠিন দুঃখের মধ্যে ফেলিয়। রাজাকে প্রকৃত প্রেমের অধিকারী করিয়াছেন— এখন হইতে র্তাহার নাগরিকবৃত্তি একেবারে বংh । এইরূ& কালিদাস পাপকে হৃদয়ের ভিতর-দিক্ হইতে আপনার অনলে আপনি