পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ সংখ্যা । ] বোগদাদে ভারতবর্ষীয় চিকিৎসক । চাহি তব মুখপানে । ভাবিতেছি মুগ্ধপ্রাণে কি দিব উত্তর ? অ এ আসে দু’নয়ানে, নিৰ্ব্বাকু অন্তর : হে সৌম্য-সুন্দর ! বোগদাদে ভারতবর্ষীয় চিকিৎসক। আর ভারতের প্রাচীন গৌরবের কাহিনী বড় গীত হয় না। এক সময় ছিল, যখন যুরোপীয় বিশিষ্ট পণ্ডিতেরা ভারতের ইতিবৃত্ত-উদ্ধারে সবিশেষ যত্নবান ছিলেন । যুরোপে সেরূপ মহাপ্রাণ লোক ক্রমেই বিরল হইয় পড়িতেছেন। এখন সেখানে সকলে নিজ নিজ জাতির মহাত্ম্যই যথা বা অযথা রূপে কীৰ্ত্তন করিতে সৰ্ব্বদা ব্যস্ত। পরের দিকে চাহিবার বা পরের বিষয় জানিবার অার ইচ্ছাও নাই, প্রয়াস ও নাই । নিঃস্বার্থ গুণগ্ৰাহিতার দিন ফুরাইয়াছে । তথাপি স্বীকার করিতে হইবে যে, পঞ্চtশৎ-বৎসর পুৰ্ব্বে যুরোপীয় নিঃস্বাৰ্থ জ্ঞানপিপাসু পণ্ডিতেরা ভারতের প্রাচীন ইতিহাসের যে সকল তথ্য আবিষ্কার করিয়া গিয়াছেন, তাহাতেই ভারতের প্রাচীন সভ্যতার কীৰ্ত্তি সভ্যজগতে ঘোষিত হইয়া ভারতকে পূজিত এবং আদৃত করিয়াছে । যুরোপীয় পণ্ডিতেরা যাহা করিয়াছেন, যথেষ্টই করিয়াছেন। ভারত চিরদিনই তাহাদের নিকট ঋণী থাকিবে। এখন যে তাহাদের মধ্যে অন্য কেহ এ বিষয়ে যত্নবান্‌ নহেন, তাহা লইয়া আমাদের ক্ষুব্ধ বা বিরক্ত হওয়া কোনক্রমেই যুক্তিযুক্ত নহে। তাহার! আমাদের অনেক করিয়াছেন । তাহার। ধন্য হউন। ‘ কিন্তু দুঃখ হয় নিজেদের জন্য । যে জাতির অভাবনীয় উন্নতির বিষয় ঘোষণা করিবার জন্য এতসংখ্যক বিদেশী ৰিদ্বন্মণ্ডলী প্রাচীন ভারতের ঐতিহাসিক-তত্ত্বআবিষ্কারকে জীবনের ব্রত করিয়া ধন্ত হইয়া গিয়াছেন, সে জাতির আধুনিক শিক্ষিতসম্প্রদারের সে তত্ত্ব আবিষ্কারে তেমন অস্থিা দেখিতে পাওয়া যায় না। দুইচারিজন প্রাতঃস্মরণীয় মহাত্মা ভিন্ন আর সকলেই ইহাতে উদাসীন। শুধু যে উদাসীন, তাঁহ নহে ; স্বীকার করিতে লজ্জা হয়, অনেকেই আবার ভারতের প্রাচীন সভ্যতার সমুহ বিদ্বেষী। বিদেশী যাহাকে সসন্ত্রমে পূজার অর্ঘ্য দিল, স্বদেশী গভীর অনাদরের সহিত তাহাকে দূরে নিক্ষেপ করিল। ভারতের শত্রু আজ ভারতই ।