পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম সংখ্যা । ] অতু্যক্তি। Sty-O জন্মতিথি প্রভৃতি নানাপ্রকার উপলক্ষ্যে রাজার অনুগ্রহ লাভ করিত। এখন ঠিক তাহার উণ্ট হইয়াছে। রাজা জন্মিলেমরিলে নড়িলে-চড়িলে প্রজার কাছে রাজার তরফ হইত্বে চাদার খাত বাহির হয়, রাজা-রায়বাহাদুর প্রভৃতি থেতাবের রাজকীয় নিলামের দুেকান জমিয়া উঠে। আকবর-শাজাহান প্রভৃতি বাদশার নিজেদের কীৰ্ত্তি নিজের রাখয়। গেছেন,—এখনকার দিনে রাজকৰ্ম্মচারীর নালা ছলে নানা কৌশলে প্রজাদের কাছ হইতে বড় বড় কীৰ্ত্তিস্তম্ভ আদায় করিয়৷ লন। এই যে সম্রাটের প্রতিনিধি স্বর্যা: বংশীয় ক্ষত্রিয় রাজাদিগকে সেলাম দিবার জন্ত ডাকিয়াছেন, ইনি নিজের দানের দ্বারায় কোথায় দীঘি খনন করাইয়াছেন, কোথায় পান্থশালা নিৰ্ম্মাণ করিয়াছেন, কোথায় দেশের বিদ্যাশিক্ষা ও শিল্পচর্চাকে আশ্রয় দান করিয়াছেন ? সেকাণে বাদশারা,নবাবর, রাজকৰ্ম্মচারিগণও এই সকল মঙ্গলকায্যের দ্বারা প্রজাদের হৃদয়ের সঙ্গে যোগ রাখিতেন । এখন রাজকৰ্ম্মচারীর অভাব নাই— তাহাঁদের বেতন ও যথেষ্ট মোট বলিয়া জগদ্বিখ্যাত কিন্তু দানে ও সৎকৰ্ম্মে এদেশে র্তাহাদের অস্তিত্বের কোন চিন্তু তাহারা রাখিয়া যান না। বিলাতী দেtকান হইতে র্তাহার। জিনিষপত্র কেনেন, বিলাতী সঙ্গীদের সঙ্গে আমোদ-আহলাদ করেন, બરફ বিলাতের কোণে বসিয়া অস্তিমকাল পর্য্যন্ত র্তাহাদের পেন্সন সম্ভোগ করিয়া থাকেন। ভারতবর্ষে লেডি ডফারিণের নামে ৰে সকল হাসপাতাল খোলা হইল, তাহার টাকা ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় ভারতবর্ষের প্রজারাই জোগাইয়াছে। এ প্রথা খুব ভাল হইতে পারে,”কিন্তু ইহা ভারতবর্ষের প্রথা নহে— সুতরাং এই প্রকারের পূর্বকার্য্যে আমাদের হৃদয় স্পর্শ করে না। না করুকু, তথাপি বিলাতের রাজা বিলাতের প্রথামতই চলিবেন, ইহাতে বলিবার কথা কিছু নাই। কিন্তু কখনো দিশি কখনো বিলিতি হইলে কোনোটাই মানানসই হয় না । বিশেষত আড়ম্বরের বেলায় দিশি দস্তুর এবং খরচপত্রের বেলায় বিলিতি দস্তুর হইলে আমাদের কাছে ভারি অসঙ্গত ঠেকে। আমাদের বিদেশী কর্তারা ঠিক করিয়া বসিয়া আছেন, যে, প্রাচ্যহৃদয় আড়ম্বরেই ভোলে, এইজন্যই ত্রিশকোটি অপদার্থকে अछिङ्कङ করিতে দিল্লির দরবার নামক একটা সুবিপুল অত্যুক্তি বহু চিন্তায়-চেষ্টায় ও হিসাবের বহুতর কশাকশি দ্বারা খাড়। করিয়া তুলিতেছেন-জানেন না যে, প্রাচ্যহৃদয় দানে, দয়াদাক্ষিণ্যে, অবারিত মঙ্গলঅনুষ্ঠানেই ভোলে। আমাদের যে উৎসবসমারোহ, তাহ আহত-অনাহূত-রবাহতের আনন্দ-সমাগম ; তাহাতে ‘এহি এহি দেহি দেহি পীয়তাং ভূজ্যতাং রবের কোথাও বিরাম ও বাধা নাই। তাহ প্রাচ্য আতিশয্যের লক্ষণ হইতে পারে, কিন্তু তাহা খাটি, डाश স্বাভাবিক ;–অfর পুলিসের দ্বারা সীমানাবদ্ধ, সঙীনের দ্বার। কণ্টকিত, সংশয়ের দ্বারা সন্ত্রস্ত, সতর্ক কৃপণতার দ্বারা সঙ্কীর্ণ, দয়াহীন দানহীন যে দরবার—যাহা কেবলমাত্র দস্ত প্রচার, তাহ পাশ্চাত্য অত্যুক্তি—তাহাতে আমাদের হৃদয় পীড়িত ও লাঞ্ছিত হয়---