পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৬৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সার সত্যের আলোচনা। আছে এবং আছি'র অধিকারভেদ । বিগত বারের প্রবন্ধের উপসংহার করিয়াছিলাম এই বলিয়া —

  • উপরে যে-ভাবের আছি এবং আছে’র প্রমাণ দেখানো হইল, তাহা কেবল এখন আছি এবং এখন আছে মাত্র ; কুতরাং তাহা কালদ্বারা পরিচ্ছিন্ন। এতদ্ব্যতীত ঐ দুই পরিচ্ছিন্ন আছি এবং আছে’র সন্ধিস্থানে সমস্ত লইয়া যে এক আছি বিরাজমান, তাহাই সত্য-জগতের প্রবেশদ্বার ।”

এখন দ্রষ্টব্য এই যে, সমস্তের আদি-অন্তমধ্য লইয়া সেই-যে সৰ্ব্বমূলাধার আমি আছি, তিনি সাধনের পুৰ্ব্ব হইতেই সিদ্ধ— সকল বিষয়েই সিদ্ধ—সকল প্রকারেই সিদ্ধ— পরাকাষ্ঠী-সিদ্ধ—স্বতঃসিদ্ধ। পক্ষাস্তরে, কালদ্বারা পরিচ্ছিন্ন এই যে, আমি আছি, ইহাকে ক্রমাগতই সাধন দ্বারা বর্তমান থাকিতে হইতেছে —মুহূর্তে মুহূর্তে বায়ু সেবন করিয়া, প্রহরে প্রহরে অন্নপানীয় সেবন করিয়া, নিরস্তর আলোক এবং উত্তাপ সেবন করিয়া প্রাণধারণ করিতে হইতেছে ; অষ্টপ্রহর চলা-ফেরা বলা-কহ দেখা-শোনা করিয়া মনের পাথেয়-সম্বল যোগাইতে হইতেছে ; বিচার-বিবেচনা এবং যুক্তি-পরিচালনা করিয়া বুদ্ধিকে মার্জিত করিতে হইতেছে। এ আছি সকল বিষয়েই আছে’র নিকটে ঋণী ;–আছের খাইয়া भोश्रु, जैौष्क्लब कैरथ डब निब मैंड़िांत्र, আছে হাত ধরির চলা-ফেরা করে। আছের বলেই আছি—অথচ যেন আপনার বলে আছি, এইরূপ একটা নাট্যাভিনয় চলিতেছে। দৈবাৎ কখনো রঙ্গভূমি হইতে আড়ালে সরিয়া দাড়াইয়া, আমরা যখন আমাদের শরীরের বিসদৃশ সাজসজ্জার প্রতি চক্ষু নিবিষ্ট করি, তখন আমাদের চমক লাগে। ক্ষণপরে আবার যখন অধিকারীর ধমকের চোটে রঙ্গভূমিতে প্রবেশ করিয়া স্বাধীনতার উচ্চ-শিখরে উন্নত-মস্তকে বুক ফুলাইয়া দাড়াই, তখন আমাদের মনে হয় যে, অাছিই গোড়ার কথা—আছে তাহার একটা লেজুড় মাত্র ; পক্ষান্তরে, যখন আমরা দৈবদুৰ্ব্বিপাকে আক্রান্ত হইয়া স্বাধীনতার প্রতি আস্থাহীন হই, তখন আমাদের মনে হয় যে, আছেই গোড়ার কথা, আছি তাহার একটা লেজুড় মাত্র। যাহাই হউক না কেন—আমরা স্বাধীনতায় ভর করি তো ! কিসের জোরে । ভর করি—সেইটিই এখন বিবেচ্য। শুধু কি কেবল গায়ের জোরে স্বাধীনতায় ভর করি ? অথবা আর-কোনো-কিছুর জোরে ? এই প্রশ্নের মীমাংসায় প্রবৃত্ত হইয়া যখন আমরা অস্তরে-বাহিরে চারিদিকে চাহিয়া দেখি, তখন আমরা দুই ক্ষেত্রে আপনার দুইপ্রকার বিপরীত ভাব দেখিতে পাই ; বুদ্ধিক্ষেত্রে স্বাধীনতা দেখিতে পাই এবং ইঞ্জিয়ক্ষেত্রে পরাধীনতা দেখিতে পাই। বুদ্ধি-ক্ষেত্রে আছির স্ফৰ্ত্তি । ফরাসীস তত্ত্ববিৎ দে-কর্তা’র উদীরিত