পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ጫ8 বঙ্গদর্শন। রাজলক্ষ্মী আশাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “भशैन् (कथाम्न ८ोभो ?” * আশা কহিল, “তিনি উপরে।” রাজলক্ষ্মী। তুমি নামিয়া আসিলে যে ? আশা নতমুখে কহিল “র্তাহার খাবার—” রাজলক্ষ্মী। খাবারের আমি ব্যবস্থা করিতেছি বেীমা, তুমি একটু পরিষ্কার হইয়৷ লও । তোমার সেই নুতন ঢাকাই শাড়ীথানা শীঘ্র পরিয়া আমার কাছে এস, আমি তোমার চুল বাধিয়া দিই। শাশুড়ির আদর উপেক্ষা করিতে পারে না, কিন্তু এই সাজসজ্জার প্রস্তাবে আশা মরমে মরিয়া গেল। মৃত্যু ইচ্ছা করিয়া ভীষ্ম যেরূপ স্তন্ধ হইয়া শরবর্ষণ সহ্য করিয়াছিলেন, আশাও সেইরূপ রাজলক্ষ্মীর কৃত সমস্ত প্রসাধন পরমধৈৰ্য্যে সৰ্ব্বাঙ্গে গ্রহণ করিল। সাজ করিয়া আশা অতি ধীরে ধীরে নিঃশব্দপদে সিঁড়ি বাহিয়া উপরে উঠিল । উকি দিয়া দেখিল, মহেন্দ্র ছাদে নাই । অস্তে আস্তে দ্বারের কাছে আসিয়া দেখিল, মহেন্দ্র ঘরেও নাই, তাহার থাবার অভুক্ত পড়িয়া আছে । চাবির অভাবে কাপড়ের আলমারি জোর করিয়া খুলিয়া আবগুক কয়েকখান কাপড় ও ডাক্তারি বই লইয়া মহেন্দ্র চলিয়া গেছে । পরদিন একাদশী ছিল। অসুস্থ ক্লিষ্টদেহ রাজলক্ষ্মী বিছানায় পড়িয়া ছিলেন। বাহিরে ঘন মেঘে ঝড়ের উপক্রম করিয়া আছে । আশা ধীরে ধীরে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিল। আস্তে আস্তে রাজলক্ষ্মীর [ জ্যৈষ্ঠ। পায়ের কাছে বসিয়া তাহার পায়ে হাত দিয়া কহিল, “তোমার দুধ ও ফল আনিয়াছি भ!।, থাবে এস !” করুণমূৰ্ত্তি বধুর এই অনভ্যস্ত সেবার চেষ্টা দেখিয়া রাজলক্ষ্মীর শুষ্ক চক্ষু প্লাবিত হইয়া গেল। তিনি উঠিয়া বসিয়া আশাকে কোলে লইয়। তাছায়, অশ্রুজলসিক্ত কপোল চুম্বন করিলেন। জিজ্ঞাসা করিলেন, “মহীন এখন কি করিতেছে বোমা ?” আশা অত্যন্ত লজ্জিত হইল ;–মৃদুস্বরে কহিল, “তিনি চলিয়া গেছেন।” রাজলক্ষ্মী। কখন চলিয়া গেল, আমি ত জানিতেও পারি নাই । আশা নতশিরে কহিল, রাত্রেই গেছেন।” শুনিবামাত্র রাজলক্ষ্মীর সমস্ত কোমলতা যেন দূর হইয়া গেল-বধূর প্রতি র্তাহার আদরষ্পর্শের মধ্যে আর রসলেশমাত্র রহিল না। আশা একটা নীরব লাঞ্ছনা অনুভব করিয়া নতমুখে আস্তে আস্তে চলিয়া গেল । ( 8२ ) প্রথমরাত্রে বিনোদিনীকে পটলডাঙার বাসায় রাখিয়া মহেন্দ্র যখন তাঙ্কার কাপড় ও বই আনিতে বাড়ী গেল, বিনোদিনী তখন কলিকাতার বিশ্রামবিহীন জনতরঙ্গের কোলাহলে একলা বসিয়া নিজের কথা ভাবিতেছিল। পৃথিবীতে তাহার আশ্রয়স্থান কোনকালেই যথেষ্ট বিস্তীর্ণ ছিল না— তবু তাহার একপাশ তাতিয়া উঠিলে আর একপাশে, ফিরিয়া গুইবার একটুখানি জায়গা ছিল –আজি তাহার নির্ভরস্থল অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ। সে যে নৌকায় চড়িয়া স্রোতে ‘তিনি কাল