পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سbrb আমরা জ্ঞাত নহি ; কিন্তু এ সকল গ্রন্থের রচনায় পাণ্ডিত্যের পরিচয় যথেষ্ট থাকিলেও, যেজন্ত কবি আজ ভুবনবিশ্রুত অমরত। লাভ করিয়াছেন, সে র্তাহার রাধাকৃষ্ণবিষয়িণী সুমধুর পদাবলী। যদি কবির অমৃতনিষ্যন্দিনী লেখনীয় মুখে এই পবিত্র প্রেমমন্দাকিনীর উৎপত্তি না হইত, তাহা হইলে ঐ সকল সংস্কৃতগ্রস্থরাজি তাহাকে আজ পর্য্যন্ত বাচাইয়। রাখিতে সমর্থ হইত কি না, সে বিষয়ে বিশেষ সন্দেহ । এরূপ অমরত্ব, এরূপ সন্মান, এরূপ গৌরব যে তিনি লাভ করিতে পারিতেন না, ইহা বোধ হয় আমরা নিঃসন্দেহেই বলিতে পারি। সে সমস্ত পদাবলীর কবিত্ব ও মাধুর্য্যের আলোচনার স্থান এ প্রবন্ধে হইতে পারে না ; আর মাদৃশ ক্ষুদ্র ব্যক্তিও তাহার উপযুক্ত নহে। প্রসিদ্ধ কবিগণ যে পদাবলীর কবিত্বে মুগ্ধ হইয়। গিয়াছেন, তাহার গুণমাধুর্য্যের সমালোচনা করিতে যাওয়া এ অধম লেখকের পক্ষে বাতুলতামাত্র। অন্তরের ভাববিকাশ বাহিরে এমন সুন্দর নৈপুণ্যের সহিত যিনি করিতে পারেন ; হৃদয়ের প্রত্যেক স্তর উদঘাটিত করিয়া তাহার রহস্য যিনি চিত্রপটের ন্যায় পাঠকবর্গের সমক্ষে উপস্থাপিত করিতে পারেন ; প্রত্যেক অশ্রু, প্রত্যেক হাস্তচ্ছট, প্রত্যেক উৎকণ্ঠা, প্রত্যেক পরিতৃপ্তি একটি একটি আহরণ করিয়া যিনি সাহিত্যের মধুতাণ্ডার পূর্ণ করিয়া রাখিতে পারেন ; তাহার সে স্বৰ্গীয় প্রতিভার সম্যক্ গৌরবরক্ষা সাধারণ ক্ষমতার কৰ্ম্ম নহে। আর এ কথাও বলিতে হয় যে, সেই সব কবিতার বঙ্গদর্শন । জ্যৈষ্ঠ। নিগুঢ় রসমাধুৰ্য, তাহার সহজ-স্বচ্ছ পবিতা, তাহার অন্তর্নিহিত মহাভাব* উপভোগ করাও সাধারণ পাঠকের সাধ্যাতীত। সুতরাং বাহত বিদ্যাপতির কবিতা দুইএকুবার পড়িয়াই যাহারা তাহ সম্পূর্ণ গুয়িত্ত করিয়া ছেন মনে করিয়া তাহার' সমালোচনায় অগ্রসর হন, তাহাদিগেরও সেটা অতিসাহসিকতা এবং অনেকটা ধৃষ্টতার পরিচয় भांद्ध । কবি রাধাকৃষ্ণপদাবলী ব্যতীত মৈথিলভাষায় শৈব পদাবলীও রচনা করিয়াছিলেন, তাহাও মাধুর্য্যে বড় কম নহে। মৈথিল পণ্ডিত মহাশয় একটি পদ গান করিয়া আমাকে শুনাইয়াছিলেন, কিন্তু তাহার বিন্দুবিসর্গও আমার মনে নাই । এই শৈব পদাবলী বঙ্গে প্রচলিত নাই, তবে মিথিলায় ইহার বিশেষ প্রচলন আছে। কবি শেষবয়সে নাকি এই শৈব পদাবলী গান করিতে বড় ভালবাসিতেন। কথিত আছে যে, কবি যখন ভাবাবেশে বিভোর হইয়৷ এই সকল পদ ভক্তিরসোচ্ছ,াসের সহিত গান করিতেন, তখন স্বয়ং মহাদেব ছদ্মবেশে ভক্তের এই কীৰ্ত্তন শুনিতে আসিতেন এই প্রবাদ হইতেই উহার মাধুর্য্যের সরল-মুন্দর স্বাভাবিক বিকাশ উপলব্ধিগোচর হইবে। কবি বিদ্যাপতি এবং রাণী লছিমা সংক্রান্ত একটি কুৎসিত প্রবাদ সাধারণ্যে প্রচলিত আছে। মৈথিল পণ্ডিত মহাশয় বলেন, উহ একান্ত অশ্রদ্ধেয় ; ‘ কবি বড় আদিরসপ্রিয় ছিলেন, আর লছিমাদেবীর কার্য্যাধ্যক্ষত৷ করিয়াছিলেন,তাহাতেই বোধ হয় এই কলঙ্ক - কথার উৎপত্তি হইয়া থাকিবে। বিশেষত