পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৩৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\O(te বঙ্গদর্শন । [ অগ্রহায়ণ। হাসের মর্য্যাদাবৃদ্ধি করায়, নানা ঐতিহাসিক প্রবন্ধ সঙ্কলিত হইবার সূত্রপাত হইয়াছে। এইরূপ দুই একটি ক্ষুদ্র প্রবন্ধে বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ের তথ্যানুসন্ধানের পরিচয় পাইয়া, তাহার লেখনীপ্রস্তুত নবাবী আমলের স্ববৃহৎ ইতিহাস পাঠ করিবার জন্ত অনেকেরই আগ্রহ জন্মিয়াছিল ৷ -এতদিনে সেই চিরায়মাণ ইতিহাস বহু বাধাবিঘ্ন অতিক্রম করিয়া মুদ্রাযন্ত্রের লৌহকারাগার হইতে বিনির্গত হইল । ইহা বঙ্গসাহিত্যের পক্ষে আনন্দের সংবাদ । বাঙ্গালার সুবিস্তৃত ইতিহাস প্রচারের ইহাই প্রথম উদ্যম। প্রথম বলিয়া উৎসাহলাভের যোগ্য ;—সৰ্ব্বতোভাবে স্নেহের চক্ষে দর্শনীয়। ক্রমে যোগ্যতর ব্যক্তি ঐতিহাসিক তথ্যানুসন্ধানে নিযুক্ত হইবেন ; সুতরাং কালে অবশুই বাঙ্গালার ইতিহাসের পক্ষপাতশূন্য সত্যসিদ্ধান্ত লোকসমাজে প্রতিষ্ঠালাভ করিবে। এখন মতামত উদ্ধত করিয়া নবপ্রকাশিত পুস্তকের কোথায় কি ক্রটি ও অসঙ্গীত আছে, তাহার বিস্তৃত সমালোচনা লিপিবদ্ধ করা অনাবশ্যক । বর্তমান চেষ্টা যে সৰ্ব্বাংশে সফল হইতে পারে না, তাহা জানিরাও, সে চেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা না করিয়া থাকা যার না। - ইতিহাস লিখিবার সময় হইলেও, বাঙালীর তদুপযোগী সামর্থ্যলাভে এখনও বিলম্ব আছে । এখনও কিছুকাল বিবরণসংগ্রহের ও মতামতের সমালোচনার প্রয়োজন আছে। এ সময়ে তাড়াতাড়ি ইতিহাস নাম দিয়া স্ববৃহৎ গ্রন্থ প্রকাশ করা সম্পূর্ণ নিরাপদ বলিয়া বোধ হয় না। বন্দ্যোপাধ্যায় মহা aায়ের ইতিহাস পড়িয়া বোধ হইতেছে,— এখনও অনেক পুরাতন বংশের অনুরোধউপরোধ ইতিহাসলেখকের স্বাধীন মতামত প্রকাশে বাধা প্রদান করে ; এখনও বন্ধুবান্ধবের মুখের দিকে চাহিয়া অনেক সরল সিদ্ধান্তকে নিতান্ত জটিল করিয়া তুলিতে হয় । ইহাতে ইতিহাসের মর্য্যাদা নষ্ট হইবার কথা । সঙ্কলিত বৃত্তান্ত বিচার করির যাহা বুঝা উচিত, তাহা না বুঝিয়া,—যাহা বলা উচিত, তাহাতে “হত ইতি গঞ্জ;” করিয়া,—যাহ। লিখা উচিত নহে, কষ্টকল্পিত কৈফিয়ৎ সাজাইয়া তাহাই সংস্থাপন করিবার আয়োজনে ইতিহাস রচনা করিলে, কালে তিরস্কৃত হইবার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়কে তজ্জন্ত কেহ তিরস্কার করিতে পারিবেন না । তিনি বহরমপুরের বিদ্যালয়ে শিশুশিক্ষায় ব্যাপৃত থাকিয়া, মুরশিদাবাদী স্নেহমমতায় বেষ্টিত হইয়া, বন্ধুবান্ধবের প্ররোচনায় নিয়ত ভারাক্রান্ত কলেবরে নানা অসুবিধায়, পতিত হইয়া ও যে পরিমাণে স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশের চেষ্টা করিয়াছেন, বৰ্ত্তমানে তাহা লইয়াই পরিতৃপ্ত হওয়া উচিত । নচেৎ এরূপ সুবৃহৎ গ্রন্থ আদেী সঙ্কলিত হইত না ; হইলেও, উৎসাহলাভের অভাবে প্রকাশিত হইত কি না, সন্দেহ ! সেকালের কোন গ্রন্থেই ধারাবাহিক ইতিহাস নাই ; কোন গ্ৰন্থই সম্পূর্ণরূপে পক্ষপাতশূন্য বলিয়া বোধ হয় না । অথচ তজ্জন্য কোন গ্ৰন্থকে একেবায়ে উপেক্ষা করিবারও .”উপায় নাই । ইহাতেও বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ের চেষ্টা কিযুৎপরিমাণে স্বেচ্ছামতে চালিত না হইয়া,