পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৪৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবম-সংখ্যা । ] বৈরাগ্যের কাব্য বলা যায়, তেমনি কালিদাসকেও একই কালে সৌন্দৰ্য্যভোগের এবং ভোগবিরতির কবি বলা যাইতে পারে। র্তাহার কাব্য সৌন্দর্য্যবিলাসেই শেষ হইয়া যায় নাই—তাহাকে অতিক্রম করিয়া তবে কবি ক্ষান্ত হইয়াছেন । কালিদাস কোথায় থামিরাছেন এবং কোথায় থামেন নাই, সেইটে এখনকার আদশের সহিত তুলনা করিয়া আলোচনা করিবার বিবয়। পথের কোন একট। ংশে থামিয়া তাহাকে বিচার করা যায় না, র্তাহার গমাস্থান কোথায়, তাহ দেখিতে হইবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ধীবরের হাত চাইতে আংটি পাইয়া যেখানে জুয্যন্ত আপনার ভ্রম বুঝিতে পারিয়াছেন, সেইখানে ব্যর্থ পরিতাপের মধ্যে যুরোপীয় কবি শকুন্তলানাটকের যবনিক ফেলিতেন । শেয অঙ্কে স্বৰ্গ হইতে ফিরিবার পথে দৈবক্রমে ছয্যন্তেস্ক সহিত শকুন্তলার যে মিলন হইয়াছে, তাহা যুরোপের নাট্যরীতি অনুসারে অবশুঘটনীয় নহে। কারণ, শকুন্তলানাটকের আরস্তে যে বীজ বপন বিচ্ছেদই তাহার চরম ফল । তাহার পরেও দুষ স্ত-শকুন্তলার পুনমিলন বাহ উপারে দৈবাম্বুগ্রহে ঘটাইয়। তুলিতে হইয়াছে। নাটকের অন্তর্গত কোন ঘটনাস্থত্রে, দুৰ্য্যস্তশকুন্তলার কোন ব্যবহারে এমিলন ঘটবার কোন পথ ছিল না । তেমনি, এখনকার কবি কুমারগন্তবে হতমনোরথ পাৰ্ব্ব তীর দুঃখ ও লজ্জার মধ্যে কাব্য শেষ করিতেন। অকালবসন্তে রক্তবর্ণ অশোক श्हेग्राप्झ्, यहे কুমারসস্তব ও শকুন্তলা । 8ミQ কুঞ্জে মদনদাহনের দীপ্ত দেবরোযাগ্লিচ্ছটায় নতমুখী লজ্জারুণ গিরিরাজকন্ত। তাহার সমস্ত ব্যর্থ পুষ্পাভরণ বহিয়া পাঠকের ব্যথিত হৃদরের করুণ রক্তপদ্মের উপর আসিয়া দাড়াইতেন,—অকৃতাৰ্থ প্রেমের বেদন র্তাহাকে চিরকালের জন্য ঘেরিয়া থাকিত । এখনকার সমালোচকের মতে এইখানেই কাব্যের উজ্জ্বলতম স্থৰ্য্যাস্ত, তাহার পরে বিবাহের রাত্রি অত্যন্ত বর্ণচ্ছটাহীন । বিবাহ প্রাত্যহিক সংসারের ভূমিকা ; তাহা নিয়মবদ্ধ সমাজের অঙ্গ। বিবাহ এমন একটি পথ নির্দেশ করে, যtহার একমাত্র সরল লক্ষ্য, যে পথে প্রবল প্রবৃত্তি দস্থ্যতা করিতে প্রবল নিষেধ প্রাপ্ত হয় । সেইজন্ত এখনকার কবিরা বিবাহব্যাপারকে তাহাদের কাব্যে বড় করিয়া দেখাইতে চান না। যে প্রেম উদামবেগে নরনারীকে তাহার চারিদিকের সহস্ৰ বন্ধন হইতে মুক্ত করিষা দেয়, তাহাদিগকে সংসারের চিরকালের অভ্যস্ত পথ হইতে বাহির করিয়া লইয়া যায়, --যে প্রেমের বলে নরনারী মনে করে, তাহারা আপনাতেই আপনারা সম্পূর্ণ, মনে করে যে, যদি সমস্ত সংসার বিমুখ হয়, তবু তাহাদের ভয় নাই—অভাব নাই, যে প্রেমের উত্তেজনায় তাহারা ঘূর্ণবেগে বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত গ্রহের মত তাহাদের চারিদিক্ হইতে স্বতন্ত্র হইয়া নিজেদের মধ্যেই নিবিড় হইয়া উঠে, সেই প্রেমই প্রধানরূপে কাব্যের বিবয়। কালিদাস অনাহূত প্রেমের সেই উন্মত্ত সৌন্দর্য্যকে উপেক্ষা করেন নাই—তাহাকে তরুণলাবণ্যের উজ্জ্বল রঙেই অ'কিয়