পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হিন্দুজাতির একনিষ্ঠতা । কর্তাকে দেখিতে পাইতেন। ঘোরকৃষ্ণজলদজালের আবির্ভাবের কারণ অনুসন্ধান করিলে যদি বলা যায় যে তপনতপ্ত-জলকণার গাৱে এই পদোবাহের জন্ম হইয়াছে তাছহইলে মীমাংসার কোন ব্যবস্থা হয় না। প্রশ্নের তাৎপর্য্য এই যাহা ছিল না তাহ কি রূপে হইল। মেঘ ছিলনা মেঘ হইয়াছে, মেঘের উৎপাদক পূৰ্ব্ববৰ্ত্তা জড়প্রক্রিয়া ছিল না হইয়াছিল ; এইরূপে যতই আমর। পশ্চাদ্ভাগে উৰ্দ্ধশ্বাসে দৌড়াইয়া যাই না কেন অসতের হাত হইতে এড়াইতে পারিবন । যদি কোটি যোঁজন ভ্রমণ করি বা কোটি যুগকে অতিক্রম করি তথাপি নাস্তিয় রাজ্য অমুল্লঙ্ঘনীয় । যাহাকে জিজ্ঞাসা করি সেই বলে আমি ছিলাম না হইয়াছি, আমি আদিতে অসৎ অস্তেতে অসৎ কেবল মধ্যেতে সদ্ধপে প্রতিভাত । কাৰ্য্যকারণশৃঙ্খল অবলম্বন করিয়া চলিলে এক মহতী অব্যবস্থার মধ্যে হারাইয়। যাইতে হয়। অন্ধকে চলিতে দেখিলে চক্ষুষ্মান চালকের অনুসন্ধান করিতে স্বভাবতঃ প্রবৃত্তি হয় । কিন্তু অন্ধের সমষ্টিতে চক্ষুষ্মতার উৎপত্তি হয় না । অসৎ, জঙ্গম, অস্থাবর, নামরূপ-সমন্বিত প্রপঞ্চের অন্তরেই সৎ, স্থির, স্থাবর, অনাম, অরূপ সীরতত্ত্ব বাস করে । ঋষিয়া ক্রিয়া ও ক্রিয়াফলের অপেক্ষ না করিয়া দৃপ্ত বস্তুর গর্ভে একৰারেই অদৃগু হিরণ্যগৰ্ভকে দেখিতেন। এই দৃষ্টিকে একনিষ্ঠতা বলে। আর্য্য একনিষ্ঠতার অার একটি গভীরতর লক্ষণ আছে। . অগ্নির দেবতা জমিনামে কেন অভিহিত হইল বায়ু বরণ তপন দিদেবতা কর্তা לל হইয়াও কাৰ্য্যের নামে সংজ্ঞিত কেন হইল ? কাৰ্য্যেরও যে নাম কৰ্ত্তারও সেই নাম। এই সমনামত দেখিয়া অনেকে মনে করেন আৰ্যখষির প্রকৃতির উপাসক ছিলেন। কিন্তু তাহারা প্রকৃতিপূজক ছিলেন না, প্রকৃতি ও পুরুষের অভিন্নতার দ্রষ্টা ছিলেন । তজন্তই তাহাদিগকে ঋষি (দৃশি ) বলা হইত। কর্তা কোন অপূৰ্ব্ব মায়াশক্তি বলে কাৰ্য্যরূপে প্রতিভাত হয়, কাৰ্য্যকারণে ব্যবহারতঃ ভেদ থাকিলেও পরমার্থতঃ তাছার অভিন্ন—এই অভেদ তত্ত্ব সমগ্ৰ বেদ গাথায় গীত হইয়াছে। কৰ্ত্ত এবং কাৰ্য্যের অভেদভাব, বিম্বরূপী স্রষ্টার প্রতিবিম্বরূপী স্বষ্টিতে প্রতিভাতি, অদ্বিতীরের মায়িক বহুত্ব, বৈদিক ঋষিদিগের একমুখীন অস্তদৃষ্টিকে পরিপুষ্ট করিয়াছিল। এই একনিষ্ঠ দর্শন ক্রমে ক্রমে স্ফৰ্ত্তি লাভ করিয়া বেদান্তের শুদ্ধাদ্বৈতবাদে পরাকাষ্ঠা লাভ করিয়াছে।’ সাংখ্য দর্শনে দেখা যায় যে সমস্ত ভূততত্ব এক ত্রিগুণাত্মিক প্রকৃতিতে পর্য্যবসিত হইয়াছে। হিন্দু চিস্ত অগ্রসর হইতে হইতে এই প্রকৃতিবাদের একত্বে উপস্থিত হইয়াছিল । কিন্তু ঋষিরা যে অভেদ দেখিয়াছিলেন তাহ সাংখ্যে পূর্ণতা লাভ করে নাই। সাংখ্যের একত্ব দ্বৈতান্ধকারাবৃত। প্রকৃতি এক পুরুষাতিরিক্ত বস্তু, আপন!তে আপনি অবস্থিত, অস্তিত্বের জন্ত সদরূপী পুরুষের অপেক্ষ করে না। সমগ্রভূতপ্রপঞ্চকে যত্ত্বরঞ্জস্তমোময়ী প্রকৃতিতে একীভূত করা একনিষ্ঠার ফল বটে, কিন্তু দ্বৈতীপত্তি ইহাতে মেটে না । পুরুষ ভিন্ন, প্রকৃতি ভিন্ন, ♛हे वश्र হিন্দুজাতিকে সম্বই