পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
২২৩

তাঁহার বিবেচনায় ইহাই “প্রায়শ্চিত্তীয়তে” এই পদের অর্থ; “প্রায়শ্চিত্তার্হ দোষভাগী হয়” এরূপ অর্থ অভিপ্রেত হইলে, মহর্ষি “প্রায়শ্চিত্তং সমাচরেং” “প্রায়শ্চিত্ত করিবেক” এরূপ লিখিতেন। শুনিতে পাই, তর্কবাচস্পতি মহাশয়ের ন্যায়, “কবিরত্ন মহাশয়েরও ব্যাকরণ শাস্ত্রে বিলক্ষণ বিদ্যা আছে; এজন্য, তাঁহার ন্যায়, ইনিও, ব্যাকরণের সহায়তা লইয়া, ধর্ম্মশাস্ত্রের গ্রীবাভঙ্গে প্রবৃত্ত হইয়াছেন। প্রথমতঃ, প্রায়শ্চিত্তার্হ দোষভাগী পুরুষের ন্যায় আচরণ করে, এ কথা বলিলে দোষশ্রুতি সিদ্ধ হয় না, এরূপ নহে। যেরূপ কর্ম্ম করিলে প্রায়শ্চিত্ত করিতে হয়, যে ব্যক্তি সেরূপ কর্ম্ম করে, তাহাকে প্রায়শ্চিত্তার্হ দোষভাগী বলে; কোনও ব্যক্তি এরূপ কর্ম্ম করিয়াছে যে তজ্জন্য সে প্রায়শ্চিত্তার্হ দেশষভাগীর তুল্য হইয়াছে; এরূপ নির্দ্দেশ করিলে, সে ব্যক্তির পক্ষে দোষশ্রুতি সিদ্ধ হয় না, বোধ করি, তাহা কবিরত্ব মহাশয় ভিন্ন অন্যের বুদ্ধিপথে আসিতে পারে না। দ্বিতীয়তঃ, প্রচলিত ব্যাকরণের নিয়মানুবর্ত্তী হইয়া, বিবেচনা করিতে গেলে, যদিই “প্রায়শ্চিত্তীয়তে” এই পদ দ্বারা “প্রায়শ্চিত্তার্হ দোষভাগীর তুল্য” এরূপ অর্থই প্রতিপন্ন হয় হউক; কিন্তু ঋষিরা, সচরাচর, “প্রায়শ্চিত্তার্হ দোষভাগী হয়” এই অর্থেই এই পদের প্রয়োগ করিয়া গিরাছেন; যথা,

১। অকুর্ব্বন্ বিহিতং কর্ম্ম নিন্দিতঞ্চ সমাচরন্।

 প্রসজংশ্চেন্দ্রিয়ার্থেষু প্রায়শ্চিত্তীয়তে নরঃ॥ ১১।৪৪। (২১)[১]

 বিহিত কর্ম্ম ত্যাগ ও নিষিদ্ধ কর্মের অনুষ্ঠান করিলে, এবং ইন্দ্রিয় সেবায় অতিশয় আসক্ত হইলে, মনুষ্য “প্রায়শ্চিতীয়তে"।

এ স্থলে কবিরত্ন মহাশয় কি “প্রায়শ্চিত্তীয়তে” এই পদের “প্রায়শ্চিত্তার্হ দোযভাগী হয়” এরূপ অর্থ বলিবেন না। যে ব্যক্তি বিহিত

  1. (২১)মনুসংহিতা