পাতা:বাংলা লিরিকের গোড়ার কথা.pdf/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলা লিরিকের গোড়ার কথা so সবস্থদ্ধ পঞ্চাশটি গান নিয়ে এই সংগ্রহ-গ্ৰন্থ সম্পূর্ণ। কিন্তু শাস্ত্রীমশায় আড়াইট পদের সন্ধান পান নি। পরে, শ্ৰীযুক্ত প্রবোধচন্দ্র বাগচী চর্যাগীতির এক তিববতী অনুবাদ থেকে শেষ তিনটি পদ উদ্ধার করেন ; এবং শাস্ত্রীমশায়ের পুথির অনেক অশুদ্ধ পাঠকে শুদ্ধ করে দেন । শাস্ত্রীমশায়ের পুথিতে গানগুলোর এক সংস্কৃত টীকাও দেওয়া আছে ; কিন্তু সে-টাকা আসলের চেয়ে এত বেশি ভারী যে, তার আবার এক সরল ভাষা না দিলে তার মানে বোঝা মুশকিল। কথাতেই আছে, বাশের চেয়ে কঞ্চি দড় । সহজ জিনিসকে কঠিন করা তো টীকাভাষ্যের চিরকালের রীতি । লিরিকের একটা মস্ত গুণ এই যে, সম্পদে-বিপদে সুখে-দুঃখে তা মনে মনে গুনগুনিয়ে কিংবা মুখে মুখে আউড়িয়ে অনেক সাস্তুনা পাওয়া যায়। আর সেইসঙ্গে এই মর্তলোকেই এক স্বৰ্গলোক রচনা করে দু দণ্ড পার্থিব ব্যাপারের হাত এড়ানো যায়। কিন্তু চর্যাগানগুলো নিয়ে ঠিক তা করার জো নেই । কারণ, সচরাচর এগুলো ছন্দে উচ্চারণ করা যেমনি শক্ত, টীকাভাষ্য করে বুঝিয়ে না দিলে এর মানে বের করাও তেমনি দুরূহ। কিন্তু এ-সত্ত্বেও একটু ধৈর্য ধরে চর্যাগান নিয়ে চর্চা করলে তার মধ্যে লিরিকের স্বাদ যথেষ্ট পাওয়া যায়। তবে সেটা হয়তো অনেকের কাছে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাবার মতো একটা বেরসিক কাণ্ড বলে মনে হতেও পারে । চর্যাগানের দু-চারটে পদের নমুনা দিই। আধুনিক বাংলা ভাষায় কিছু কিছু ব্যাখ্যাও দেওয়া গেল। কিন্তু সে-ব্যাখ্যা বোধ হয় অনেকেরই মনঃপূত হবে না। কিন্তু উপায় নেই । গানগুলি নামে সহজ হলেও তাদের ভাব বের করতে হলে বিস্তর মাথা খোড়াখুড়ি করতে হয়। তবে অক্ষরে অক্ষরে প্রতি শব্দের অর্থ দিয়ে ব্যাখ্যা করতে গেলেও তো অনর্থ