পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৪৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(5ינ5י8 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ চাঁদপুরে পাকবাহিনীর হত্যা লীলার পূর্বদেশ ১৩ ফেব্রুয়রী, ১৯৭২ আরো কাহিনী চাঁদপুরে পাকবাহিনী ও তাদের হত্যালীলার চাঞ্চল্যকর কাহিনী পূর্বদেশ সংবাদদাতা ৷ কুমিল্লা, ১০ই ফেব্রুয়ারী। -কুমিল্লা জেলার নদীবন্দর চাঁদপুর ও তার আশপাশের বর্বর বাহিনীর নৃশংসতার বহু তথ্য ধীরে ধীরে প্রকাশ পাচ্ছে। কেবল মাত্র চাঁদপুরেই দখলদার বাহিনী ও তাদের সহযোগী রাজাকার, মোজাহিদ বাহিনীর হায়েনাগুলো প্রায় ৫ হাজার নিরীহ বাঙ্গালীকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিয়েছে বলে আশংকা করা হচ্ছে। উপরন্তু এই ছোট বন্দর শহরটিতে আল-বদর দখলদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের অনতিপূর্বে (৭-১২৭১ইং) সুপরিকল্পিত উপায়ে বহু বুদ্ধিজীবী, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হত্যা করার চাঞ্চল্যকর খবর পাওয়া যাচ্ছে। জনাব মিজানুর রহমান চৌধুরীর বড় ভাই ডাঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী এক সংবাদদাতাকে বলেন, চাঁদপুর পুরান বাজারস্থিত নুরীয়া হাইস্কুলে আল-বদর বাহিনী ক্যাম্প স্থাপন করে তাদের প্রধান-এর নির্দেশে অত্র এলাকায় এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। লুটতরাজ ও নির্বিচারে হত্যা তখন নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়ায় বলে তিনি জানান। একদিন আল-বদর বাহিনীর কয়েকটি হায়েনা গ্রাম অঞ্চল থেকে আগত চারজন নিরীহ বাঙ্গালীকে অচেনার অজুহাতে প্রকাশ্য বাজারে গুলি করে হত্যা করে। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পেলেই তারা ধরে নিয়ে যেত এবং এদের কাউকেই ফিরতে দেখা যায়নি বলে জানা যায়। একদিন তার অনুপস্থিতিতে তার ছেলে বাবুলকেও বদর বাহিনীর কয়েকটি হায়েনা বড় ষ্টেশন ও তাদের নির্যাতন কক্ষে নিয়ে আরো প্রায় ২০-২৫টি ছেলের সাথে অকথ্য নির্যাতন করে। কিন্তু তারপর সে প্রায় এক মাস আচল হয়ে পড়েছিল। তার সঙ্গের হতভাগ্যদের কি হয়েছিল তা তিনি বলতে পারেন নি। দখলদার বাহিনীর অত্মসমর্পণের পূর্ব মুহুর্তে ফ্যাসিষ্ট আল-বদর বাহিনী সুপরিকল্পিত উপায়ে বুদ্ধিজীবী নিধন শুরু করে। চাঁদপুর টেলিফোনের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার জনাব সায়েদুল হক আল-বদর বাহিনীর তৎপরতার কথা বলতে গিয়ে তারা কি করে তার দু’জন কর্মীকে হত্যা করেছে এবং তিনি কেমন করে তাদের মৃত্যু ফাঁদ থেকে বেঁচে গেছেন তা এই সাংবাদদাতাকে জনান। ৭ই ডিসেম্বর তার একজন সুপারভাইজার জনাব আব্দুল খালেক ও অপারেটর জনাব মোরশেদুর রহমান শহরের উপকণ্ঠের এক গ্রাম থেকে ফেরার পথে বদর-বাহিনী তাদের ধরে নিয়ে যায়। এর নূরয়া হাইস্কুলস্থিত ক্যাম্পে আটকিয়ে রাখে। উক্ত খবর পাওয়ার পর তিনি বদর বাহিনীর সাথে টেলিফোনে যোগযোগ করলে উল্লিখিত ব্যক্তিদেরকে সকালে মুক্তি দেয়া হবে বলে আশ্বাস দেয়া হয়। সান্ধ্য আইন থাকায় নিজে গিয়ে তাদের খবর নেয়া নিরাপদ কিংবা সম্ভবও ছিল না। সকাল বেলা এক বেনামী টেলিফোন থেকে জানতে পেরে তাদের খোঁজ করতে গিয়ে নুরীয়া স্কুলের নিকটবর্তী রাস্তায় তাদের মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সেদিনই কিছু একটা বিপদের আশংকা মনে জাগলে জনাব সায়েদুল হক শহর ছেড়ে