পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২২
বিদ্যাসাগর।

চনের অব্যর্থতা স্বীকার করিতে কখন কখন দ্বিধা হয় না কি? বংশ-পরম্পরাগত বৃত্তি-সাধনায় সেরূপ দ্বৈধ ভাব থাকিবার কথা নয়। যাঁহারা এ কথা মানিবেন, তাঁহারা হিন্দুর জাতিভেদের গৌরব ঘোষণা করিবেন।

 বিদ্যাসাগর মহাশয় অঙ্ক শাস্ত্র পরিত্যাগ করিয়া আনন্দকৃষ্ণ বাবুর নিকট সেক্সপীয়র পড়িবার জন্য প্রায়ই তিনি শোভাবাজার রাজবাটীতে যাতায়াত করিতেন। এই সময় তিনি রাজা রাধাকান্ত দেব বাহাদুরের নিকট পরিচিত হন। এক দিন মধ্যাহ্নে রাজা বাহাদুর আহারান্তে মুখপ্রক্ষালন করিতেছিলেন, সেই সময় বিদ্যাসাগর মহাশয় রাজবাটীতে আনন্দকৃষ্ণ বাবুর নিকট যাইতেছিলেন। হঠাৎ তাঁহার প্রতি রাজা বাহাদুরের দৃষ্টি পতিত হয়। তিনি পার্শ্বস্থ একটা আত্মীয়কে জিজ্ঞাসা করেন,—“ঐ যে হৃষ্টপুষ্ট তেজঃপুঞ্জময় ব্রাহ্মণ-যুবকটী যাইতেছেন, উনি কে? উইার মুখে যেন প্রতিভার প্রভা ফাটিয়া পড়িতেছে। উহাকে ডাকি আন তো “আত্মীয়টী তখনই বিদ্যাসাগরকে রাজা-বাহাদুরের নিকটে ডাকিয়া লইয়া যান। রাজা-বাহাদুর তখন তাঁহার নিকট তাঁহার আসুপূর্ব্বিক পরিচয় গ্রহণ করেন। তিনি বিদ্যাসাগরের কথা-বার্ত্তায় যথেষ্ট সত্তোষ লাভ করিয়াছিলেন এবং তাঁহাকে বুদ্ধিমান বলিয়াও বুঝিয়াছিলেন। তখন তিনি,—“বিদ্যাসাগর” উপাধিধারী একটা ব্রাহ্মণযুবক মাত্র। সে “বিদ্যাসাগরে” বিশ্ব বিশ্রুতি সংঘটিত হয় নাই। তখনকার প্লাঙ্গাসাগর, এখনকার বিদ্যাসাগর ছিলেন না। এই শোভাবাজার-রাজবাটীতে অক্ষয়কুমার দত্তের সহিত বিদ্যাসাগরের আলাপ পরিচয় হয়। তখন অক্ষয় বাবু তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার