পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জামাতার মৃত্যু।
৫১৫

অন্য দর্শন পড়িয়াছে, বেশ করিয়াছে, এখন বাড়ীতে বসিয়া উপবাস করিবে, তার আর ভাবনা কি?

 ১২৭৯ সালের ২৩শে মাঘ বা ১৮৭৩ খৃষ্টাব্দের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি, বারাণসী ধামে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জ্যেষ্ঠ জামাতা গোপালচন্দ্র সমাজপতি ওলাউঠা রোগে প্রাণত্যাগ করেন। ইনি বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ভাগিনেয় বেণীমাধব মুখোপাধ্যায়ের সহিত কাশী গিয়াছিলেন। ইতিপূর্ব্বে ইঁহার স্বাস্থ্যভঙ্গ হইয়াছিল। জামাতার মৃত্যু-সংবাদ পাইয়া বিদ্যাসাগর মহাশয় শোক-সন্তাপে অধীর হইয়া পড়েন; কিন্তু শোক-কাতরা কন্যাকে সান্ত্বনা করিবার জন্য তিনি পাষাণ চাপে দারুণ শোকানল চাপিয়া রাখিয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় স্বীয় জামাতা গোপালচন্দ্রকে পুত্রাধিক ভালবাসিতেন। জামাতা যেমন সুপুরুষ, সুশ্রী ও বিদ্বান্ ছিলেন, তেমনই অমায়িক ও বিনয়ী ছিলেন। কবিতা-রচনায় তাঁহার শক্তি ও আসক্তি ছিল। বিধবা কন্যার মুখপানে তাকাইলে বিদ্যাসাগরের বুক ফাটিয়া যাইত। কন্যা একাদশী করিতেন। তিনিও একাদশীর দিন অন্ন-জল গ্রহণ করিতেন না। দুই বেলার আহার পরিত্যাগ করিয়াছিলেন। কন্যার অনুরোধে কিন্তু কিয়দ্দিন পরে তাঁহাকে এ কঠোরতা পরিত্যাগ করিতে হয়।

 কন্যাকে তিনি গৃহের সর্ব্বময়ী করিয়াছিলেন। কন্যাও কায়মনো-বাক্যে পিতৃ-সংসারের শ্রীবৃদ্ধিসাধনে যত্নবতী ছিলেন। তাঁহার কর্ম্মপটুতায় এবং স্নেহসুজনতায় পরিবারবর্গের সকলেই সন্তোষ লাভ করিত। বিধবা কন্যা বিদ্যাসাগরের গৃহে অন্নপূর্ণারূপে বিরাজমানা। তাঁর পুত্র দুইটী বিদ্যাসাগরের স্নেহ বাৎসল্যে এবং করুণাশ্রয়ে প্রতিপালিত হইয়াছিলেন। পিতার আদরযত্নে এবং