পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৩৮
বিদ্যাসাগর।

বাবুর।” হাকিম আসিলে, সাঁওতালগণ উক্তরূপ কথা বলিল। কিন্তু হাকিম দুই একবার ভাল করিয়া জিজ্ঞাসা করাতে তাহারা কাঁদিয়া ফেলিল। তাহা আর সত্য না বলিয়া থাকিতে পারিল না। বিদ্যাসাগর মহাশয়, এই ব্যাপার স্বচক্ষে দেখিয়াছিলেন। সেই দিন হইতে সাঁওতালদের প্রতি তাঁহার অটল প্রীতি। তিনি এক দিন কবি হরিশ্চন্দ্রকে বলিয়াছিলেন,—“পূর্ব্বে বড় মানুষদের সহিত আলাপ হইলে, বড় আনন্দ হইত, কিন্তু এখন তাঁহাদের সহিত আলাপ করিতে প্রবৃত্তি হয় না। সাঁওতালদের সহিত আলাপে আমার প্রীতি। তাহারা গালি দিলেও আমার তৃপ্তি। তাহারা অসভ্য বটে, কিন্তু সরল ও সত্যবাদী।”[১]

 ১২৮০ সালের ১৪ই ফাল্গুন বা ১৮৭৪ খৃষ্টাব্দের ২৫শে ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের অন্যতম জজ দ্বারকানাথ মিত্র ইহলোক পরিত্যাগ করেন। দ্বারকানাথের মৃত্যুতে বিদ্যাসাগর মহাশয় শোকে অভিভূত হইয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় বহু কার্য্যে দ্বারকানাথের পরামর্শ লইতেন। দ্বারকানাথও বিদ্যাসাগরের মত না লইয়া কোন কঠিন বিষয়ের সহসা মীমাংসা করিতেন না। উভয়েই উভয়েরই সহায় ও পৃষ্ঠপোষক। পতিতা রমণীর বিষয়াধিকারের মোকদ্দমা সম্বন্ধে উভয়ের মতভেদমাত্র লক্ষিত হইয়াছিল; নতুবা অন্য কোন বিষয়ে কোন মতভেদ দেখা যায় নাই। দ্বারকানাথের মৃত্যুর পূর্ব্বে হাইকোর্টে উক্ত মোকদ্দমা উপস্থিত হয়। মোকদ্দমার পুর্ব্বে বিদ্যাসাগর, মহামহোপাধ্যায় মহেশচন্দ্র ন্যায়রত্ন এবং ৺ভরতচন্দ্র শিরোমণি মহাশয়ের মত গৃহীত হয়। বিচার্য্য এই, হিন্দু-রমণী স্বামি বিয়োগান্তা স্বামি-পরিত্যক্ত বিষয়ের একবার উত্তরা-


  1. হরিশ্চন্দ্রের আত্মীয় রাধাকৃষ্ণ বাবু একথা লিখিয়া পাঠাইয়াছিলেন।