পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৬২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৯২
বিদ্যাসাগর।

দৃষ্ট হয়, যে সচরাচর দ্বাদশ বর্ষ হইতে পঞ্চদশ বর্ষ বয়সের ম ধ্যে প্রথম রজোদর্শন ঘটিয়া থাকে। দ্বাদশ বর্ষে সম্মতিবিধি নির্দ্ধারিত হইলে, ইহার ফল এই হইবে যে, উক্ত বর্ষ-অতিক্রমকারিণী বালিকাগণ নিতান্ত আশ্রয়শূন্যা হইবে। অধিকন্তু স্ত্রী দ্বাদশ বর্ষে পদক্ষেপ করিলেই স্বামী স্ত্রী-সহবাসে উওেজনা ও প্রশ্রয় প্রাপ্ত হইবে। যে বিধি স্ত্রী বাদশ বর্ষে পদার্পণ করিলেই তাহার প্রতি নৃশংস আচরণের পথ প্রশস্ত করিয়া দিতে উদ্যত, সে বিধির সমর্থন আমি কোন প্রকারেই করিতে প্রস্তুত নহি।

 যদিও এই সকল কারণে আমি বিলের সমর্থন করিতে অপারগ, তথাপি প্রচলিত কোন ধর্মসংস্কারের প্রতিকূলাচরণ না করিয়া, এমন কোন আইন হউক, যাহাতে বালিকা-স্ত্রীগণ সমুচিত আশ্রয় প্রাপ্ত হয়। তাহাতে আমি সম্পূর্ণ অভিলাষী। আমার প্রস্তাব এই যে, স্ত্রী রজঃস্বলা হইবার পূর্ব্বে তৎসহবাস দণ্ডনীয় অপরাধ বলিয়া নির্দ্দিষ্ট হউক। অধিকংশ বালিকা ত্রয়োদশ, চতুর্দ্দশ অথবা পঞ্চদশ বর্ষের পূর্ব্বে প্রায় রজঃস্বলা হয় না। সুতরাং আমার প্রস্তাব বিধিবদ্ধ হইলে, তাহাদিগকে প্রস্তাবিত আইন অপেক্ষাকৃত বাস্তবিক ও অধিকতর প্রশস্ত আশ্রয়প্রদানে সমর্থ হইবে, তৎসঙ্গে ধর্ম্মানুষ্ঠানের বিরোধী বলিয়া উক্ত বিধির বিরুদ্ধে কোন প্রকার আপত্তি উত্থাপিত হওয়া সম্ভবপর নহে। হিন্দু শাস্ত্রানুসারে রজঃস্বলার পূর্ব্বে স্ত্রী-সহবাস স্বামীর পক্ষে নিতান্তই ধর্ম্মবহির্ভূত কার্য্য। এ সম্বন্ধে তিনটী শাস্ত্রীয় বচন উদ্ধৃত করিলেই হইবে। প্রথম বচনটী বাচস্পতি মিশ্রকৃত “স্মৃতিসার সংগ্রহ” হইতে উদ্ধৃত করা হইতেছে,—