পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
বিদ্যাসাগর।

তাঁহার স্বামী ও দুই পুত্র, এক বিধবা কনিষ্ঠা ভগিনী ও তাঁহার এক পুত্র,—এইমাত্র তাঁহার পরিবার।

 বালক ঈশ্বরচন্দ্র এই পরিবারের বড় প্রীতিপাত্র হইয়াছিলেন। পর দিন প্রাতঃকাল হইতেই এই প্রীতির সূত্রপাত হইয়াছিল। বালক নিজের অদ্ভুত ধারকতা-শক্তিবলে সিংহপরিবারের সকলকেই স্তম্ভিত করিয়াছিলেন। যে দিন সন্ধ্যার সময় বালক ঈশ্বরচন্দ্র কলিকাতায় আসিয়া উপস্থিত হন, তাহার পর দিন পিতা ঠাকুরদাস, জগদদুর্ল্ভ বাবুর কয়েকখানি ইংরেজী বিল ঠিক দিতেছিলেন। সেই সময় বালক ঈশ্বরচন্দ্র বলেন,—“বাবা, আমি ঠিক দিতে পারি।” কেবল বলা নহে; সত্য সত্যই বালক কযেকখানি বিল ঠিক দিয়াছিলেন। একটীও ভুল হয় নাই। উপস্থিত ব্যক্তিগণ চমৎকৃত হইলেন। গুরু কালীকান্ত পুলকিতচিত্তে ও প্রফুল্লবদনে ঈশ্বরচন্দ্রের মুখচুম্বন করিয়া বলিয়া উঠেন,–“বাবা ঈশ্বর, তুমি চিরজীবী হও। তোমায় যে আমি অস্তরের সহিত ভালবাসিতাম, আজ তাহা সার্থক হইল।”

 মানব-জীবনের ইতিহাস পর্য্যালোচনা করিলে ইহা বড় বিস্ময়ের বিষয় বলিয়া মনে হয় না। অসীম প্রতিভাসম্পন্ন বা অপরিমেয় বিদ্যাবুদ্ধিশালী বহুসংখ্যক ব্যক্তির বাল্যকালে ভবিষ্যৎ জীবনের পূর্বাভাসের পরিচয় এইরূপ পাওয়া যায়। ভবিষ্যৎ জীবনে যাঁহার যে শক্তিপুষ্টির প্রতিপত্তি, বাল্যজীবনে তাহার সেই শক্তির অক্ষুরোৎপত্তি। এই জন্য মিণ্টন্‌ বলিয়াছেন,—

 “The childhood shows the man as morning shows the day.”

 প্রাতঃকাল-দৃষ্টে যেমন দিবার বিষয় বুঝা যায়, মানবের বাল্য-