পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বাধীনাবস্থা।
১৪৭

অক্ষম হইয়া, অগ্রজ মহাশয়ের হস্তে উহার সমস্ত ভার সমর্পণ করেন। অগ্রজ মহাশয়ও কয়েকবার ঐ কাগজ প্রচার করিয়া বিরক্ত হইলেন, এবং প্রকাশ করিলেন যে, উপযুক্ত পাত্রে বিনামূল্যে এই সংবাদপত্রের পরিচালন-ভার অর্পণ করিব। একারণ, হিন্দু-পেট্রিয়টের স্বত্ব-প্রাপ্ত্যভিলাষে অনেক কৃতবিদ্য লোক তাঁহার নিকট গতিবিধি করিতে প্রবৃত্ত হইলেন। ঐ সময়ে কৃষ্ণদাস পাল, ব্রিটিশ এসোসিয়েসনে কেরাণীর পদে নিযুক্ত ছিলেন। যদিও বাবু কৃষ্ণদাস পাল তৎকালীন কোন বিখ্যাত বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করিয়া জুনিয়র বা সিনিয়র পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছিলেন না, তথাপি বাটীতে স্বয়ং সর্ব্বদা অধ্যয়ন করায়, তাঁহার ভালরূপ ইংরাজী লিখিবার অসাধারণ ক্ষমতা জন্মিয়াছিল। কৃষ্ণদাস পাল অতিশয় বুদ্ধিমান্ ও কার্য্য়দক্ষ ছিলেন; বিশেষতঃ অগ্রজের সহিত তাঁহার বিশেষ সদ্ভাব ছিল। তজ্জন্য অগ্রজ মহাশয়, বাবু কৃষ্ণদাস পালকে হিন্দুপেট্রিয়টের স্বত্ব এককালে সমর্পণ করেন। তদ্দর্শনে অনেক কৃতবিদ্য লোক স্পষ্টবাক্যে বলিয়াছিলেন যে, বিদ্যাসাগর, কৃষ্ণদাসকে বিনামূল্যে হিন্দুপেট্রিয়ট একেবারে দিয়া ভাল কাজ করেন নাই। যেহেতু, কৃষ্ণদাস পাল কোনও ভাল বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করিয়া বৃত্তি পান নাই। হিন্দু-কলেজ, হুগলী-কলেজ ও কৃষ্ণনগর-কলেজের পরীক্ষোত্তীর্ণ যশস্বী লেখকদিগের মধ্যে কাহাকেও না দিয়া অন্যায় কার্য্য করিলেন। তৎকালে অনেকেই অগ্রজকে নির্ব্বোধ জ্ঞান করিয়াছিলেন। কিন্তু বাবু কৃষ্ণদাস পাল, হিন্দুপেট্রিয়টের এডিটার হইয়া, ক্রমশঃ বিশেষ প্রতিপত্তি লাভ করেন। হিন্দুপেট্রিয়ট উপলক্ষেই বাবু কৃষ্ণ দাস পাল বিখ্যাত হইয়াছিলেন এবং ক্রমশঃ তিনি ভারত-ব্যবস্থাপক সভার সভ্য হইয়াছিলেন। পরন্তু, কৃষ্ণদাস বাবুর ওরূপ নাম ও প্রতিপত্তি লাভ হইবার কোন আশাই ছিল না; অগ্রজই কৃষ্ণদাস বাবুর এই উন্নতির মূল।

 ইতিপূর্ব্বে যৎকালে অগ্রজ মহাশয়, বৈঁছিগ্রামে বালিকাবিদ্যালয় ও ইংরাজী-বঙ্গবিদ্যালয় স্থাপনোপলক্ষে গিয়াছিলেন, তৎকালে গোবিন্দচাঁদ বসুর বাটীতে অবস্থিতি করিতেন। স্থানীয় লোকের প্রমুখাৎ অবগত