পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বাধীনাবস্থা।
১৬৫

তোমার চিরসঞ্চিত ধনসম্পত্তি নষ্ট করিয়া ফেলিতে পারে। যদি এরূপ হয়, তাহা হইলে কিরূপে তোমার কীর্ত্তি থাকিবে? এমন স্থলে, যদি আমার পরামর্শ শুন, তাহা হইলে চকদিঘীতে একটি অবৈতনিক উচ্চশ্রেণীর ইংরাজীসংস্কৃত বিদ্যালয় স্থাপন কর যে, চকদিঘীর চতুঃপার্শ্বের সন্নিহিত গ্রামস্থ বালকগণ লেখাপড়া শিক্ষা করিয়া জ্ঞান-লাভ করিবে ও উপাৰ্জ্জনক্ষম হইবে। তাহা হইলেই তোমার নাম ও কীর্ত্তি চিরস্থায়ী হইবে। ঐ বিদ্যালয়ের নাম সারদাপ্রসাদ ইনষ্টিটিউসন রাখা। আর দাতব্য-চিকিৎসালয় স্থাপন কর; তাহা হইলে দেশস্থ নিরুপায় পীড়িত ব্যক্তিরা বিনা মূল্যে ঔষধ ও পথ্য পাইয়া, আরোগ্য লাভ করিতে পরিবে। উক্ত দেশহিতকর মহৎ কার্য্যদ্বয় স্থাপন করিয়া যাইতে পারিলে, তোমার অনন্তকাল পর্য্যন্ত যশঃসুধাকর দেদীপ্যমান থাকিবে।” এতদ্ব্যতীত অপরাপর নানাপ্রকার হিতকর কার্য্য করিবারও উপদেশ দিয়াছিলেন। পূর্ব্বে চক্‌দিঘীতে গবর্ণমেণ্টের একটী এডেড্ স্কুল ছিল। তাহাতে বিশেষ ফলোদয় হইত না। তৎপরিবর্ত্তে সারদাবাবু, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পরামর্শে ও অনুরোধে খৃঃ ১৮৬৮ সালে ১লা আগষ্ট চকদিঘীতে অবৈতনিক এণ্ট্রেন্স বিদ্যালয় স্থাপন করেন, এবং তৎকালের লেপ্টেনেণ্ট গবর্ণরকে অনুরোধ করিয়া, মেডিকেল বোর্ড হইতে উৎকৃষ্ট ডাক্তার নির্ব্বাচন করিয়া, ১২৬৬ সালে চকদিঘীতে ডাক্তারখানা স্থাপন করিয়াছিলেন। চকদিঘীতে এণ্ট্রেন্স স্কুল স্থাপন-সময় হইতে দাদা ঐ বিদ্যালয়ের কমিটির মেম্বর ছিলেন। ঐ সময়ে তিনি উহার তত্ত্বাবধান করিতেন। তিনি যেরূপ শিক্ষাপ্রণালীর বন্দোবস্ত করিয়া দিয়াছিলেন, ঐ প্রণালী আদ্যাপি সেইরূপ প্রচলিত আছে। স্থানীয় লোক, দাদার ও সারদাবাবুর নাম যে কখন বিস্মৃত হইবেন, এমত বোধ হয় না।

 বিদ্যাসাগর মহাশয়, উক্ত বিদ্যালয় পরিদর্শনজন্য মধ্যে মধ্যে চকদিঘী যাইতেন। ঐ সময়ে চকদিঘীর সন্নিহিত এক গ্রামে একটি দরিদ্র পরিবারকে কয়েক বৎসর মাসিক দশ টাকা, মাসহারা দিয়াছিলেন। একদিন তাহাদের