পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/২৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বাধীনবস্তা।
২৩৭

সেক্রেটারীর পদে নিযুক্ত করাইবার অভিপ্রায় প্রকাশ করেন। এবিষয়ে সূর্য্যবাবু প্রথমতঃ অসম্মতি প্রকাশ করেন; অনেক বাদানুবাদের পর, দাদার আগ্রহাতিশয় দেখিয়া ও অনুরোধ এড়াইতে না পারিয়া, তাঁহার প্রস্তাবে সম্মত হন। সুর্য্যবাবু, হেয়ার-স্কুলের কর্ম্ম পরিত্যাগ করিয়া, মেট্রোপলিটানে সেক্রেটারির পদে নিযুক্ত হন।

 ১৮৬৫ সালে অগ্রজ মহাশয়, উত্তরপাড়ায় গাড়ী হইতে পড়িয়া যকৃতে আঘাত লাগায় যে বেদনা হইয়াছিল, তাহা সম্পূর্ণরূপ ভাল হয় নাই; মধ্যে মধ্যে ঐ স্থানে বেদনা হইত। এক্ষণে তাহা প্রবল হইয়া উঠিলে, অত্যন্ত যাতনায় অভিভূত হইলেন। অগ্রজের আত্মীয় ডাক্তার সূর্য্যকুমার সর্ব্বাধিকারী মহাশয় যত্নপূর্বক চিকিৎসা করিতে লাগিলেন; কিন্তু কিছুতেই রোগের উপশম হইল না, ক্রমশঃ যাতনার বৃদ্ধি হইতে লাগিল। ভয়প্রযুক্ত বাসাবাটী পরিত্যাগ করিয়া, সুকিয়া-স্ট্রীটে তাহার পরমবন্ধু বাবু রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভবনে যাইয়া অবস্থিতি করিলেন। রাজকৃষ্ণ বাবু ও তঁহার পুত্র সুরেন্দ্র বাবু এবং ভাগিনেয় বেণীমাধব ও ভ্রাতৃ-জামাতা নীলমাধব মুখোপাধ্যায় প্রভৃতি সকলে শুশ্রূষা করিতে লাগিলেন। পরিশেষে, ডাক্তার বাবু সূর্য্যকুমার সর্ব্বাধিকারী মহাশয়, তৎকালের বিখ্যাত ডাক্তার পামর সাহেব মহোদয়কে রোগ-নির্ণয় করিতে আনয়ন করেন। তাহাতেও সম্পূর্ণরূপ আরোগ্যলাভ করিতে পারেন নাই সত্য, কিন্তু যাতনার অনেক হ্রাস হইয়াছিল। অবশেষে দাদার পরমবন্ধু ডাক্তার বাবু মহেন্দ্রনাথ সরকার মহাশয়, প্রায় একমাস কাল চিকিৎসা করিলে, তিনি সম্পূর্ণরূপ আরোগ্য লাভ করেন। অগ্রজ মহাশয়, সুস্থ ও প্রকৃতিস্থ হইয়া, পিতৃদেবের আদেশ-প্রতিপালনজন্য কনিষ্ঠ সহোদর ঈশান ও তৎ-পত্নীকে আনাইয়া, কাশীতে তাঁহার নিকট প্রেরণ করিলেন এবং তাহার সমস্ত ঋণ পরিশোধ করিয়া দিলেন। ঈশান, পরিবার-সহ সন ১২৮২ সালের ১৩ই শ্রাবণ কাশীতে উপস্থিত হইল। ইহাকে পিতার শুশ্রুষাদিকার্য্যে নিযুক্ত করিয়া, আমি কর্ম্মটারে দাদার সহিত সাক্ষাৎ করি। কয়েক