পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/২৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪৪
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

ডাক্তার, নারাজোলের রাজবাটীর হস্তীতে আসিয়া, ঐ হাতী দ্বারা শাখাগুলি ভগ্ন করে; এবং বৃক্ষটি ছেদন করিবার জন্য করাতি সংগ্রহ করিয়া বৃক্ষতলে উপস্থিত হয়; ঐ সংবাদ পাইয়া তথায় আমরা উপস্থিত হইলাম। বৃক্ষে করাত সংলগ্ন করিয়াছে দেখিয়া, উহাদিগকে তাড়াইয়া দিলাম। নবকুমার ডাক্তারকে বাটীতে আনয়ন করিয়া তিরস্কার করিলে, সে ক্ষমা প্রার্থনা করিল। নবকুমার ডাক্তারের মৃত্যুর পর, আমার পুত্রদ্বয়ের পীড়ার জন্য কলিকাতায় এবং কাশীতে আমায় কিছু দিনের জন্য অবস্থিতি করিতে হইয়াছিল। যদিও মধ্যে মধ্যে বীরসিংহায় গিয়াছিলাম, কিন্তু ঐ বৃক্ষের আর তত্ত্বাবধান করা হয় নাই।” চৈত্র মাসে বাটী গিয়া, দাদার আদেশানুসারে ৯৪ সালের চৈত্রসংক্রান্তিতে বৃক্ষের নিকটে গিয়া দেখি, বৃক্ষটিকে বেড়া দিয়া পুষ্করিণীর পাড়ের অন্তর্গত করিয়া লইয়াছে। বেড়ার দ্বার দিয়া বৃক্ষের নিকট গিয়া অন্তর হইতে জল দিয়া দেখিলাম যে, বৃক্ষের চতুর্দ্দিক ফণিমনসা অর্থাৎ এক প্রকার কণ্টকবৃক্ষে আচ্ছন্ন। ঐ বৃক্ষটিকে নষ্ট করিবার মানসে উহার নিকটবর্ত্তী স্থানে বাঁশ, তেঁতুলগাছ, বাবলাগাছ প্রভৃতি রোপণ করিয়াছে। বাটী আসিবার সময় ৺কালীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের বাটীতে গিয়া ৺নবকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের পত্নীকে বৃক্ষের চতুর্দ্দিকের বেড়া খুলিয়া বৃক্ষতল পরিষ্কার করিয়া দিতে বলায়, অনেক বাদানুবাদের পর বেড়া খুলিয়া দিতেছি বলিয়া, আমাদিগকে নিজ ব্যয়ে বৃক্ষের ........ করিয়া লইতে বলেন। তাহার বেড়া ভাঙ্গিয়া দিবার পর, আমরা নিজ-ব্যয়ে বৃক্ষের তলীয় স্থান পরিষ্কার করিয়া লইলাম। ১২৯৫ সালের জ্যৈষ্ঠমাসে কয়েক জন অসচ্চরিত্র ব্যক্তির উত্তেজনায়, আমাদের পিতৃব্য-পৌত্র আশুতোষ ও কেনারাম বন্দ্যোপাধ্যায়কে এবং আমাকে প্রতিবাদী শ্রেণীভুক্ত করিয়া, ঘাটাল ফৌজদারী আদালতে অভিযোগ করেন। বিচারপতি, প্রথমতঃ মীমাংসার জন্য আদেশ করেন। তাহাতে বাদী কেশবচন্দ্র বলেন, “বিদ্যাসাগর মহাশয় স্বয়ং যদি এখানে আমার নিকট আসিয়া চাহিয়া লন, তবে দিতে পারি; নচেৎ পারি না।” দাদার পরমাত্মীয় ব্যক্তি