পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চাকরি।
৬৫

মাত্রেই আশ্চর্য্যান্বিত হইয়াছিলেন। একারণ, বাচস্পতি মহাশয়ের সহিত অগ্রজের অত্যন্ত সদ্ভাব ছিল।

 ১৮৪২ খৃষ্টাব্দে রবার্ট কষ্ট নামক একজন সন্ত্রান্ত-বংশোদ্ভব সিবিলিয়ান, ফোর্ট উইলিয়ম কলেজে অধ্যয়ন করিতেন। অগ্রজ মহাশয় সেই সময়ে ঐ কলেজের প্রধান পণ্ডিতের পদে নিযুক্ত ছিলেন। তাঁহার সহিত আলাপ, হইলে, তিনি মধ্যে মধ্যে কলেজে আসিয়া, অগ্রজের সহিত নানা বিষয়ের আলোচনা করিতেন। তিনি বিলক্ষণ বুদ্ধিমান্ ও বিদ্বান্ ছিলেন। অগ্রজের সহিত আলাপ করিয়া, তিনি সাতিশয় সুখী হইতেন। একদিন তিনি আগ্রহ-সহকারে সবিশেষ অনুরোধ করিয়া অগ্রজকে বলিলেন, “যদি তুমি, আমার বিষয়ে সংস্কৃত-ভাষায় কবিতা রচনা করিয়া দাও, তাহা হইলে আমি অত্যন্ত আহলাদিত হইব।” তাঁহার অনুরোধের বশবর্তী হইয়া, ক্ষণকাল অপেক্ষা করিতে বলিয়া, নিম্নলিখিত শ্লোকদ্বয় তাঁহার হস্তে প্রদান করিলেন। সাহেব শ্লোক লইয়া প্রীতমনে প্রস্থান করিলেন। শ্লোকদ্বয় এই—

শ্রীমান্ রবর্টকষ্টোহদ্য বিদ্যালয়মুপাগতঃ।
সৌজন্যপূর্ণৈরালাপৈর্নিতরাং মামতোষয়ৎ॥ ১॥
স হি সদ্গুণসম্পন্ন সদাচাররতঃ সদা।
প্রসন্নবদনো নিত্যং জীবত্বব্দশতং সুখী। ২॥

 কষ্ট, সাহেব সন্তুষ্ট হইয়া, অগ্রজ মহাশয়কে ২০০ শত টাকা দিতে মানস করিয়াছিলেন। কিন্তু তিনি তাহা না লইয়া, সাহেবকে উপদেশ দেন যে, এই টাকা কলেজে জমা করিয়া দেন; সংস্কৃত-কলেজের যে ছাত্র সংস্কৃত রচনায় ভাল পরীক্ষা দিবেন, তিনি ৫০ টাকা পারিতোষিক পাইবেন। এইরূপ ব্যবস্থা হইলে, বৎসর বৎসর পরীক্ষায় একজন করিয়া ছাত্র, কবিতা-রচনার পুরস্কার ৫০ টাকা পাইবেন। সংস্কৃত-কলেজের ছাত্রেরা চারি বৎসর কষ্ট, সাহেবের পুরস্কার পাইয়াছিলেন; তৎকালে এই পুরস্কারকে কষ্ট, সাহেবের পুরস্কার বলিত। কষ্ট, সাহেব, অগ্রজকে, নির্লোভ ও উদার-হৃদয় দেখিয়া, সাহেব,