বিনা অনুমতিতে কি শিক্ষক কি ছাত্র কেহই ইচ্ছামত বিদ্যালয় হইতে বাটী যাইতে পারিবেন না। ছাত্রগণ ইচ্ছানুসারে একবারেই সকলে ক্লাশ হইতে বাহিরে মালীর গৃহে যাইতে পরিবে না; এক এক জন করিয়া যাইবে, কিন্তু তাহাও কাষ্ঠের পাশ গ্রহণ করিয়া যাইতে হইবে। অধ্যাপক ও বিদ্যার্থিগণ আবেদন ব্যতিরেকে অনুপস্থিত হইতে পরিবেন না। সাহিত্য-শ্রেণীতে যে সকল পুস্তক অধ্যয়ন করান হইত, তন্মধ্য হইতে অশ্লীল কবিতা-সমূহ রহিত করিয়া, অধ্যাপককে অধ্যয়ন করাইতে হইত। কলেজ, জুনিয়র ও সিনিয়র এই দুই শ্রেণীতে বিভক্ত হইল। তন্মধ্যে সাহিত্য ও অলঙ্কারের শ্রেণী জুনিয়র, এবং দর্শন, বেদান্ত ও স্মৃতির শ্রেণী সিনিয়র। জুনিয়ারের পরীক্ষায় ছাত্রবৰ্গকে পাঁচ দিন পাঁচ বিষয়ের পরীক্ষা দিতে হইত। ব্যাকরণের প্রশ্ন হইত; কিন্তু ছাত্রগণ নীরস বলিয়া প্রায় ব্যাকরণ দেখিতে আলস্য করিত; সুতরাং ব্যাকরণে অনেক ছাত্র ফেলা হইত। একারণ, অগ্রজ মহাশয় মাসে মাসে ব্যাকরণের পরীক্ষা ও শিক্ষার ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। ব্যাকরণের প্রথম শ্রেণীর অধ্যাপক তারানাথ তর্কবাচস্পতি মহাশয়, যথানিয়মে উক্ত জুনিয়র ডিপার্টমেণ্টের ছাত্রগণকে উপদেশ দিতেন। সাহিত্য ও অলঙ্কারের অধ্যাপক, নিয়মানুসারে বাঙ্গালা-ভাষা হইতে সংস্কৃত অনুবাদ, সংস্কৃত-ভাষা হইতে বাঙ্গালা অনুবাদ ও শ্লোকের টীকা করাইতেন। তৎকালে নিয়ম ছিল, অলঙ্কারের শ্রেণী হইতে ছাত্রগণ লীলাবতী ও বীজগণিতের অঙ্ক শিক্ষা করিত; কিন্তু সাহিত্য-শ্রেণীর ছাত্রগণের মধ্যে কেহ অঙ্ক শিক্ষা করিবার জন্য জ্যোতিষের শ্রেণীতে যাইত না, এতদ্বিষয়েও কর্তৃপক্ষের কোন বন্দোবস্ত ছিল না; সুতরাং সাহিত্য-শ্রেণীর ছাত্রগণ অঙ্কে প্রায় ফেলা হইত। এজন্য অগ্রজ মহাশয়, যোগধ্যান শাস্ত্রীর শ্রেণীতে সাহিত্যশ্রেণীর ছাত্রগণের অঙ্ক শিক্ষা করিবার জন্য নূতন ব্যবস্থা করিয়া দেন। ঐ রূপে দর্শন ও স্মৃতির ছাত্রগণের, অলঙ্কার-শ্রেণীতে গিয়া নিয়মানুসারে অলঙ্কারগ্রন্থ শিখিবার ব্যবস্থা করিয়া দেন। অলঙ্কারের অধ্যাপক প্রেমচন্দ্র তর্কবাগীশ মহাশয়, ছাত্রবৰ্গকে রীতিমত সংস্কৃত গদ্য-পদ্য-রচনা ও বাঙ্গালা
পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/৭৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চাকরি।
৭৩