পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চাকরি।
৮১

জীবনচরিত লিখিবার প্রথা প্রচলিত থাকিলে, এতদ্দেশেরও অনেক মহানুভবের নাম প্রকাশ হইত। দুর্ভাগ্যপ্রযুক্ত এরূপ প্রথা না থাকাতে, ভারতবর্ষের পূর্বতন অসংখ্য মহানুভব মহামহোপাধ্যায়ের নাম কালসহকারে বিলুপ্তপ্রায় হইয়াছে। বাঙ্গালাদেশের বিদ্যার্থী বালকবৃন্দের বিশিষ্টরূপ উপকার দর্শিতে পারে, এই আশায়, অগ্রজ মহাশয় ঐ পুস্তকের অনুবাদে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। “সামান্য কৃষকের পুত্র নিউটন, নিজের যত্ন ও পরিশ্রমে লেখাপড়া শিক্ষা করিয়া জগদ্বিখ্যাত হইয়াছিলেন। নিউটন অদ্বিতীয় বুদ্ধিমান্ ও বিদ্বান্ হইয়াও স্বভাবতঃ বিনীত ছিলেন; তিনি আপন বিদ্যার কিঞ্চিম্মাত্র অভিমান করিতেন না। নিউটনের এই এক সুপ্রসিদ্ধ কথা ধরাতলে জাগরূক রহিয়াছে, “আমি বালকের ন্যায় বেলাভূমি হইতে উপলখণ্ড সঙ্কলন করিতেছি, কিন্তু জ্ঞানমহার্ণব পুরোভাগে অক্ষুন্ন রহিয়াছে।” ইত্যাদি রূপ বিদ্যাশিক্ষার উত্তেজক জীবনচরিত পাঠে, এতদ্দেশীয় লোক নানাপ্রকার উপদেশ প্রাপ্ত হইবে, এবং সেই সঙ্গে সঙ্গে তত্তদ্দেশের তত্তৎকালীন রীতি, নীতি, ইতিহাস, আচার, ব্যবহার পরিজ্ঞাত হইবে। জীবনচরিত পুস্তক মুদ্রিত করিবার স্বল্পদিনের মধ্যেই লোকের আগ্রহাতিশয়ে সমস্ত পুস্তক নিঃশেষিত হইল। তৎকালীন বিদ্যার্থামাত্রেই এই পুস্তক সমাদরপূর্ব্বক পাঠ করিতেন। অগ্রজ মহাশয়ের সুন্দর অনুবাদ ও ললিত, রচনা-প্রণালী দর্শনে, সকলে অপরিসীম আনন্দলাভ করিয়াছিলেন। সুতরাং তিনি সাধারণের নিকট অদ্বিতীয় লেখক বলিয়া প্রশংসাভাজন হইয়াছিলেন। ইতিপূর্বে সাধুভাষায় ইংরাজী পুস্তকের এরূপ অনুবাদ করিতে কেহ সক্ষম হন নাই।

 কাপ্তেন ব্যাঙ্ক সাহেব, সংস্কৃত, বাঙ্গালা ও হিন্দী শিক্ষার মানসে, শিক্ষা— সমাজের অধ্যক্ষ ডাক্তার ময়েট্ সাহেবকে এই অনুরোধ করেন যে, ইংরাজী ও সংস্কৃত-ভাষায় বিলক্ষণ অভিজ্ঞ একটী পণ্ডিত নির্বাচন করিয়া দেন। সংস্কৃতকলেজের সেক্রেটারির কার্য্য পরিত্যাগ করিয়া নিরর্থক বসিয়া আছেন মনে করিয়া, ময়েট্ সাহেব, কাপ্তেন ব্যাঙ্ককৈ শিক্ষা দিবার জন্য অগ্রজ মহাশয়কে