পাতা:বিপ্লবী কানাইলাল - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গ্রেপ্তার করে। স্থানীয় যুবকগণ প্রতিশোধের জন্য অধীর হয়ে ওঠে। বিশেষ করে পূর্ব-বর্ণিত মতিলাল রায়ের দল যেন মরীয়া হয়ে ওঠে, প্রতিকার যে ভাবে হোক করতেই হবে। মতিলাল রায় জানতেন যে কানাইলালের কাছেই প্রকৃত সাহায্য পাওয়া যাবে। এবং এই ঘটনা হতেই কানাইলালের স্বরূপ জানা যাবে। মতিলাল রায় তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে আলোচনা করে, কানাইলালের কাছে একখানা উড়ো চিঠি লিখলেন এই মর্মে— যদি তুমি সত্য দেশসাধক হও, দেশহিতে জীবন বলি দেবার স্পর্ধা রাখ, তাহা হইলে আগামী অমাবস্যার দ্বিপ্রহর নিশীথে শ্মশানের বটবৃক্ষমূলে আমার সহিত সাক্ষাৎ করিও।

 নির্দিষ্ট রাতে মতিলাল রায় তাঁর বন্ধুর সঙ্গে বটগাছের নীচে অপেক্ষা করতে লাগলেন। দুই প্রহরের সময় কানাইলালের আসবার কথা। কিন্তু সময় উত্তীর্ণ হয়ে গেল তবুও কারও দেখা নেই। নিস্তব্ধ শ্মশানে শুধু ঝিঁ ঝিঁ ডাক শোনা যাচ্ছে। চোখের দৃষ্টি চলে না—শুধু নিরন্ধ্র অন্ধকার। মতিলাল মনে করলেন কানাইলাল বৃথাই ব্যায়াম চর্চা করে, উচ্চ আদর্শের কথা বলে, মনে মনে সে এখনও যথেষ্ট সাহস সঞ্চয় করতে পারে নি। ফিরে যাবেন ভাবছেন এমন সময় দেখা গেল সর্বাঙ্গ কালো কাপড়ে ঢেকে কে যেন তাঁদের দিকে এগিয়ে আসছে। চিনতে দেরী হল না—কানাইলাল! কানাইলাল যে চিঠি পেয়েছিলেন তাতে মতিলালের নাম ছিল না, কারও নাম ছিল না, কাজেই কানাইলালকে এত সাবধানে আসতে

২৮