পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লখিমপুর g [ রাজ্যশাসনে অকৰ্ম্মণ্য ছিলেন এবং তাহার অধীনস্থ কৰ্ম্মচারিবর্গ অযথা অত্যাচারপূর্বক করসংগ্ৰহ করিয়া প্রজাবৰ্গ প্রপীড়িত করিতেছিল । এই অরাজকতার মধ্যে পাৰ্ব্বতীয় অসভ্যজাতিরা দলে দলে অবতীর্ণ হইয়া রাজালুণ্ঠনপুৰ্ব্বক জনশূন্ত করিয়া ফেলে। এই সমরে সদিয়া-নগরে একজন খমৃতী সর্দার স্থানীয় শাসনকৰ্ত্তারূপে রাজকাৰ্য্য পরিচালনা করিতে থাকেন। খৃষ্টাদৈ ইংরাজরাজ একজন সেনানায়কের অধীনে সদিয়া নগরে । একদল সিপাহী স্থাপন করেন। উহার চারবৎসর পরে অকস্মাৎ একদিন পাৰ্ব্বতীয় খমৃতীগণ পৰ্ব্বত হইতে সমতলক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইয়া ইংরাজসেনানী ও পলিটিকাল এজেন্ট মেজর হোয়াইটুসহ সিপাহীদিগকে নিহত করে। তখন ১৮৩৯ খৃষ্টাব্দে ইংরাজরাজ আসামপ্রদেশের পূর্ণ-শাসনভার গ্রহণ করিয়া পাৰ্ব্বতীয় শত্রর আক্রমণ নিবারণের বিধিমত চেষ্টা করেন । তদবধি এখানে শাস্তিরাজ্য স্থাপিত হয়। আবর, আহম, দফলা, কাছাড়া, থমৃতী, কুকী, লালঙ্গ, মণিপুরী, মটক, চুটিয়া, মিকির, মিশমী, নাগ, নেপালী, রাভা, সাওতাল, শিম্পে প্রভৃতি অসভ্যজাতি এই জেলার পাৰ্ব্বত্যপ্রদেশে বাস করে। ঔপনিবেশিক হিন্দুর মধ্যে ব্রাহ্মণ, রাজপুত, কায়স্থ, আগরবালা বেণে ও কলিতা ( ইহারা অসভ্য ও পাৰ্ব্বতীয় আসাম-রাজগণের পৌরোহিত্য করিত, বৰ্ত্তমানকালে সকলেই কৃষিবৃত্তি অবলম্বন করিয়াছে। ইহার এখানে সংশূদ্র বলিয়া পরিগণিত। ) প্রভৃতি জাতি বিদ্যমান আছে। এই সুদূর পূর্বপ্রাস্তে ইসলামধৰ্ম্ম বিস্তৃতি লাভ করে নাই। মোগল-সম্রাটের অধিকারকালে মুসলমান সৈন্ত আসামপ্রদেশে প্রবেশ লাভ করিলেও জলবায়ুর প্রকোপ সহ্ করিতে না পারিয়া এতদেশ পরিত্যাগ করিতে বাধ্য হইয়াছিল । আহম রাজগণ রাজসমৃদ্ধি বৃদ্ধিমানসে কয়েক ঘর মুসলমান কারিকর রাজধানীতে আনয়ন করিয়া স্থাপন করেন, ঐ সময়ে ঢাকা নগর হইতেও কয়েক ঘর মুসলমান দোকানদার লখিমপুরে আসিয়া বাস করে ; উহারা সকলেই ফরাইজী মতাবলম্বী। মরন বা মোয়ামারীগণ বর্তমান সময়ে বৈষ্ণবধৰ্ম্মে দীক্ষিত হইয়াছে। শক্তিউপাসক আসাম-রাজগণের অত্যাচারে এই বৈষ্ণবসম্প্রদায়ের মধ্যে কএক বীর বিদ্রোহ উপস্থিত হয়। অবশেষে i বৈষ্ণবগণেই প্লাধান্ত লাভ করে। এখানকার অধিবাসীদিগের অবস্থা নিতান্ত মন্দ নহে। লবণ, অহিফেন প্রভৃতি কএকটী দ্রব্য ব্যতীত তাহারা আপনাদের আবশুর্কীয় সকল দ্রব্যস্থ পরিশ্রমদ্বারা প্রস্তুত করিয়া লইতে পারে। কাপাস-বস্ত্রাদি ব্যতীত এখানকার লোকে রেশমীবস্ত্র ৰয়ন করে। এখানে দুই প্রকার বেশম প্রস্তুত হয়। উহার )yరిg ১৩৪ } লখেরা ' কীট এড়িয়া ও মুগা নামে প্রসিদ্ধ। স্ত্রীলোকেরাই প্রধানতঃ রেশমীকাপড় প্রস্তুত করে। পুরুষরা বাগানে পোকা পালন কার্য্যে ব্যস্ত থাকে। এতদ্ব্যতীত কৃষিকাৰ্য্য ও সরিষা হইতে তৈল প্রস্তুত করা পুরুষদিগের অপর আর একট প্রধান কাৰ্য্য। এখানকার চা-বাগানে উৎকৃষ্ট চা প্রস্তুত হইয়া থাকে। ঐ চা এবং কার্পাস বস্ত্র, মুগা ও এগুি-রেশমের কাপড়, মাটির বাসন, পাট, মাদুর, রবার ও মোম এস্থান হইতে প্রভূত পরিমাণে বাঙ্গালায় রপ্তানী হইয়া থাকে। সদিয়ায় গবমেন্টের তত্ত্বাবধানে প্রতিবৎসর একটী মেলা অনুষ্ঠিত হইয়া থাকে। কলিকাতা হইতে ধুবড়ী, ডিব্ৰুগড় ও কাছাড় যাতায়াতের জন্য রেলপথ বিস্তৃত হইয়াছে। ঐ রেলপথে এবং ষ্টীমার ও নৌকাযোগে নদীপথে এখানকার বাণিজ্য চালিত হইতেছে। ২ উক্ত জেলার উত্তরস্থ একটী উপবিভাগ, উত্তর-লখিমপুর নামে খ্যাত। ভূপরিমাণ ৭৭৫০ বর্গমাইল। ইহার উত্তরে দফলা ও মীরশৈল এবং দক্ষিণে ব্ৰহ্মপুত্র নদ । লখিমপুর নগর ইহার সদর । ৩ উত্তর-লখিমপুর উপবিভাগের অন্তর্গত একটী গওগ্রাম । সুবর্ণগ্ৰনদীর গড়িয়াজান শাখার কুলে অবস্থিত। অক্ষা, ২৭১৪৫ উঃ এবং দ্রাঘি• ৯৪"৭৯০ পূঃ । এখানে ইংরাজরাঞ্জের একটা ছাউনী আছে। লখিমপুর, অযোধা প্রদেশের খেরী জেলার একটা তহলীল। অক্ষা” ২৭°৪৭′১৫′ উঃ হইতে ২৮-২৯৩০% উঃ এবং দ্রাঘি• ৮০°২০′ হইতে ৮১°৪' পূঃ মধ্য । ভূ-পরিমাণ ১০৭৮ বর্গমাইল । খেরী, শ্ৰীনগর, ভূর, পৈলা ও কুকুড়া-মৈলানী পরগণা ইহার অন্তৰ্ভুক্ত । ২ খেরীজেলার প্রধান নগর ও লখিমপুর তহসীলের সদর। উল নদীর দক্ষিণকুলে ১ মাইল দূরে অবস্থিত। অক্ষা ২৭° a৬ ৪৫ উঃ এবং দ্রাঘি’ ৮০ ৪৯ ২০' পূঃ। এই নগরট বাণিজ্যবাহুল্যহেতু বিশেষ সমৃদ্ধিসম্পন্ন। লখীপুর (লক্ষ্মীপুর ), আসামের গোয়ালপাড়া জেলার দক্ষিণস্থ & একটা গওগ্রাম। গাবোশৈলের উত্তরপাদমূলে অবস্থিত। অক্ষা ২৬ ১/৫ উঃ এবং দ্রাঘি" ৯০°২৫' পূঃ। এখানে মেচপাড়ার প্রসিদ্ধ জমিদারের প্রাসাদ বিদ্যমান। ইনি স্থানীয় বালক ও বালিকা বিদ্যালয়ের ব্যয়ভার বহন করিয়া আসিতেছেন। লখীপুর (লক্ষ্মীপুর), আসামপ্রদেশের কাছাড় জেলার পূর্ক্সদিকৃস্থ একটী গওগ্রাম। বরাক ও ঝিরী নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত। গ্রামপ্রান্তে মণিপুর-মহারাজের একটী কাছারী আছে। লখেরা, লাক্ষ বা গালা হইতে চুরি প্রভৃতি অলঙ্কার ও খেলনা প্রস্তুতকারী জাতিবিশেষ । সম্ভবতঃ সংস্কৃত লাক্ষাকারু শব্দের