পাতা:বিশ্বমানবের লক্ষ্মীলাভ.djvu/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রবাসী-গ্রামবাসী সংবাদ আমার সামনে তুলে ধরলেন।–“মার্কিন-দেশে যখন ফিরে যাবে, তোমার মাকে যদি বল আমায় রাখাল করে দিয়েছে, তিনি হয়তো কেঁদেই ফেলবেন । তোমরা আমায় কত বড়ো লোক ঠাওড়াতে মনে আছে ?” বলে ইব্রাহিম হেসে উঠলেন । প্রথমটা সন্দেহ হল, বুঝি কাষ্ঠহাসি। কিন্তু কই, ন গলার স্বরে, না চোখের চাউনিতে, খেদের লক্ষণ কিছুই দেখলাম না। বেশ সহজ প্রশান্তভাবে তিনি বলে চললেন,– “মাকে বুঝিয়ে ব’লো, কাদার কিছু নেই,—মুখেরই কথা। আমি নিজে, কাদা দূরে থাক, যত দিন যাচ্ছে ততই বুঝছি যা হয়েছে ভালোই হয়েছে। বিপ্লবের মধ্যিখানে বাস করলে কত রকম প্রশ্ন মনের মধ্যে তোলপাড় করতে থাকে,— আগেকার দিনে সেসব কথা তুললে বলতে পাগল। হতে পারে আমরা সকলে পাগলই হয়েছি। আবার এও হতে পারে, আগেই ছিলাম পাগল এখন সহজ মানুষ হয়েছি। আমায় তোমার খুব অদ্ভুত লাগছে,—না ?”

  • ও কথা কেন বলছেন, দাদা ?” আমি আপত্তি করে উঠলাম। “তুমি যে-দেশ থেকে আসছ, সেখানকার লোক্সের কাছে আমাদের এসব ব্যাপার কত অদ্ভুত ঠেকে, তা জানি, তাই কথাটা মনে হল, ভাই ।”

ইতিমধ্যে এক গোরু দল ছেডে ফসল-খেতে গিয়ে পড়ল। তাই দেখে, ইব্রাহিম লাফ দিয়ে উঠে, তার পিছন পিছন ছুটে, চাবুকের ফটাস ফটাস্ আওয়াজে তাকে ঘুরিয়ে আনলেন । মুখের ঘাম মুছে আবার এসে বসতে, তার অনেকখানি বয়স যেন ঝরে গেল। নিজের কাহিনী তিনি আবার বলে যেতে লাগলেন,— “আমাদের সমবায়ে এক বুড়ে চাষা আছে সে লেখাপড়া জানে না বটে, কিন্তু বুদ্ধি ১২২