পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঈশ্বরের অস্তিত্ব এবং লক্ষণ।

করিয়া লইলে, তাঁহাতে ঈশ্বরের ভাব কিছুই থাকে না। তাঁহার অস্তিত্বের সঙ্গে সঙ্গে তাঁহার স্বরূপ লক্ষণ সর্ব্বত্রই সুব্যক্ত হইতেছে। সমুদয় জগৎ সংসারই কার্য্য, তাহার তিনি মূল কারণ। সমুদয় জগৎ শৃঙ্খলাই কৌশলময় এবং তিনিই সেই কৌশলের কারণ জ্ঞান-স্বরূপ পরব্রহ্ম। জগতের সমুদয় নিয়মই মঙ্গলাবহ এবং ইহার নিয়ন্তা মঙ্গল সঙ্কল্প।

 কিন্তু ঈশ্বরের জ্ঞান ও মঙ্গল-ভাব পরিমিত কি অপরিমিত; তিনি কি কতক জানেন, কতক জানেন না—কতক দেশ দেখেন, কতক দেখেন না—তিনি বাহিরে আছেন, অন্তরে নাই; তাঁহার কতক সাধুভাব এবং কতক অসাধু ভাব? তিনি কি এই প্রকার অপূর্ণ? কখনই না। যে কিছু পরিমিত বস্তু, তাহাই সৃষ্ট বস্তু। যিনি জগদীশ্বর, তিনি অপরিমেয়— তিনি পরিপূর্ণ। এই সত্যটি সকলেরই বুদ্ধি ভূমিতে নিহিত আছে। ঈশ্বরকে অনন্ত অসীম অপরিমেয় না বলিলে তাঁহার কোন স্বরূপই বলা হয় না। ঈশ্বরের কোন বিষয়ের সীমা আছে—পরিমাণ আছে—তাঁহার কিছুরই খর্ব্বতা আছে, ইহা বলিলে তাঁহাকে ঈশ্বর বলা হয় না; অন্য কোন পরিমিত সৃষ্ট বস্তু বলিয়া নির্দ্দেশ করা হয়। ঈশ্বর যিনি, তিনি পূর্ণ। পূর্ণ যে কি তাহা সেই পূর্ণ-স্বরূপই জানেন; আমরা অপূর্ণ জীব হইয়া তাঁহার পূর্ণ ভাব মনে ধারণ করিতে পারি না। তবে তাঁহাকে অনন্ত অসীম অপরিমেয় বলাই আমারদের সাধ্য। তাঁহার যে কোন বিষয় মনে করি, সকলই অনন্ত। তিনি