পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
পঞ্চম উপদেশ।

অতীব কষ্টদায়ক। ধর্ম্মের মূর্ত্তি তাহাদের নিকটে কখনই সৌন্দর্যময়ী হয় না, কিন্তু সর্ব্বদাই বিরস দেখায়। ধর্ম্মের পথ তাহারা কখনই সরল জ্ঞান করে না, কিন্তু কণ্টকাবৃতই বোধ করিয়া থাকে।

 এই জন্য ধর্ম্মের প্রাণ ঈশ্বরে অনুরাগ। ঈশ্বর-লাভের জন্যই ধর্ম্ম শ্রেষ্ঠ উপায়; বিষয়-সুখের জন্য তাহা অতি কনিষ্ঠ উপায়। ঈশ্বর যিনি মহীয়ান্, তাঁহাকে পাইবার জন্যই ধর্ম্ম আমাদের সহায়; বিষয় সুখ যে কণীয়ান্, ধর্ম্ম তাহার যোগ্য বস্তু হইতে পারে না। এক দিকে সংসার, এক দিকে ঈশ্বর, মধ্যে ধর্ম্ম। এ দিকের মঙ্গলের জন্যও ধর্ম্ম অবশ্যক; ঈশ্বরের দিকে যাইবার জন্যও ধর্ম্ম সহায়। যাহারা ধর্ম্মকে পরিত্যাগ করিয়া সাংসারিক সুখ ভোগে রত থাকে; এখানে তাহারদের কথা হইতেছে। এখানে মনুষ্যের বিষয়ে বলা যাইতেছে; পশুতুল্য লোকের বিষয় নহে। সংসারের প্রতি লক্ষ্য করিয়া যাহারা ধর্ম্ম উপার্জন করে, ধর্ম্ম তাহারদের উপরের শ্রেণীতে থাকে; ঈশ্বরের প্রতি যাহাদের লক্ষ্য থাকে, ধর্ম্ম তাহাদের আশ্রয় ভূমিস্বরূপ। ধর্ম্মের প্রথম পুরস্কার ঈশ্বরে অনুরাগ সঞ্চার হওয়া; তাহার শেষ পুরস্কার ঈশ্বরকে লাভ করা। ঈশ্বরের প্রতি অনুরাগ হইলে ধর্ম্মের পথ আপনা হইতে সহজ হইয়া যায়। যাহাদিগের পবিত্র হৃদয়ে সেই বিশুদ্ধ অনুরাগ প্রথমেই প্রদীপ্ত হইয়াছে, ধর্ম্ম শিক্ষা যে দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষা, তাহা তাহাদের সহজেই সম্পন্ন হয়। কিন্তু যাহাদের প্রথমেই