পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
সপ্তম উপদেশ।

কর্ত্তৃত্ব ভার আমরা আপনাপনিই বুঝিতে পারি —আমাদের অন্তরাত্মাই, ইহার প্রমাণ স্থল। প্রত্যেক ধর্ম্ম কালে আমাদের ত্যাগ যত অধিক হয়—আমাদের ধর্ম্ম-বল-যত প্রকাশ পায়; আমাদের স্বাধীনতা ও কর্ত্তৃত্ব আমরা ততই বুঝিতে পারি। বিবয়াকর্ষণের প্রতিকূলে আমাদের ইচ্ছাকে যে পরিমাণে নিয়োগ করি, সেই পরিমাণে বুঝিতে পারি যে আমি বিষয় ইইতে স্বতন্ত্র। এই প্রকার কর্ত্তৃত্ব জ্ঞান এবং কর্ত্তব্য জ্ঞান ধর্ম্মের এক প্রধান পুরস্কার এবং পরকালের প্রধান প্রমাণ স্থল। একবার কুপ্রবৃত্তির প্রতিস্রোতে গিয়া কে না আপনার স্বাধীনতা উপলব্ধি করিয়াছে? স্বার্থপরতাকে বিসর্জ্জন দিয়া কে না আপনাকে এ পৃথিবীর অনুপযুক্ত এবং শ্রেষ্ঠ লোকের উপযুক্ত বোধ করিয়াছে? একটি স্বাধীন স্বতন্ত্র কার্য্য আপনার কর্ত্তৃত্ব ও স্বাধীনতাকে যেমন ব্যক্ত করে, শত শত যুক্তিতে তেমন করিতে পারে না। একটি কষ্টসাধ্য ধর্ম্ম-কার্য্য বিপক্ষবাদীদিগের যুক্তি খণ্ডনের অতি তীক্ষ্ণ, অস্ত্র। আমরা এখানে পরকালের আভাস কিছু মাত্র না পাইলে আর তাহাতে দৃঢ় বিশ্বাস হইত না। আমরা এখানেই মুক্ত ভাব উপলব্ধি না করিলে মুক্তির বিষয় কিছুই বুঝিতে পারিতাম না। এখানে আমরা বিষয়াকর্ষণকে যতবার নিরস্ত করিব; মুক্তভাব যত উপলব্ধি করিব; পরকাল ততই মনে জাগ্রহ হইয়া উঠিবে।

 যখন দেখিতে পাই—বিষয় স্রোতের প্রতিস্রোতেই অনেক সময় গমন করিতে হয়—ইন্দ্রিয় সুখকে বিসর্জ্জন