পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
১৪৭

তাহা হইতে প্রতিভার সৃষ্টি হয়। প্রতিভার লক্ষণ দিতে গিয়া তিনি লিখিয়াছেন “যা শব্দগ্রামমর্থসার্থমলঙ্কারতন্ত্রযুক্তিমার্গমন্যদপি তথাবিধমধিহৃদয়ং প্রতিভাসয়তি সা প্রতিভা।” তাৎপর্য্য এই যে সমাধি যখন অভ্যাসের সহিত যুক্ত হয় তখন তাহাদ্বারা যে শক্তি উৎপন্ন হয় তাহাদ্বারা কাব্যোচিত সমস্ত শব্দাদি উদ্ভাসিত হইয়া উঠে। এই রীতি প্রয়োগ করিতে গেলে বলিতে হয় যে এই শক্তি দ্বারা চিত্রী তাঁহার হাতে যথাযথ রেখা বর্ণণাদি ফুটাইয়া তুলিতে পারেন। প্রতিভার এই লক্ষণ অনুসারে প্রতিভা দ্বারা সেই শক্তিটুকু বুঝা যায় যাহাদ্বারা ধ্যানধৃতরূপকে বাহিরের রেখা রূপাদি দ্বারা প্রকাশ করা যায়। কিন্তু ধ্যানধৃত রূপটী কোথা হইতে আসে? রাজশেখরের মতানুসারে স্মৃতি ও প্রজ্ঞাই ইহার মূল। স্মৃতি দ্বারা পূর্ব্বদৃষ্ট বস্তুর যথাসম্ভব যথাযথ জ্ঞান হয়। কিন্তু কেবল যথাযথ বস্তুর ভান হইলেই শিল্প হয় না। শিল্পের মধ্যে এমন একটী দৃষ্টি চাই যাহাদ্বারা পূর্ব্বে যাহা গৃহীত হয় নাই এমন নূতন নূতন সম্বন্ধ-পরম্পরা এবং সামঞ্জস্য প্রতিভাত হয়। এই দৃষ্টি কোথা হইতে আসে? কেমন করিয়া আসে? তাহার কোন বিশেষ কারণ নির্দ্দেশ শাস্ত্রকারেরা করেন নাই। কিন্তু কাব্যমীমাংসায় ও অন্যান্য শিল্পশাস্ত্রে এই দৃষ্টিটী প্রজ্ঞা বলিয়া বর্ণিত হইয়াছে। রাজশেখর বলিয়াছেন ‘অজ্ঞাতস্য প্রজ্ঞাত্রী প্রজ্ঞা’। জ্ঞাতের জানাকে বলা যায় স্মৃতি আর অজ্ঞাতের জানাকে বলা যায় প্রজ্ঞা। সমরাঙ্গণসূত্রধারে প্রজ্ঞান যে ঠিক এই অর্থেই গৃহীত হইয়াছে একথা বলা যায় না। যে বিশেষ