পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
১৭

মানুষের সম্বন্ধ ছাড়া তাহার পরিকল্পনা করা যায় না। মানব মানবীর সঙ্গেই সৃষ্টির ধারণা, সেইজন্য বিষ্ণুর নাভিকমল হইতে জগৎস্রষ্টা ব্রহ্মার উৎপত্তি। সাধারণতঃ মনে করা যাইতে পারে যে নারীর নাভিকমল হইতে সর্জ্জনক্রিয়ার আরম্ভ হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু নির্ব্বিকার পুরুষের প্রতি শেষিত্বরূপেই নারীরূপিণী প্রকৃতির অবস্থান। সমস্ত সৃষ্টিপ্রক্রিয়া পুরুষের প্রতি শেষিত্বরূপে রহিয়াছে, সেই জন্যই বিষ্ণুর নাভিকমল হইতে সৃষ্ট্যভিমানী ব্রহ্মার উৎপত্তি। শতদল পদ্ম যেমন মুকুলিত অবস্থা হইতে ক্রমশঃ বিকাশপ্রাপ্ত হয়, সমস্ত সর্জনক্রিয়া তেমনি যে একটি বিকাশের মধ্যে বিধৃত হইয়া রহিয়াছে, এবং সেই সমস্ত বিকাশ যেন একটি মৃণালসূত্রে অনন্তশায়ী পুরুষ হইতে উৎপন্ন হইয়াছে, তাহাতেই বিধৃত হইয়াছে ও তাহাতেই তাহার পারিণামিক লয়, ইহাই বিষ্ণুর নাভিকমল হইতে সূচিত হইতেছে। এই যে কমলের কল্পনা, সর্পের কল্পনা, এবং সঙ্গে সঙ্গে ব্রহ্মার চিরন্তন আসনরূপে পদ্মের কল্পনা, ইহা হইতে ইহাই বুঝা যায় যে কবি বা চিত্রীর চিত্রে প্রাণিজগৎ ও উদ্ভিদজগৎ মনুষ্যজগতের সহিত এবং দেবজগতের সহিত একান্বয়ে ও একস্পন্দনে গৃহীত হইয়াছিল।

 এই জন্যই এই পদ্ম আঁকিবার সময় শিল্পী তাহাকে সাধারণ হ্রদের পদ্মের ন্যায় আঁকেন না, অনন্তনাগকে আঁকিবার সময়ও তাহাকে একটি দীর্ঘ বোড়া-সাপের ন্যায় আঁকেন না। এগুলি আঁকিবার সময় তিনি এমন কিছু ইঙ্গিত রাখিয়া যান, যাহাতে