পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
২১

জাতের বিশিষ্ট বিশিষ্ট প্রাণপ্রদ ধর্ম্মের অনুকরণ বলা যাইতে পারে। চিত্র ও নৃত্যকে যদি একজাতীয় অনুকরণ বলা যায় এবং নৃত্যকে যদি শ্রেষ্ঠ অনুকৃতি বলা হয়, তবে তাহা হইতে ইহাও প্রমাণিত হয় যে চিত্রের মধ্যে যে অনুকৃতি শিল্পীর লক্ষ্য ছিল তাহা বাহ্যস্বরূপের অনুকৃতি নয়, তাহা তাহার অন্তরের প্রাণপ্রদ ধর্ম্মের অনুকৃতি। এই জন্যই ভারতীয় চিত্রে কেবলমাত্র শরীরসংস্থানের যথাযথ অনুকরণকে প্রধান স্থান দেওয়া হয় নাই, শরীর সন্নিবেশের দ্বারা বস্তুটিকে চিনিতে পারিলেই যথেষ্ট, চিত্রের যথার্থ লক্ষ্য ছিল প্রাণপ্রদ ধর্ম্মের অনুকৃতির দিকে। অনেক কাব্যনাটকে দেখা যায় যে বিরহ বিনোদনের জন্য বিরহীরা তাহাদের নায়িকার চিত্র তাহাদের স্মৃতিভাণ্ড হইতে উপাদান সংগ্রহ করিয়া আঁকিতেন। অথচ সে আঁকাও এমন হইত যাহা দেখিয়া লোকের মনে ভ্রম হইত যেন যথার্থ মানুষটি সম্মুখে রহিয়াছে। কোন সময় এই আঁকা যথাযথ বর্ণসন্নিবেশের দ্বারা সংঘটিত হইত, কোন সময়ে বা ইহা কেবলমাত্র রেখার দ্বারা অঙ্কিত হইত। কালিদাসের যক্ষ বলিতেছেন, “ত্বামালিখ্য প্রণয়কুপিতাং ধাতুরাগে শিলায়াম্‌”; কিন্তু যদিও এইরূপ স্মৃতি হইতে চিত্র অঙ্কনের অনেক উল্লেখ সাহিত্যে পাওয়া যায়, তথাপি কাহাকেও সম্মুখে রাখিয়া চিত্র আঁকিবার কথা বড় একটা পাওয়া যায় না। আমার মনে হয় যে ইহার একটি বিশেষ অর্থ আছে। চিত্রতত্ত্বের একটি নিগূঢ় রহস্য এবং সেই সঙ্গে ভারতীয় চিত্রকলাপদ্ধতি বুঝিবার একটি শ্রেষ্ঠ ইঙ্গিত ইহাতে