পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
৫৯

কাজ হয় দৃষ্টরূপকে রংএর মধ্যে বা পাথরের মধ্যে ধরিয়া রাখা। কিন্তু প্রত্যেক ব্যক্তির ভাবাভিব্যঞ্জনার মধ্যে বৈষম্য রহিয়াছে, কতকগুলি ইঙ্গিত বা আকার সকলের মধ্যেই দেখা যায়, কতকগুলি বা কোন এক ব্যক্তির শরীর গঠনের উপর বা তাহার ভাব ও শরীর গঠনের সম্পর্কের উপর নির্ভর করে। ভারতীয় শিল্পী চেষ্টা করেন যে কেমন করিয়া শিল্পের ভাষার মধ্য দিয়া কোন ধ্যানধৃত ভাবকে কোন ব্যক্তিকে অবলম্বন করিয়া প্রকাশ করিবেন। এরূপস্থানে তাঁহার অনুকৃতিতে ধ্যানধৃত রূপের সহিতই অধিক সাদৃশ্য থাকিবে এবং ব্যক্তিবিশেষের ভাবাঙ্কিত আকার ইঙ্গিতের সহিত সাদৃশ্য যে কম থাকিবে ইহা বিচিত্র নহে। কোন বোধিসত্ত্ব কেহ দেখে নাই, অথচ বোধিসত্ত্বের নানা গুণের কথা ও সেই সমস্ত গুণের সামঞ্জস্যে আন্তর চিত্রটি শিল্পীর হৃদয়ে রহিয়াছে। শিল্পীর উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য এইদিকে যে তিনি কেমন করিয়া তাঁহার সেই আন্তর রূপটির সহিত জনসাধারণের পরিচয় করাইয়া দিবেন—আধ্যাত্মিক রূপকে কেমন করিয়া বর্ণ ও প্রস্তরের মধ্য দিয়া এমন করিয়া ফুটাইয়া তুলিবেন, যাহাতে যাহাদের চিত্তে বোধিসত্ত্বের আধ্যাত্মিক রূপ স্ফূর্ত্তি পাইয়াছে তাহারা তাহার বাহ্যরূপ দেখিয়া চিনিতে পারিবে এবং আন্তর ও বাহ্যের পরিচয়ের আনন্দে বিভোর হইবে। মনোজগৎকে চিত্তের আদর্শকে জড়ের মধ্য দিয়া প্রকাশ করাই চিত্রীর লক্ষ্য। চিত্রশাস্ত্রে নির্দ্দিষ্ট আছে যে চিত্র আঁকিবার পূর্ব্বে চিত্রী স্নান করিয়া, ধৌতবাস পরিধান করিয়া, ধ্যান ও পূজার দ্বারা চিত্তকে সংস্কৃত করিয়া